মালাইং মাঝারি আকারের পত্রঝরা বৃক্ষ

বৈজ্ঞানিক নাম: Broussonetia papyrifera (L.)

সমনাম: Morus papyrifera L. (1753). ।

ইংরেজি নাম: Paper Mulberry.

বাংলা নাম: মাইলাং,

জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants

উপরাজ্য: Angiosperms

বিভাগ: Eudicots

শ্রেণী: Rosids

বর্গ: Rosales

পরিবার: Moraceae

গণ: Broussonetia

প্রজাতি: Broussonetia papyrifera (L.) L’Herit. ex Vent., Tabl. Regn. Veg. 3: 547 (1799).

বর্ণনা: মালাইং মাঝারি আকারের পত্রঝরা বৃক্ষ, ২০ মিটার পর্যন্ত উঁচু, বাকল গাঢ় ধূসর, মসৃণ, উপশাখাসমূহ ঘন রোমাবৃত। পাতা সর্পিলাকারে সজ্জিত, অণুপর্ণী, উপপত্র ১.৫-২.০ x ০.৮-১.০ সেমি, ত্রিকোণাকার-ডিম্বাকার, ঘন রোমাবৃত, বৃন্তক, বৃন্ত ২.৩-৮.০ সেমি লম্বা, পত্রফলক স্থুল ডিম্বাকার থেকে সরু উপবৃত্তাকার-ডিম্বাকার, সরল বা চারা বৃক্ষে ৩৫ খন্ডিত, ৬-১৮ X ৫-৯ সেমি, শীর্ষ দীর্ঘাগ্র, নিম্নপ্রান্ত হৃৎপিণ্ডাকার এবং অসম, কিনারা স্কুল ক্রকচ, অক্ষাভিগ পার্শ্ব ঘন রোমাবৃত কিন্তু শিরাসমূহ দৃঢ় রোমশ, অক্ষবিমুখ পৃষ্ঠ কিঞ্চিৎ কর্কশ এবং বিক্ষিপ্ত রোমাবৃত, দ্বিতীয়ক শিরা ৬৭ জোড়া।

পুং পুষ্পমঞ্জরী মঞ্জরীবৎ, ৩ – ৮ সেমি লম্বা, মঞ্জরীপত্র ভল্লাকার, রোমশ। স্ত্রী পুষ্পমঞ্জরী গোলকাকার, মঞ্জরীপত্র মুষলাকৃতি, অগ্রভাগ রোমশ। পুষ্প সর্বদা পত্রবহুল কান্ড থেকে উৎপন্ন হয়। পুং পুষ্পের বৃতি ৪খন্ডিত, খন্ডকগুলো ত্রিকোণাকার-ডিম্বাকার এবং রোমশ, পরাগধানী গোলকাকার। স্ত্রী পুষ্পের বৃতির খন্ডকগুলোর অগ্রভাগ গর্ভদন্ডের সাথে যমক, গর্ভাশয় নিরেট ডিম্বাকার, গর্ভমুণ্ড রৈখিক, রোমশ। সিনকার্প পরিণত অবস্থায় কমলা লাল, ১.৫-৩.০ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট, অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোমশ, সরস। খর্বাকার ড্রুপগুলো দৈর্ঘ্যে বৃন্তের সমান, দুই সারি ক্ষুদ্র গুটিকাবিশিষ্ট, বহি:ত্বক শঙ্খ আকৃতির। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৬ (Mehra and Gill, 1974).

আবাসস্থল: অরণ্য, পাহাড় এবং উপত্যকা, কখনও কখনও চাষ করা হয়।

বিস্তৃতি: আদি নিবাস জাপান, চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া; রাশিয়া, পশ্চিম এশিয়া, গ্রীষ্ম প্রধান আফ্রিকা, ইউরোপ, পলিনেশিয়া, ফিলিপাইন, আমেরিকা এবং আরও অনেক দেশে প্রবর্তিত এবং চাষ করা হয়। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি চট্টগ্রাম জেলা থেকে নথিভুক্ত করা হয়েছে (Heinig, 1925).

আরো পড়ুন:  গামার গাছ বাংলাদেশ ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের বৃক্ষ

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: ইহা রাজপথ বীথি হিসেবে রোপন করা হয়। কাঠ আসবাপত্র নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: চীন এবং জাপানে ইহার অন্ত:বাকল দিয়ে কাগজ তৈরি করা হয়।

বংশ বিস্তার: বীজ দ্বারা।

প্রজাতিটির সংকটের কারণ: আবাসস্থল ধ্বংস।

সংরক্ষণ: বাংলাদেশে সংরক্ষণ সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানা নেই।

বর্তমান অবস্থা: তথ্য সংগৃহিত হয়নি (NE), কিন্তু ধারণা করা হয় বিরল প্রজাতি। ইহার সম্পর্কে একটি মাত্র বর্ণনা থেকেই জানা যায় যা হেইনিগ ১৯২৫ সনে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে এদের তথ্য তৈরি করেন এবং তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ইহার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।

গৃহিত পদক্ষেপ: সংরক্ষণের জন্য কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

প্রস্তাবিত পদক্ষেপ: প্রজাতিটি খুঁজে বের করার জন্য অনুসন্ধান চালাতে হবে এবং ইহার আবাসস্থল সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উপরন্তু ইহাকে স্ব-স্থানে এবং স্ব-স্থানের বাইরে সংরক্ষণ করতে হবে।

তথ্যসূত্র:

১. এম অলিউর রহমান, (আগস্ট ২০০৯)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”।  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ ৯ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২০১-২০২। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!