নাউ নুয়ার বিরল প্রজাতির গুল্ম

নাউ নুয়ার

বৈজ্ঞানিক নাম:  Ardisia paniculata Roxb., Fl. Ind. 1: 580 (1832). সমনাম: Tinus paniculata O. Kuntze (1891), ইংরেজি নাম: Indian Antidesma. স্থানীয় নাম: নাউ নুয়ার।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. অবিন্যাসিত: Asterids. বর্গ: Ericales. পরিবার: Primulaceae. গণ: Ardisia প্রজাতি: Ardisia paniculata.

ভূমিকা: নাউ নুয়ার (বৈজ্ঞানিক নাম: Ardisia paniculata) আরডিসিয়া গণের প্রাইমুলেসি পরিবারের গুল্ম। এই প্রজাতিটি সিলেট জেলায় জন্মে। এটি অনেক ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

নাউ নুয়ার-এর বর্ণনা:

বৃহদাকার গুল্ম, ২ মিটার পর্যন্ত উঁচু, কন্ড সরল, রসালো, শাখা-প্রশাখা বেলনাকার, শক্ত, মসৃণ। পাতা ১৫ ৩৫ x ৫-১২ সেমি, উল্টাভাকার, অখন্ড, দীর্ঘাগ্র, চার্মবৎ, মসৃণ, মধ্যশিরার উভয়পাশে পার্শ্বশিরা ১২-১৫টি, তীক্ষ্ণ, পাদদেশ সরু হয়ে একটি খর্বাকৃতির ও মোটা পর্বলগ্ন পত্রবৃন্তে পরিণত হয়। পুষ্প গোলাপী বা লালচে, লম্বা, শক্ত ও প্রায় মসৃণ প্রান্তীয় যৌগিক মঞ্জরীতে সজ্জিত, পুষ্পবৃন্তিকা ছড়ানো অথবা ঝুলন্ত, ৩.৫-১৫.০ মিমি লম্বা।

বৃতি পাদদেশে কিছুটা যুক্ত, খন্ডকগুলো ত্রিকোণাকার, প্রায় স্থূলাগ্র, বাইরের পৃষ্ঠ রোমশ, কিনারা সিলিয়াযুক্ত। দলমন্ডল গোলাপী, পাদদেশ কিছুটা সংযুক্ত, খন্ডকগুলো ক্ষুদ্রাকৃতির, ৪ x ২ মিমি, অসমান, অতি দীর্ঘাগ্র, নিচের দিকে বাকা। পুংকেশর ৫টি, পাপড়ি থেকে অনেক ছোট, পরাগধানী লাল বর্ণের গ্রন্থিল বিন্দুবিশিষ্ট। গর্ভাশয় নিরেট ডিম্বাকার, ১ প্রকোষ্ঠীয়, ডিম্বক কয়েকটি, গর্ভদন্ড সরু, বেলনাকরি, গর্ভমুণ্ড ক্ষুদ্রাকার, বিন্দু আকৃতির। ফল বেরী, গোলাকৃতির, আড়াআড়িভাবে ৫ মিমি (প্রায়), উল্লম্বভাবে সরেখিত।

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: স্যাঁতসেঁতে ও ছায়াযুক্ত স্থানে অরণ্যের প্রান্তে। ফুল ও ফল ধারণ এপ্রিল থেকে জুন মাস। বীজ থেকে বংশ বিস্তার হয়।

বিস্তৃতি: শ্রীলংকা এবং ভারতের দক্ষিণাংশসহ বাংলাদেশের সিলেট জেলা থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে (Alam, 1988)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৯ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) নাউ নুয়ার প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশে এটি বিরল প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে নাউ নুয়ার সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে উদ্ভিদ প্রজাতিটির অবস্থান নির্দেশ জরুরি এবং তা সম্ভব হলে আবাস স্থান সুরক্ষা সহ যথাস্থানে ও যথাস্থানে বাইরে সংরক্ষণের প্রয়োজন।

আরো পড়ুন:  একাঙ্গী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্মানো ভেষজ বিরুৎ

তথ্যসূত্র ও টীকা:

১. এ বি এম রবিউল ইসলাম ও এ বি এম এনায়েত হোসেন (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৯ম, পৃষ্ঠা ২৬৭-২৬৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Anurag Sharma

Leave a Comment

error: Content is protected !!