কাইনজাল বাংলাদেশের পার্বত্যঞ্চলে জন্মানো ভেষজ বৃক্ষ

বৃক্ষ

কাইনজাল

বৈজ্ঞানিক নাম: Bischofia javanica Blume, Bijdr.: 1168 (1827). সমনাম: Stylodiscus trifoliatus (Roxb.) Benn & R. Br. (1840), Bischofia oblongifolia Decne. (1844). ইংরেজি নাম: Javanese Bishop Wood. স্থানীয় নাম: কাইনজাল।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Monocots. বর্গ: Asparagales. পরিবার: Iridaceae. গণ: Iris  প্রজাতির নাম: Bischofia javanica

ভূমিকা: কাইনজাল (বৈজ্ঞানিক নাম: Bischofia javanica, ইংরেজি: Javanese Bishop Wood) নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের দেশে জন্মে। ভেষজ গুণ থাকায় অনেকে বাগানে চাষ করে থাকে।

কাইনজাল-এর বর্ণনা:

বৃহৎ পর্ণমোচী বৃক্ষ, দেহকান্ড লম্বা, বেলনাকার, শীর্ষদেশ প্রসারিত, বাকল বহিভাগ গাঢ় বাদামী, অভ্যন্তর লালাভ, কান্ডে লালাভ গদ বিদ্যমান। পত্র একান্তর, ত্রিফলাকাকার, পত্রক ৭.৫-১৫.০ সেমি লম্বা, উপবৃত্তাকার বা ডিম্বাকার-দীর্ঘায়ত, দীর্ঘাগ্র, সাধারণত গোল দন্তক, রোমশ বিহীন, প্রতি অর্ধাংশে পার্শ্বীয় শিরা ৬-৮টি, সরু, শীর্ষীয় পত্রক অতিশয় লম্বা, বৃন্ত ৭.৫-২০.০ সেমি লম্বা, পুষ্প সবুজাভ, একলিঙ্গ।

পুংপুষ্প: খাটো বৃন্তক, পুংকেশর ৫টি, পরাগধানী গোলাকার, বন্ধ্যা গর্ভকেশর উপস্থিত। স্ত্রী পুষ্প: সবৃন্তক, বৃত্যংশ ডিম্বাকার, আশুপাতী, গর্ভদন্ড রৈখিক, অখন্ড, গর্ভাশয় ৩-৪ কোষী, প্রতিকোষে ডিম্বক ২টি। ফল গোলাকার ব্যাকেট, রসালো, আঠালো রস যুক্ত, পরিপক্ক অবস্থায় বাদামী, বৃন্ত মোটা। বীজ মসৃণ, উজ্জ্বল।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার:

মিশ্র চিরসবুজ অরণ্য। ফুল ও ফল ধারণ মার্চ-জুলাই মাস। বীজ বপন করলে নতুন চারা জন্মে।

বিস্তৃতি:

ভারত, মায়ানমার ও অয়েষ্টার্ন পেনিনসুলা। বাংলাদেশের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি, জেলায় জন্মে।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:

পাতার রস ঘা নিরাময় করে। বাঁশের ঝুড়ি ও পাখা তৈরিতে পাতা ব্যবহার করা হয় (Caius, 1998)। কাষ্ঠ নির্মাণ কাজে গুরুত্বপূর্ণ।

কাইনজাল-এর অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) কাইনজাল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।

আরো পড়ুন:  মচকুন্দ গাছের ভেষজ গুণাগুণ ও উপকারিতা

বাংলাদেশে কাইনজাল সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. এম মতিউর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪০৬-৪০৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!