ভুইনোরা দক্ষিণ এশিয়ার বনজ বিরুৎ

ভুইনোরা

বৈজ্ঞানিক নাম: Peristylus constrictus (Lindl.) Lindl., Gen. Sp. Orch. Pl.: 300 (1835). সমনাম: Herminium constrictum Lindl. (1832), Platanthera constricta Lindl. ex Wall. (1832), Orchis leucantha Buch.-Ham. ex Wall. (1832) (pro syn.), Habenaria constricta (Lindl.) Hook. f. (1890). ইংরেজী নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: ভুইনোরা (তনচিঙ্গা)।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Monocots. বর্গ: Asparagales. পরিবার: Orchidaceae. গণ: Peristylus প্রজাতির নাম: Peristylus constrictus

ভূমিকা: ভুইনোরা (বৈজ্ঞানিক নাম: Peristylus constrictus) হচ্ছে ওখেডেসিয়া পরিবারের পেরিস্টিলাস গণের এক প্রকারের গুল্ম। এই প্রজাতিটি দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মায়।

ভুইনোরা-এর বর্ণনা:

ভুইনোরা একপ্রকার স্থলজ বীরুৎ। এদের কান্ড দৃঢ়, লম্বা, পুষ্পমঞ্জরী ৭৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা। পাতা উপবৃত্তাকার, তীক্ষ্ণাগ্র বা দীর্ঘাগ্র, ১৫ × ১০ সেমি পর্যন্ত, পাদদেশ সরু বা প্রশস্ত বৃন্ত বিশিষ্ট। পুষ্পমঞ্জরী স্পাইক, ২৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা, বেলনাকার, ঘন, বহু পুষ্পী। পুষ্প আড়াআড়িভাবে ২ সেমি, হলুদাভ, সুগন্ধি। বৃত্যংশ ফ্যাকাশে বাদামী, প্রায় সমাকৃতির, আয়তাকার। পাপড়ি সাদা, বৃত্যংশ অপেক্ষা লম্বা, তির্যক ডিম্বাকার। লিপ সাদা, পার্শ্ব খন্ড সরু বল্লমাকার, কাস্তে সদৃশ, স্পার গোলকাকার।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৩২ (Alam et al., 1993).

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার :

বনভূমির আর্দ্র মৃত্তিকা। ফুল ধারণ সময়কাল জুন থেকে জুলাই মাস। বংশ বিস্তার হয় বিটপসহ মূলাকার কন্দ পৃথকীকরণের মাধ্যমে।

বিস্তৃতি :

ভারত, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, চীন, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনাম। বাংলাদেশে প্রজাতিটি চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সমূহে বিস্তৃত (Heinig, 1925; Huda et al., 1999).

গুরুত্ব : প্রজাতিটির ভেষজ এবং উদ্যানতাত্বিক গুরুত্ব আছে।

জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার:

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম টি অঞ্চলের তনচঙ্গা আদিবাসীরা ফোঁড়া চিকিৎসায় ইহার শিকড় ব্যবহার করে থাকে। প্রথমে শিকড় উত্তরুপে ধৌত করে থেতলানো হয়। তারপর থেতলানো শিকড় ফোঁড়ার উপর একদিনের জন্য ব্যবহার করা হয় (Huda, 2000).

আরো পড়ুন:  থানকুনি পাতার পনেরোটি গুণাগুণ ও উপকারিতা

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ১২ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ভুইনোরা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের বনাঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে এটি আশঙ্কামুক্ত নয়। বাংলাদেশে ভুইনোরা সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের রক্ষণাবেক্ষণ প্রজাতিটির সংরক্ষণে সহায়ক হতে পারে।

তথ্যসূত্র:

১. এম কে হুদা (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ১২ম, পৃষ্ঠা ১১৬-১১৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম:  Prashant Awale

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Prashant Awale

Leave a Comment

error: Content is protected !!