হস্তিদাঁতী বাংলাদেশের পাহাড়িঞ্চলে জন্মানো ভেষজ উদ্ভিদ

উদ্ভিদ

হস্তিদাঁতী

বৈজ্ঞানিক নাম: Baliospermum solanifolium (Burm. 1.) | Suresh, Regnum Veg. 11): 1)6 (1988), সমনাম: Baliospermum axillare Blume (1826). Baliospermum montanum (Willd.) Muell.-Arg. (1866), Baliospermum polyandrum Wight (1885). ইংরেজি নাম: Red physic nut। স্থানীয় নাম: হস্তিদাঁতী, দান্তি, হাকুন।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms.অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Malpighiales. পরিবার: Phyllanthaceae. গণ: Baliospermum, প্রজাতি: Baliospermum solanifolium.

ভূমিকা: হস্তিদাঁতী (বৈজ্ঞানিক নাম: Baliospermum solanifolium) হচ্ছে এশিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশের উদ্ভিদ। গাছের বীজ, পাতা ভেষজ ঔষধ হিসাবে বেশ কার্যকরী।

হস্তিদাঁতী-এর বর্ণনা:

কাষ্ঠল বীরুৎ বা ছোট গুল্ম, ১-২ মিটার লম্বা। কান্ড সরল বা পাদদেশ থেকে সামান্য শাখান্বিত, বাকল বাদামী, মসৃণ। পত্র অতিশয় পরিবর্তনশীল, ৫-১৮ x ২.৫-১০.০ সেমি, উপবৃত্তাকার-ভল্লাকার থেকে হীরাকাকার-ডিম্বাকার, অসমাঙ্গ, দপ্তর,

কখনও ৩-৫টি পার্শ্বীয় খন্ডযুক্ত, সূক্ষাগ্র, দীর্ঘা, চর্মবৎ, রোমশ বিহীন, উপরের পৃষ্ঠ গাঢ় সবুজ, নিচের পৃষ্ঠ সামান্য রোমশ, প্রতি অর্ধাংশে পার্শ্বীয় শিরা ৫-৭টি,

পাদদেশ গোলাকার, কীলকাকার বা তাম্বুলাকার, বৃন্ত ফলকের ন্যায় দীর্ঘ, উপপত্র ১ মিমি লম্বা, রোমশ বিহীন, গ্রন্থিল।

পুংমঞ্জরী ৩-১০ সেমি লম্বা, রেমিমোস, মঞ্জরীপত্র ছোট, অণুরোমশ। পুষ্প একলিঙ্গ বা উভয়লিঙ্গ। পুংপুষ্প: বৃন্ত ৩-৮ মিমি লম্বা, কৈশিক, সামান্য রোমশ,

বৃতি খন্ড ৪-৫টি, বর্তুলাকার ১.৫-২.০ মিমি লম্বা, রোমশ বিহীন, চাকতি বলয়াকার, পুংকেশর ১৫-২০টি, পুংদন্ড ২ মিমি লম্বা, পরাগধানী আড়াআড়ি ০.৫ মিমি,

স্ত্রী পুষ্প: ২-৩ মিমি লম্বা, ফলে ৫ মিমি পর্যন্ত প্রসারিত, বৃতি খন্ড ৫-৬ টি, ২ মিমি লম্বা, ডিম্বাকার-ভল্লাকার, গর্ভাশয়, ত্রিকোণাকার-অর্ধগোলাকার, আড়াআড়ি ২ মিমি, গর্ভদন্ড ১.০-১.৫ মিমি লম্বা, গর্ভমুন্ড মসৃণ।

ফল ত্রিকোণাকার, ৮-৯ মিমি লম্বা, মসৃণ, স্বল্প রোমশ। বীজ প্রায় ৭ x ৫ মিমি, মসৃণ, উজ্জ্বল, ধূসর বাদামী ।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৪৪ (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

শৈল ও ছায়া যুক্ত অঞ্চল। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল সারা বর্ষ ব্যাপী। বীজ থেকে নতুন চারা জন্মে।

আরো পড়ুন:  বন শুলফা গুল্ম-এর সাতটি ভেষজ গুণাগুণ

হস্তিদাঁতী-এর বিস্তৃতি:

ভুটান ও ভারত। বাংলাদেশের সিলেট জেলায় সীমাবদ্ধ (Kanjilal et al., 1940)।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:

মূল এবং বীজ মারাত্মক রেচক, শোথ, সাধারণ জন্ডিসে এদের ব্যবহার করা হয় (Ghani, 2003)। পাতা বাতের ব্যথা নিরসণ করে। হাঁপানি রোগে পাতার ক্বাথ উপকারী (Chopra et al., 1956)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) হস্তিদাঁতী প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে হস্তিদাঁতী সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির অবস্থান নির্দেশ করে যথাস্থানে এবং যথাস্থানের বাইরে সংরক্ষণ প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৭ম, পৃষ্ঠা ৪০৫-৪০৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!