শেয়ালকাঁটা ( বৈজ্ঞানিক নাম: Argemone mexicana) ঔষধার্থে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা বাহ্য ব্যবহারে (External application)। এই কার্যে ব্যবহার হয় মল, পাতা, বীজ ও বীজের তেল।
শেয়ালকাঁটা-র উপকারিতা
১. মূত্র রোধে: প্রস্রাব আটকে গিয়ে মূত্রকোষ ফুলে গেলে ও বুক ধড়ফড়ানি বাড়লে তৎক্ষণাৎ শেয়ালকাঁটার আঠা ১৫। ২০ ফোঁটা একটু জলে মিশিয়ে খেতে দিতেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা ২।৩ দিন খেলে ওই কঠিন পীড়াটি সেরে যায়।
২. ন্যাবা রোগে: ১৫। ২০ ফোঁটা এই শিয়ালকাঁটারই আঠা জলে মিশিয়ে খেতে দিতেন। এটা পিত্ত শ্লেষ্মপ্রধান পাণ্ডু রোগেই কাজ করে।
৩. উপদংশ ও গনোরিয়ায়: শিয়ালকাঁটার আঠা ১৫। ২০ ফোঁটা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে দিয়ে থাকেন। ২। ৩ দিন খাওয়ার পর দেখা যায়, পুজ পড়া কমে আসছে, ঘা শুকিয়ে আসছে; তবে এটা ৫। ৬ দিনের বেশী খাওয়ার ব্যবস্থা দেন না।
৪. ধজভঙ্গে: ১০।১৫ ফোঁটা করে শেয়ালকাঁটা-র আঠা বাতাসার সঙ্গে ৩। ৪ দিন খেতে দিয়ে থাকেন।
৫. ভীমরুল, বোলতার হল ফোটানোর জালায়: তৎক্ষণাৎ শিয়ালকাঁটার মূল বেটে ওখানে লাগিয়ে দিলে ৫। ৬ মিনিটের মধ্যেই জ্বলা কমে যায়।
৬. কুষ্ঠ রোগে: দেখলে শরীর শিউরে ওঠে, এই ক্ষেত্রে শিয়ালকাঁটার সোনালী আঠা ওই সব স্থানে মাখালে কয়েকদিনের পর থেকেই কুষ্ঠের দগদগে ঘা লাল হয়ে আসে আর কীট জন্মাতে পারে না, এবং সাদা পুজের থোকাও জমে না।
৭. রক্তপ্রস্রাবে: বার বার হতে থাকলে শিয়ালকাঁটার বীজের তেল একটি ন্যাকড়ার পোঁটলায় মাখিয়ে গরমজলে ওই পুটলিটা ডুবিয়ে নিংড়ে লিঙ্গমূলে সেক (স্বেদ) দিলে এবং কুচকি ও তলপেটের বেশ নীচে সেক দিলে প্রস্রাবে রক্তের আভা থাকে না।
৮. সর্বাঙ্গ শোথে: শিয়ালকাঁটা বীজের তেলে ওই ভাবে ন্যাকড়ায় লাগিয়ে তারপর গরম জলে ডুবিয়ে অল্প নিংঙে সেক দিলে ফুলো শুকিয়ে যায়।
৯. মূত্রকৃচ্ছ্রে: ওই রোগে যে কোন কারণেই হোক শিয়ালকাঁটার তেলে ঐভাবে পটুলীর সেকে সত্বর আরাম পাওয়া যায়।
১০. খোস-পাঁচড়া চুলকণায়: তা সে যে কোন কারণেই হোক আর যত পুরাতনই হোক, কিম্বা রক্তদৃষ্টির জন্যই হোক, শিয়ালকাঁটা বীজের তেল এবং সমপরিমাণ সরষের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে আগুনে পুড়িয়ে নিয়ে ওই তেল গায়ে লাগালে উপরিউক্ত রোগগুলির আরাম হয়।[১]
১১. পাণ্ডু অর্থাৎ জণ্ডিস হলে:
গাছের মূল কাণ্ড চিড়লে যে হলুদ রং-এর রস বের হয়, সেটা সকালে এক চামচ এবং বিকেলে একই পরিমাণ সাতদিন রোগীকে খাওয়ালে উপকার হবে।
১২.গর্মী ঘায়ে:
এটি একটি দুরারোগ্য ব্যাধি। শেয়ালকাঁটার শিকড় অল্প পানি দিয়ে বেটে ঘায়ে প্রলেপ দিলে দ্রুত ঘা শুকিয়ে যায়।[২]
CHEMICAL COMPOSITION
Argemone mexicana
Seeds contain:- (a) Oleic acid 22%; (b) Linolic acid 48%; (c) Palmitooleic acid 6%; (d) Ricinoleic acid 10%.[১]
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ৫, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ ১৪০৩, পৃষ্ঠা, ১০১-১০৫।
২. কবিরাজ বৈদ্যনাথ সেন, সম্পাদনায় কবিরাজ আ: খালেক মোল্লা লোকমান হেকিমের কবিরাজী চিকিৎসা, সর্বস্বত্ব, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ অক্টোবর ২০০৯, পৃষ্ঠা, ৩৮-৩৯।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।