ভূমিকা: পটল (বৈজ্ঞানিক নাম: Trichosanthes dioica, ইংরেজি নাম: Pointed Gourd) হচ্ছে কুকুরদিতাসি পরিবারের লতালো প্রজাতি।
পটল লতা-এর বর্ণনা:
বর্ষজীবী আরোহী বীরুৎ। কান্ড সরু শাখান্বিত, অতিরিক্ত আরোহী। আকর্ষ সরু, খাটো, ২-৪ খন্ডিত। পত্র তাম্বুলাকার, দীর্ঘায়ত বা ডিম্বাকার, ৫-১০ x ৪-৮ সেমি, সূক্ষ্মাগ্র, দপ্তর, দৃঢ়, স্বল্প মসৃণ, মুলীয় খন্ড গোলাকার, ১.৫×২.০ সেমি গভীর, বৃন্ত ১-৩ সেমি লম্বা, সরু, অনুদৈর্ঘ্য সমান্তরাল রেখা যুক্ত, অতিরোমশ। পুষ্প ভিন্নবাসী।
পুংপুষ্প: মঞ্জরীদন্ড ২-৩ সেমি লম্বা, জোড়াবদ্ধ, উভয় ১পুষ্প বিশিষ্ট, ১টি খাটো ১টি লম্বা, বৃতিনল ৪ সেমি লম্বা, অর্ধবেলনাকার রৈখিক, দলমন্ডল ৫ খন্ডিত, খন্ড দীর্ঘায়ত, কুঞ্চিত, পুংকেশর ৩টি, বৃতিনলের অভ্যন্তরে নিহিত, পুংদন্ড অতিশয় খাটো, পরাগধানী মুক্ত, অর্ধবৃন্তক, দীর্ঘায়ত, ৩.৫ x ১.৫ মিমি।
স্ত্রীপুষ্প: একল, মঞ্জরীদন্ড ২ -৪ মিমি লম্বা, বৃতি ও দলমন্ডল পুংপুষ্পের বৃতি ও দলমন্ডলের অনুরুপ, গর্ভাশয় দীর্ঘায়ত, অতিরোমশ, গর্ভদন্ড সরু, গর্ভমুভ ৩টি। ফল ৫-১২ x ২-৬ সেমি, দীর্ঘায়ত, রোমশ বিহীন, মসৃণ। বীজ ৬-৭ × ৪-৫ মিমি, ৪ মিমি পুরু, গোলাকার।
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২২ (Patel,1952).
চাষাবাদ: জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ, সুনিষ্কাশিত, সূর্যকরোজ্জ্বল ভূখন্ড। ফুল ও ফল ধারণ এপ্রিল -সেপ্টেম্বর। বংশ বিস্তার হয় বীজে বংশ বিস্তার।
বিস্তৃতি: উঞ্চমন্ডলীয় অঞ্চলে চাষাবাদ করা হয়। বাংলাদেশের সর্বত্র বিশেষ করে পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় ব্যাপক চাষাবাদ চলে।
আরো পড়ুন: পটল লতার পনেরোটি ভেষজ গুণ ও প্রযোগ পদ্ধতি
পটল লতা-এর অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:
ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। উদ্ভিদ পরিবর্তন সাধক ও টনিক। মূল রেচক। পাতা কৃমিনাশক, কামোদ্দীপক এবং পিওরোগ ও শ্বাসনালীর প্রদাহে উপকারী। পরিপক্ক ফল কাশি ও রক্তের পীড়ায় উপকারী।
জাতিতাত্বিক ব্যবহার:
ভারতের কোন কোন অঞ্চলে অন্য ভেষজের সাথে ফল মিশ্রিত করে সাপের কামড়ের ওষুধ রুপে ব্যবহার করা হয়। গুজরাটে ফল অনৈচ্ছিক শুক্র নির্গমন বন্ধ করার ভেষজ ওষুধ রুপে ব্যবহৃত।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পটল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পটল সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র:
১. এম অলিউর রহমান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৩১-৩৩২। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Engr.Raju
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।