বুটি ডুমুর বাংলাদেশে জন্মানো ভেষজ গুল্ম

বুটি ডুমুর

বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus lanceolata Buch.-Ham. ex Roxb., Fl, Ind. 3: 557 (1832). সমনাম: জানা নেই. ইংরেজি নাম: জানা নেই. স্থানীয় নাম: বুটি ডুমুর, ইরিগাছ।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. অবিন্যাসিত: Rosids. বর্গ: Rosales. পরিবার: Moraceae. গণ: Ficus প্রজাতি: Ficus lanceolata.

ভূমিকা: বুটি ডুমুর (বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus lanceolata) ফিকাস গণের মরাসিয়া পরিবারের গুল্ম। এই প্রজাতিটি পাহাড়ি জায়গায় অযত্নে জন্মে। এটি অনেক ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

বুটি ডুমুর-এর বর্ণনা:

বহু-শাখান্বিত গুল্ম অথবা ছোট বৃক্ষ, প্রায় মসৃণ। পাতা সরল, অণুপর্ণী, উপপত্র ১ সেমি (প্রায়) লম্বা, ভল্লাকার, ফলক বৃন্তক, বৃন্ত ১.০-২.৫ সেমি লম্বা, পত্রফলক ভল্লাকার বা সরু ভল্লাকার, শীর্ষ দীর্ঘা, নিমপ্রান্ত গোলাকার, পাদদেশ ৩-শিরাল, কিনারা অখন্ড অথবা অতি দুরবর্তী ক্রকচ, অর্ধচর্মবৎ, উপরের পৃষ্ঠ মসৃণ, নিম্নপৃষ্ঠ ক্ষুদ্র কণীকৃত, পার্শ্বশিরা ৬-৮ জোড়া।

ফিগ বয়ষ্ক কান্ডে বা বৃহদাকার শাখায়, ৫-৮টির গুচ্ছে, মসৃণ, কচি অবস্থায় নাশপাতি আকার, পরিপক্ক অবস্থায় মোচাকৃতি এবং রক্তবেগুনি বর্ণের, ২-৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট, পাদদেশীয় মঞ্জরীপত্র ৩টি, ক্ষুদ্র। পুং পুষ্প খর্বাকার বৃন্তবিশিষ্ট, রন্ধের নিকটে এবং সংখ্যায় অনেক, পুষ্পপুট ৩টি বা ৪টি, বৃহদাকার, স্ফীত, পরাগধানী ২টি, ডিম্বাকার, পুংদন্ড খর্বাকার। গল পুষ্পের পুষ্পপুট স্ত্রী পুষ্পের অনুরুপ, গর্ভাশয় নিরেট ডিম্বাকার, গর্ভদন্ড খর্বাকার, উপপ্রান্তী, গর্ভমুণ্ড বিস্তৃত। স্ত্রী পুষ্পের পুষ্পপুট খর্বাকার, যুক্ত পুষ্পপুট, ৩-দম্ভর, গর্ভদন্ত প্রলম্বিত, পার্শ্বীয়, গর্ভমুণ্ড মুষলাকৃতি। ফল অ্যাকিন, তির্যক নিরেট ডিম্বাকার, ক্ষুদ্রাকার কণীকৃত।

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: অরণ্য এবং পাহাড়ে মাটিতে জন্মে। এদের ফুল ও ফল ধরার সময় এপ্রিল থেকে জুলাই মাস। বীজ থেকে বংশ বিস্তার হয়।

বিস্তৃতি:

ভারত এবং মায়ানমারসহ বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি চট্টগ্রাম জেলা থেকে নথিভূক্ত করা হয়েছে। (Prain, 1903; Heinig, 1925). এর ব্যবহার ভেষজ হিসাবে যেমন কাজে লাগে তেমনি ইহার ফল খাওয়ার উপযোগী।

আরো পড়ুন:  চা পাতা ব্যবহার আটটি উপকারিতা

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৯ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বুটি ডুমুর প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এই প্রজাতির সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে বুটি ডুমুর সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালাতে হবে এবং ইহার প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণসহ স্ব-স্থানের বাইরে সংরক্ষণের জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

তথ্যসূত্র ও টীকা:

১. এম অলিউর রহমান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৯ম, পৃষ্ঠা ২২৫-২২৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!