ভূমিকা: পাতি লেবু (বৈজ্ঞানিক নাম: Citrus aurantifolia ইংরেজি নাম: Lime, Sour Lime, Common Lime) হচ্ছে সপুষ্পক একটি উদ্ভিদ। এই প্রজাতিটি ছোট বৃক্ষ আকারের হয়ে থাকে এবং এর ফল টক স্বাদ যুক্ত।
পাতি লেবু-এর বর্ণনা:
চিরহরিৎ, ঘনভাবে এবং অনিয়মিতভাবে শাখান্বিত। ছোট, কন্টকিত বৃক্ষ, ৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু। পত্র একান্তর, ৪৮ x ২-৫ সেমি, উপবৃত্তাকার-আয়তাকার, গোলাকার দপ্তর, পত্রবৃন্ত সরু পক্ষযুক্ত।
পুষ্পবিন্যাস খাটো, কাক্ষিক । রেসিম, ৩-১০ পুস্পক। পুষ্প সাদা, ছোট, উভলিঙ্গ এবং পুংপুষ্পক। বৃতি পেয়ালাকার, ৪-৬ খন্ডিত, রসালো। পাপড়ি ৪-৬টি, আয়তাকার, ৮-১২ মিমি লম্বা, শীর্ষ তীক্ষ্মাগ্র, চর্মবৎ, বিশুদ্ধ সাদা।
পুংকেশর ২০-৪০টি, পুংদন্ড সাদা, পরাগধানী আয়তাকার, প্রায় ৩ মিমি লম্বা, হলুদ। গভাশয় ৯-১৫ কোষী, গর্ভদন্ড বেলনাকার, সাদা, গর্ভমুন্ড মুন্ডাকার।
ফল গোলাকার-ডিম্বাকার বেরী, ৩-৬ সেমি চওড়া, আংশিক গোলাকার উপবৃদ্ধিযুক্ত, পাকলে সবুজাভ হলুদ। বীজ ছোট, ডিম্বাকার, ফ্যাকাশে, সাদা জ্বণযুক্ত মসৃণ।
ক্রোমোসোম সংখ্যা : 2n = ১৮, ২৭ (Kumar and Subramaniam, 1986).
আবাসস্থল ও চাষাবাদ:
বাড়ি ও বাগানে লাগালো হয়। বীজ দ্বারা এবং জোড় কলম দ্বারা চারা তৈরি করা হয়। ফুল ও ফল ধারণ মার্চ-সেপ্টেম্বর।
বিস্তৃতি:
পাতি লেবু ওয়েষ্টইন্ডিজে উৎপন্ন বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে সমগ্র গ্রীষ্মমন্ডলে এবং গরম অর্ধউষ্ণমন্ডলীয় এলাকায় আবাদী। বাংলাদেশের সমগ্র অংশে পাওয়া যায়।
পাতি লেবু-এর ঔষধি ব্যবহার:
ফলের রস স্কার্ভিরোধী, ক্ষুধাবর্ধক, পেটের ব্যথা নাশক এবং অণুজীবরোধী এবং অজীর্ণতা, পেট ফাপা, রুক্ষ মেজাজ, অরুচি ও চামড়ার ফুসকুড়ির চিকিৎসায় ব্যবহৃত।
রস পানির সাথে মিশ্রিত করে পান করা হয় যা ঠান্ডাকারক, যন্ত্রণারোধক এবং পুষ্টিকর পানীয় হিসেবে ভাইরাস জ্বরে, ঠান্ডা এবং সর্দির উপশমকারী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
পাতা চা এবং কারীর সুগন্ধিকরণে ব্যবহৃত হয় (Ghani, 2003)। লাইম তৈল খোসা থেকে উৎপাদিত এবং সুগন্ধি ও আতর তৈরীতে ব্যবহৃত হয় ।
জাতিতাত্বিক ব্যবহার:
মালয়েশিয়ায় ফল লবণাক্ত পানি এবং সিরকায় সংরক্ষণ করা হয়, এবং তেলে ভেজে চিনিসহকারে ক্ষুধাবর্ধক হিসেবে উপভোগ করা হয়। (Verheij and Coronel, 1992).
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের খণ্ডে ৯ম(আগস্ট ২০১০) কমলা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশে কমলা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে এটি সংরক্ষণের তেমন প্রযোজন নেই।[১]
তথ্যসূত্র:
১. এম. আমান উল্লাহ (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৬৫-১৬৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।