ভূমিকা:
কেসুয়া রঙ্গন (বৈজ্ঞানিক নাম: Ixora cuneifolia) হচ্ছে রুবিয়াসিস পরিবারের আইক্সোরা গণের একটি সপুষ্পক গুল্ম। এটিকে বাংলাদেশে জঙ্গলের উদ্ভিদ হিসেবে ঝোপ-ঝারে অযত্নে বেড়ে ওঠে। এই গুল্মটি অনেকে বাড়ির টবে বা বাগানের শোভাবর্ধন করার জন্য লাগিয়ে থাকে।
বর্ণনা:
কেসুয়া রঙ্গন মসৃণ গুল্ম বিশিষ্ট্য। উদ্ভিদটি যখন অপরিণত অবস্থায় থাকে তখন এদের সূক্ষ্মভাবে রোমাবৃত থাকে। পাতা মসৃণ অনুরোমশ উপপত্রযুক্ত থাকে, উপপত্র সূত্রাকার, পত্রবৃন্ত ১০ মিমি পর্যন্ত লম্বা হয়, পত্রফলক আয়তাকার, আয়তাকার-বল্লমাকার বা বিবল্লমাকার দৈর্ঘ্য ৮-১৩ ও প্রস্থ ৪ থেকে ৪.৫ সেমি, সামান্য দীর্ঘাগ্র ও গোড়া গোলাকার বা স্থূলাগ্র।
ফুল সাইম, খাটো মঞ্জরীদন্ডবিশিষ্ট, অনেক সরু ও সামান্য রোমশ। প্রথম শাখায় এক জোড়া ছোট পত্রিকা অবলম্বনে শীর্ষক থাইরসয়েড প্যানিকল, মঞ্জরীপত্র বল্লমাকার, দীঘাগ্র থেকে তুরপুনাকার। ফুলের রং সাদা, ৩ সেমি পর্যন্ত লম্বা।
এদের বৃতি মসৃণ হয় এবং দন্তক নলের সমান লম্বা। পাপড়ি মসৃণ, নল সরু, খন্ডক উপবৃত্তাকার-আয়তাকার। পরাগধানী বাইরের দিকে ও পুংদন্ড সরু। গর্ভমুন্ড দ্বিখন্ডিত, গর্ভদন্ড বহির্মুখী। ফল মটর-আকৃতির ও লাল বর্ণের। বীজ অঙ্কীয়ভাবে অবতল।
বংশ বিস্তার ও চাষাবাদ:
বৃষ্টিপাতযুক্ত বন এলাকা এই গাছ জন্মে। এই প্রজাতি মুলত বন-জঙ্গলের উদ্ভিদ। বীজ এবং কান্ডের শাখা কলম দ্বারা নতুন চারা হয়। মার্চ থেকে জুলাই মাসে এর ফুল ও বীজ হয়। বাড়িতে লাগালে কিছুটা যত্ন নিতে হবে।
বিস্তৃতি: ভারত এবং মায়ানমার। বাংলাদেশের ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং রাঙ্গামাটি জেলায় বিস্তৃত।
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) বুনো গোলাপ প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের আবাসস্থান ধ্বংসের কারণে সংকটাপন্ন এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কাগ্রস্থ হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে বুনো গোলাপ সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। তবে প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে উদ্ভিদ রক্ষার জন্য এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণের পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। [১]
তথ্যসূত্র:
১. এম আতিকুর রহমান এবং এস সি দাস (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৮৩-৮৪ । আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।