ভুমিকা: গোলাপী ঘাসফুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Zephyranthes grandiflora, ইংরেজি নাম: পিঙ্ক রেইন লিলি, ফেয়ারি লিলি, জেফার লিলি) হচ্ছে সপুষ্পক বিরুৎ। এই প্রজাতিটি বাগানের শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো হয়ে থাকে।
বর্ণনা: কন্দাল যুক্ত বহুবর্ষজীবী বীরুৎ, কন্দ আড়াআড়ি ২ সেমি। পত্র ৩৫.০ x ০.৮ সেমি, রৈখিক, পুষ্পেদগমের সাথে জন্মে। ভৌমপুষ্পদন্ড ফাঁপা। চমসা সরল, ২ সেমি লম্বা, স্বচ্ছ, নলাকার, ২-খাজ বিশিষ্ট।
পুষ্পপুট চোঙ্গাকৃতি, খন্ড ৬ (কদাচিৎ ৮ পর্যন্ত), গোলাপী বা লাল বর্ণযুক্ত, ৩-৪ সেমি লম্বা, অর্ধ উপবৃত্তাকার থেকে দীর্ঘায়ত বল্লমাকার।
পুংকেশর ৬ টি, কখনও ৭-৮ টি, পুষ্পপুট গ্রীবালগ্ন, পুংদন্ড প্রায় ২ সেমি, লম্বা, সাদা, পরাগধানী হলুদ, সরু, পৃষ্ঠ লগ্ন। গর্ভপত্র ৩টি, যুক্তগর্ভপত্রী, গর্ভাশয় ৩ কোষী, প্রতিকোষে ডিম্বক অনেক, গর্ভদন্ড সূত্রাকার, ২.৫ সেমি লম্বা, গর্ভমুণ্ড ৩ থেকে ৪ খন্ডিত। ফল ক্যাপসুল। বীজ কালো। এদের ফুল ও ফল ধারণ ঘটে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে।[১]
ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৪, ৩৬, ৪৮ [২]
চাষাবাদ: সুনিষ্কাশিত ভূমি বা উদ্যানে ব্যাপক চাষাবাদ হয়। বিশেষ যত্নের দরকার নেই। বীজ বা কন্দের থেকে চারা হয়।
বিস্তৃতি: আমেরিকার উষ্ণাঞ্চল। পৃথিবীর উষ্ণ জলবায়ুর দেশ সমূহে প্রচুর চাষাবাদ করা হয়। বাংলাদেশের উদ্যানে এর ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: বাহারি উদ্ভিদরূপে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১১তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) গোলাপী ঘাস ফুল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে গোলাপী ঘাস ফুল সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। তবে বাগানে চাষাবাদ করে এটির সম্প্রসারন বাড়াতে হবে।[৩]
তথ্যসূত্র:
১. এম এ হাসান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১১ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৭২-৩৭৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
২. Kumar, V. and Subramaniam,, B. 1986 Chromosome Atlas of Flowering Plants of the Indian Subcontinent. Vol.1. Dicotyledons Botanical Survey of India, Calcutta. 464 pp.
৩. এম এ হাসান প্রাগুক্ত, প. ৩৭২-৩৭৩
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: potocraze
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।