মালায়াঞ্চি বাংলাদেশ ভারতের জিঞ্জিবার গণের রাইজোমসমৃদ্ধ লম্বা বীরুৎ

আদার প্রজাতি

মালায়াঞ্চি

বৈজ্ঞানিক নাম: Zingiber roseum (Roxb.) Rosc., Trans. Linn. Soc. 8: 348 (1807). সমনাম: Amomum roseum Roxb. (1800). ইংরেজী নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: মালায়াঞ্চি (কেরালা)।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms, অবিন্যাসিত: Monocots, অবিন্যাসিত: Commelinids, বর্গ: Zingiberales, গোত্র: Zingiberaceae, গণ: Zingiber, প্রজাতি: Zingiber roseum (Roxb.).

ভূমিকা: মালায়াঞ্চি গাছ বাংলাদেশ এবং ভারতের কন্দজ গুল্ম। বাংলাদেশে গাছটি মধুপুরের শালবনে দেখা যায়। এই প্রজাতির উদ্ভিদ জিঞ্জিবার গণের রাইজোমসমৃদ্ধ বীরুৎ।

বর্ণনা: মালায়াঞ্চি জিঞ্জিবার গণের রাইজোমসমৃদ্ধ লম্বা বীরুৎ। এরা অনুভূমিক, লম্বা, শাখান্বিত, ভিতরে নীলাভ, মসলার গন্ধযুক্ত, অনেক আঁশ সম্পন্ন। পত্রল-কান্ড ১.৫-১.৭ মিটার লম্বা। পাতা অবৃন্তক, ল্যান্সাকার, ৩০-৫০ x ৮.০-৯.৫ সেমি, নীচতল লম্বা, নরম রোমাবৃত, পরিপক্ক অবস্থায় ঝরে যায়, লিগিউল ঝিল্লিবৎ, ১.৫ সেমি লম্বা। স্পাইক গাছের গোড়া থেকে উৎপন্ন হয় এবং প্রায় অর্ধেক মাটির নিচে প্রথিত থাকে। স্পাইক খুব ঘন, উপবৃত্তাকার বা আয়তাকার, ৭-১০ সেমি লম্বা, ময়লা-লাল, মঞ্জরীদন্ড খাটো, ৪-৭ সেমি লম্বা, কয়েকটি ময়লা-লাল সীথ দ্বারা আবৃত থাকে। বাহিরের মঞ্জরীপত্র ডিম্বাকার, দীর্ঘাগ্র, ৪.০-৪.৫ x ১.২ সেমি, মসৃণ বা প্রায় লোমহীন, ভিতরের মঞ্জরীপত্র ল্যান্সাকার, ৩.৬- ৩.৮ x ০.৬-০.৭ সেমি, উপরের অংশ লাল, নিচের অংশ সাদা, লোমশ, উপ-মঞ্জরীপত্র আয়তাকার, ২.৯ X ১.০ সেমি, ভাজ করা, উপরের অংশ গোলাপি, নিচের অংশ সাদা, বেশি রোমশ, অগ্র অসম দন্তুর। বৃতি নলাকার, ঝিল্লিবৎ, প্রায় ২ সেমি লম্বা, একপাশে অর্ধেক বিদীর্ণ, ৩ দন্তুর, শিরার উপর রোমশ। দলনল প্রায় ২.৭ সেমি লম্বা, রোমশ, পাপড়ি ৩টি, প্রায় সমান, সরু, দীর্ঘাগ্র, ২-৪ সেমি, লাল, গোড়া সাদা। ষ্টেমিনোড ২টি, ছোট, গাঢ় হলুদ, অগ্র গোলাকার, নিচে বাকানো, লেবেলামের দুই পার্শ্বে থাকে। লেবেলাম ডিম্বাকার, অখন্ড, প্রায় ২.৫ x ১.৫ সেমি, দলখন্ডের সমান, মাঝখানে সাদা, কিনারা হাল্কা হলুদ। পুংকেশর লেবেলামের সমান এবং ধনুকের মত বেঁকে থাকে, পরাগধানী প্রায় ১৪ মিমি লম্বা, হলুদ, ঠোঁট ১০ মিমি লম্বা, হলুদ। গর্ভাশয় ৪-৫ x ৩ মিমি, অতিরোমশ, গর্ভদন্ড বাঁকানো, সিলিয়াযুক্ত। ক্যাপসিউল ডিম্বাকার, তিন কোনা বিশিষ্ট, প্রায় ৩ x ২ সেমি, ৩-ভাল্ব সম্পন্ন, ময়লা লাল, ভাল্বের ভিতর উজ্জ্বল লাল। বীজ ডিম্বাকার, প্রায় ৫.০ x ৩.৫ মিমি, গাঢ় চকলেট, আঁশময় এরিল দ্বারা আবৃত। ফুল এবং ফল ধারণ ঘটে আগস্ট-অক্টোবর মাসে।

আরো পড়ুন:  জংলি আদা বাংলাদেশ ভারত নেপাল ও ভুটানের কন্দজ গুল্ম

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২২ (Kumar and Subramanium, 1986).

আবাসস্থল: বনের হাল্কা ছায়ায়।

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: রাইজোম ঠান্ডা, কফ এবং বাতে ব্যবহার হয়।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: জানা নাই।

বংশ বিস্তার: রাইজোম দ্বারা সহজেই বংশ বিস্তার হয়।

অন্যান্য তথ্য

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১২শ খণ্ডে  (আগস্ট ২০১০) মালায়াঞ্চি গাছটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বন ধ্বংস এবং সীমিত বিস্তৃতি এদের সংকটের কারণ এবং এটি বাংলাদেশে বর্তমানে তথ্য অপ্রতুল (NE) প্রজাতি। বাংলাদেশে মালায়াঞ্চি গাছ সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি এবং গাছটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য সংগৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতির গাছটিকে অতিসত্বর in-situ এবং ex-situ উভয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে।  

তথ্যসূত্র:

১. মোহাম্মদ ইউসুফ, (আগস্ট ২০১০)। অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১২ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪৯২। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!