বিলেতি গাব উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের ফলদ বৃক্ষ

বৈজ্ঞানিক নাম: Diospyros blancoi.

সমনাম: Diospyros philippinensis A. DC. (1844), Diospyros philippensis (Desr.) Guerke (1891), Diospyros discolor Willd. nom illeg. Verheij and Coronel (1992).

ইংরেজি নাম: Valvet Apple, Butter Fruit Tree, Peach Bloom, Mabolo.

স্থানীয় নাম: বিলেতি গাব

বিলেতি গাব গাছ ও গাব ফল, আলোকচিত্র: Judgefloro. CC-BY-SA-4.0

জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

জগৎ/রাজ্য: Plantae – Plants

 শ্রেণী: Eudicots

উপশ্রেণি: Asterids

বর্গ:  Ericales

পরিবার:

গণ: Diospyros

প্রজাতি: Diospyros blancoi A. DC., Prodr. 8: 237 (1844).

বর্ণনা: বিলেতি গাব এবিনাসি পরিবারের ডিয়োসপিরোস গণের সপুষ্পক উদ্ভিদের একটি মধ্যম আকৃতির চিরহরিৎ বৃক্ষ। এদের দেহ কান্ড খাড়া, শাখা আনুভূমিক, শীর্ষদেশ কোণাকৃতি, বাকল মসৃণ, ধূসর বাদামী। পত্র একান্তর, দীর্ঘায়ত, ৭-২৫ x ৫-১০ সেমি, চর্মবৎ, মূলীয় অংশ সাধারণত গোলাকার, সামান্য তাম্বুলাকার, শীর্ষ তীক্ষ্ম, উপরের পৃষ্ঠ গাঢ় সবুজ উজ্জ্বল, রোমশ বিহীন, নিচের পৃষ্ঠ রৌপ্য বর্ণযুক্ত রোমাবৃত, বৃন্ত প্রায় ১.৫ সেমি, পুষ্প একলিঙ্গ, চতুরাংশক। বৃতি গভীর ভাবে ৪ খন্ডিত, নলাকার, ১ সেমি লম্বা। দলমন্ডল ৪ খন্ডিত, নলাকার, গৌরবর্ণ যুক্ত।

পুংপুষ্প: ৩-৭ টি, অক্ষীয় নিয়ত মঞ্জরীতে বিন্যস্ত, বৃন্ত খাটো, পুংকেশর ২২-২৪ টি, রোমশ বিহীন, মূলীয় অংশে জোড়া বদ্ধ। স্ত্রীপুষ্প: একল অক্ষীয়, অর্ধবৃন্তক, পুংপুষ্প অপেক্ষা সামান্য বৃহত্তর, বন্ধ্যা পুংকেশর ৪-১০ টি, ৪-৫ টি গর্ভদন্ড যুক্ত গর্ভাশয়। ফল গোলাকার বেরি, মখমল সদৃশ আবরন যুক্ত, পরিপক্ক অবস্থায় লাল বা বেগুনি লালে পরিণত। বীজ ৪-৮টি, বৃহৎ, তীব্র গন্ধযুক্ত, আশাঁলো অংশ শুল্ক। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে মার্চ-আগস্ট মাসে।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ৩০ (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল: সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে কম বা মাঝামাঝি উচ্চতা বিশিষ্ট প্রাথমিক গৌণ অরণ্য।

বিস্তৃতি: আদিনিবাস ফিলিপাইন। বর্তমানে উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের দেশসমূহে প্রবর্তন ও চাষাবাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহে বিশেষ করে পিরোজপুর, বরিশাল, পটুয়াখালি ও সাতক্ষিরা জেলায় বাড়ির আঙ্গিনায় চাষাবাদ করা হয়।

বিলেতি গাবের অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব:

কাষ্ঠ আসবাব পত্র নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কুন্দকারের যন্ত্র, পিয়ানো রূলার, বাদ্যযন্ত্র, হাঁটার ছড়ি, ছাতার হাতল, শখের জিনিস পত্রও এই গাছের কাঠ দ্বারা তৈরি হয়। (Khan and Alam, 1996)। ফলের ৬০-৭৩ শতাংশ আহার্য, ১০০ গ্রাম টাটকা ভক্ষনীয় অংশে রয়েছে পানি ৮৩.০-৮৪.৩ গ্রাম, আমিশ ২.৮ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, শর্করা ১১.৮ গ্রাম, আঁশ ১.৮ গ্রাম, ছাই ০.৪-০.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৬ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৮ মিলিগ্রাম, লোহা ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ৩৫ IU, থায়ামিন ০.০২ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন ও নায়াসিন ০.০৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১৮ মিলিগ্রাম। শক্তির গড়পড়তা মান ৩৩২ Kcl ১০০ গ্রাম (Verheij and Coronel, 1992)।

আরো পড়ুন:  আমড়া গাছ, ছাল, পাতা, ফলের ১২টি ঔষধি ব্যবহার

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: ফিলিপাইনে এই কাষ্ঠ কারিগরি শিল্পে ব্যবহার করা হয় (Verheij and Coronel, 1992)।

বংশ বিস্তার: বীজে বংশ বিস্তার ।

প্রজাতিটির সংকটের কারণ: সংকটের আশু সম্ভাবনা নেই।

সংরক্ষণ ও বর্তমান অবস্থা: আশংকা মুক্ত (lc)।

গৃহীত পদক্ষেপ: সংরক্ষণের পদক্ষেপ নেই।

প্রস্তাবিত পদক্ষেপ: সংরক্ষণের আশু পদক্ষেপ নিষ্প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র:

১. এম আহসান হাবীব, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৩৬৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!