ভূমিকা: আসামলতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Mikania cordata) এশিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে জন্মে। এই প্রজাতিটি পতিত জমি বা মানুষের চলাচল যেস্থানে কম সেখানে জন্মে। লতাটিতে নানা ভেষজ গুণ আছে।
আসামলতা-এর বর্ণনা:
মসৃণ বা হালকা অণুরোমশ, প্যাচারো বহুবর্ষজীবী বীরুৎ। পত্র সবৃন্তক, পত্রবৃন্ত অনূর্ধ্ব ৫ সেমি লম্বা, পত্রফলক অনূর্ধ্ব ৯ X ৬ সেমি, সচরাচর হৃৎপিন্ডাকার, মাঝে মধ্যে ব-দ্বীপ সদৃশ-ডিম্বাকার, শীর্ষ দীর্ঘাগ্র, প্রান্ত অখন্ড-তরঙ্গিত বা সভঙ্গ-দপ্তর, সচরাচর মসৃণ, উভয়। পৃষ্ঠ বিরলক্ষেত্রে হালকা রোমশ।
পুষ্পবিন্যাস শিরমঞ্জরী, বেলনাকার, প্রান্তীয় সমভূম যৌগিক মঞ্জরীর কাক্ষিক শাখায়। বহু সংখ্যক, পুষ্পদন্ডবিশিষ্ট, পুষ্পদন্ড অনূর্ধ্ব ৪ সেমি লম্বা, মঞ্জরী পত্রাবরণ ব্যাস-এ ১.০-১.৫ মিমি । মঞ্জরীপত্র ঝিল্লিময়, উপবৃত্তাকার-বিবল্লমাকার বা রৈখিক-বল্লমাকার, বাইরের গুলি গোড়া পর্যন্ত হালকা অণুরোমশ, অধিকতর অন্তর্বর্তী গুলি শীর্ষে হালকা অণুরোমশ। দলমণ্ডল সাদা, ২.০-২.৫ মিমি লম্বা, খন্ড মসৃণ। ফল সিপসেলা, অনূর্ধ্ব ১.২ মিমি লম্বা, সংকীর্ণভাবে আয়তাকার, মসৃণ, বৃতিরোম সাদা, অনূর্ধ্ব ২,২ মিমি লম্বা।
ক্রোমোসোম সংখ্যা : ২ = ৩৬, ৩৮ (Fedorov, 1969) ।
আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: রাস্তার পার্শ্ব, পুকুর পাড়, পাহাড় এবং বাঁশঝাড় সমৃদ্ধ জঙ্গলে জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ অক্টোবর-ফেব্রুয়ারি। বংশ বিস্তার করা হয় বীজ দ্বারা।
বিস্তৃতি: গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এশিয়া, ফিলিপাইন, পাপুয়া নিউ গিনি এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আফ্রিকা। বাংলাদেশে এই উদ্ভিদটি দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:
সাপের কামড় ও বিচ্ছুর দংশনে প্রতিকারক রূপে উদ্ভিদটি ব্যবহৃত হয়, এর পাতা দেহের মালিশ ও চুলকানিতে ব্যবহৃত হয় এবং খৎনার জ্বালাপোড়া যুক্ত ঘায়ে প্রশমক রূপে এবং অন্যান্য ক্ষতে ব্যবহৃত হয়। নারিকেল চাষাবাদে আগাছা দমনে উদ্ভিদটি মসৃণ শস্য রূপে ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে। জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার: উদ্ভিদটির পাতা মাঝে মধ্যে সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৬ষ্ঠ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) আসামলতা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে আসামলতা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. এ বি এম এনায়েত হোসেন (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৬ষ্ঠ, পৃষ্ঠা ৩৫৪-৩৫৫। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: FarEnd2018
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।