চাকোয়া বাংলাদেশের পাহাড়ি চিরহরিৎ বনের ভেষজ বৃক্ষ

বৃক্ষ

চাকোয়া

বৈজ্ঞানিক নাম: Anogeissus acuminata (Roxb. ex DC.) Guill. & Perr., Fl. Seneg. Tent. 1: 280 (1832). সমনাম: Conocarpa acuminata Roxb. ex DC. Anogeissus acuminata Roxb. ex DC. var. lanceolata Wall. ex C. B. Clarke (1879). ইংরেজি নাম: axlewood স্থানীয় নাম: চকোয়া।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ: Myrtales. পরিবার: Combretaceae. গণ: Anisomeles, প্রজাতি: Anogeissus acuminata.

ভূমিকা: চাকোয়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Anogeissus acuminata) হচ্ছে এশিয়ার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশের ভেষজ উদ্ভিদ। এর পাতা, মূলে নানা ভেষজ গুণ আছে।

চাকোয়া-এর বর্ণনা:

পর্ণমোচী বৃক্ষ, প্রায় ৩৬ মিটার উঁচু, বাকল গাঢ় বাদামী, শাখা ঝুলন্ত, তরুণ শাখা কন্টক যুক্ত।

পত্র উপবৃত্তাকার থেকে ভল্লাকার, ৩.০-৮.৫ x ০.৮-৩.৭ সেমি, দীর্ঘাঘ্র, মূলীয় অংশ কীলকাকার, অখন্ড, শিরা ৫-৮টি, ধনুকাকার, স্বল্প রোমশ, বৃন্ত ১-৪ মিমি লম্বা, রোমশ।

পুষ্প বিন্যাস অক্ষীয় ও শীর্ষীয়, একল বা ২-৩ টি। শিরমঞ্জরী বিশিষ্ট, মঞ্জরী দন্ড সাধারণত ৪-৮ মিমি, কখনও ৬-২৫ মিমি, রোমশ।

মঞ্জরীপত্র ১-২ জোড়া, ভল্লাকার, ৩২ মিমি লম্বা, আতিরোমশ, পর্ণমোচী।

শিরমঞ্জরী ৮-১৭ মিমি ব্যাস বিশিষ্ট, হলুদ। বৃত্যংশ দন্ড সরু, ৩-৫ মিমি, মরচে রোমশ, বৃত্যংশ ৫টি, রোমশ বিহীন বা নিম্নাংশ রোমশ। পাপড়ি অনুপস্থিত।

পুংকেশর ১০ টি, পুংদন্ড ৩৪ মিলি লম্বা। গর্ভাশয়ের উর্ধ্বাংশ রোমশ, নিম্নাংশ রোমশ বিহীন, গর্ভদন্ত ৩-৪ মিমি লম্বা। ফল ৪ x ৪-৭ সেমি, পক্ষল।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

চিরহরিৎ এবং অর্ধচিরহরিৎ অরণ্য। ফুল ও ফল ধারণ হয় ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল। বিস্তার হয় বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার।

চাকোয়া-এর বিস্তৃতি:

ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস ও ভিয়েতনাম। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় পাওয়া যায়।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: পাতা রঙের কাজে ব্যবহার করা হয় (Gamble, 1922)।

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) চকোয়া প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না; তবে অরণ্য ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশে এর তথ্য অপর্যাপ্ত।

আরো পড়ুন:  গুইয়া বাবলা গাছ-এর নানাবিধ ভেষজ গুণাগুণ

বাংলাদেশে চকোয়া সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে ও মাঠ পর্যায়ে জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নার্সারীতে চারা উৎপাদন করে চাষাবাদ করা প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. এম কে মিয়া (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৭ম, পৃষ্ঠা ২৩৬-২৩৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি Useful Tropical Plants থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Jayesh Pail

Leave a Comment

error: Content is protected !!