সাদা হলকুশা বর্ষজীবী ভেষজ বীরুৎ

সাদা হলকুশা

বৈজ্ঞানিক নাম: Hyptis capitata Jacq., Sine Descr. et Anal. Inval. Coll. 1: 102 (1786). সমনাম: জানা নেই। ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: সাদা হলকুশা
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. অবিন্যাসিত: Asterids. বর্গ: Lamiales. পরিবার: Lamiaceae. গণ: Hyptis প্রজাতি: Hyptis capitata.

ভূমিকা: সাদা হলকুশা (বৈজ্ঞানিক নাম: Hyptis capitata) প্রজাতিটির গ্রীষ্মমন্ডলী অঞ্চলে জন্মে। বাংলাদেশের পাহাড়িঞ্চলে জন্মে। এই প্রজাতি ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে।

সাদা হলকুশা-এর বর্ণনা :

সাদা হলকুশা খাড়া বর্ষজীবী বীরুৎ। এটা প্রায় ১ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। পত্র সবৃন্তক, পত্রবৃন্ত ২-৩ সেমি লম্বা, ফলক ৬-১০ × ৩-৫ সেমি, ডিম্বাকার-আয়তাকার, কর্তিত দপ্তর, সূক্ষ্মাগ্র, রোমহীন বা শিরার নিম্নে সামান্য অণুরোমশ।

পুষ্পবিন্যাস শীর্ষে গোলাকার, মঞ্জরীদণ্ড পুষ্পীয় শীর্ষ অপেক্ষা দীর্ঘতর। মঞ্জুরীপত্র ০.৩-০.৬ সেমি লম্বা, রৈখিক-বল্লমাকার, আবৃত। বৃতি পুষ্পে ০.৩-০.৪ সেমি লম্বা, ফলে ০.৬-০.৮ সেমি লম্বা, রোমহীন, দন্তর খাড়া, তুরপুনাকার, নালী অপেক্ষা খাটো।

দল ০.৫-০.৬ সেমি লম্বা, সাদা, বেগুনি বিন্দুবিশিষ্ট। পরাগধানী বেগুনি। নাটলেট ০.১-০.২ × ০.১-০.২ সেমি, উপরে গোলাকার-কর্তিতাগ্র, নিচে প্রায় ত্রিকোণাকার, পৃষ্ঠ প্রচুর অণুরোমশ, ফলত্বক পানিতে ভিজাবস্থায় স্ফীত নয়।

ক্রোমোসোম সংখ্যা : ২০ = ৩০ (Fedorov, 1969)

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

উন্মুক্ত এলাকার শুষ্ক মাটিতে জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ সময় নভেম্বর থেকে জুন। বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার হয়। 

বিস্তৃতি :

সমগ্র ভারত, ফিলিপাইন এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আমেরিকা (স্থানীয়)। বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ এবং বাগেরহাট জেলায় বিস্তৃত। [১]

সাদা হলকুশা-এর ঔষধু গুণাগুণ:

পাতা উত্তেজক এবং টনিক। চূর্ণ পাতার ঠাণ্ডা পানির সাথে খেলে  ডায়রিয়া এর প্রতিকার হিসাবে কাজ করে। পাতা উপশমকারী এবং প্রশমক হিসাবে ব্যবহৃত হয় এবং হৃদস্পন্দন কমাতে সাহায্য করে। পাতার ক্বাথ ক্ষত পরিষ্কার করতে ব্যবহৃত হয়। চূর্ণ করা পাতাগুলি সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কাটা এবং ছেড়া বা ছিলে যাওয়া স্থানে প্রয়োগ করা হয়।

আরো পড়ুন:  বার সাঙ্গা দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সপুষ্পক ঔষধি বৃক্ষ

কচি পাতাগুলিকে পেস্ট করে পেটের ব্যথার চিকিৎসায় প্রয়োগ করা হয়। অ্যামেনোরিয়ার চিকিৎসায় শিকড়ের ক্বাথ ব্যবহার করা হয়। গাছটি শুকনো কাশি এবং দাঁতের ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়; শিশুদের মধ্যে গ্যাসের ব্যথা এবং শিশুদের খিঁচুনি থেকে উপশমের জন্য প্রয়োগ করা হয়। [২]

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৮খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) সাদা হলকুশা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এটি আশংকা মুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে সাদা হলকুশা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে আপাতত সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ নিষ্প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. মাহবুবা খানম (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ২৮৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

২. “Hyptis capitata”, tropical.theferns.info,, ইউআরএলঃ https://tropical.theferns.info/viewtropical.php?id=Hyptis+capitata

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Vinayaraj

Leave a Comment

error: Content is protected !!