আমজুর বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে জন্মানো ভেষজ বৃক্ষ

বৃক্ষ

আমজুর

বৈজ্ঞানিক নাম: Drimycarpus racemosus Hook. f. in Benth. & Hook. T., Gen. PL. 1; 424 (1862). সমনাম: Holigarna racemosa Roxb. (1832). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: কোডি-বারেলা, লাউ-বারেলা, আমজুর, আঙুর (সিলেট), নালা-আমশি (চট্টগ্রাম), সাঙাইপ্রী, খালি (গারো)।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Tracheophytes. অবিন্যাসিত: Eudicots. বর্গ:  Sapindales. পরিবার: Anacardiaceae. গণ: Drimycarpus প্রজাতির নাম: Drimycarpus racemosus

ভূমিকা: আমজুর (বৈজ্ঞানিক নাম: Drimycarpus racemosus) এক প্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে সংকটাপন্ন।

আমজুর-এর বর্ণনা:

বৃক্ষ, ২৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা, প্রশাখা মসৃণ। পত্র সবৃন্তক, পত্রবৃন্ত ১.২-১.৭ সেমি দীর্ঘ, পত্রফলক ১২-২৭ x ৩-৭ সেমি, বল্লমাকার বা বিবর্শাফলাকার, আকস্মিকভাবে দীর্ঘা, নিম্নাংশ কীলকাকার, প্রান্ত অখন্ড, চর্মবৎ, নিচে অণুরোমশ, শিরা ২০-৩০ জোড়া, শক্তভাবে বাঁকানো, উপরে মধ্যশিরা কিছুটা প্রশস্ত।

পুষ্পবিন্যাস ৪-১৯ সেমি দীর্ঘ, অনিয়ত পুষ্পবিন্যাস কাক্ষিক গুচ্ছে শাখান্বিত, পত্র অপেক্ষা খর্বর, রোমশ বা মসৃণ। পুষ্প একলিঙ্গ। পুংপুষ্প আড়াআড়িভাবে ১ মিমি। বৃতি খন্ডক ডিম্বাকার, অণুরোমশ। পাপড়ি ১ X ১ মিমি এর বেশি, আয়তাকার, মসৃণ। পুংকেশর ১ মিমি দীর্ঘ। চাকতির ব্যাস ১ মিমি, স্ত্রীপুষ্পের ব্যাস ৩ মিমি।

বৃত্যংশ এবং দল পুং পুষ্পের ন্যায়, গর্ভাশয় ১.৫ মিমি ব্যাসবিশিষ্ট, ডিম্বাকার, গর্ভদণ্ড প্রান্তীয়, খর্ব, গর্ভমুণ্ড অস্পষ্টভাবে ৩-খন্ডকবিশিষ্ট। ফল ডুপ, প্রস্থচ্ছেদে আয়তাকার বা ডিম্বাকার, ১.৫-২.০ X ২.৫ সেমি, হলুদাভ-লাল, ফল বহিস্তৃক অণুরোমশ।

আবাসস্থল ও বংশ বিস্তার: ছায়াময় স্থান ও নদী বা জলাশয়ের কিনারা বরাবর। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল সেপ্টেম্বর-এপ্রিল।

বিস্তৃতি:

ভারত এবং মায়ানমার। বাংলাদেশে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় এই প্রজাতিটির প্রাপ্তির তথ্য জানা যায়।

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক:

এই গাছের কাঠ ভাল পালিশ ধারণ করে। তক্তা ও নৌকা তৈরির জন্য আসাম এবং বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয় (Singh et al., 2000)। এই গাছ বিষাক্ত বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

আরো পড়ুন:  পাট বা সাদা পাট-এর নানাবিধ ভেষজ গুণাগুণ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৬ষ্ঠ খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) আমজুর প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, উদ্ভিদের আবাসস্থান ধ্বংসের কারণ বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে আমজুর সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি আশু ইনসিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র:

১. নাহিদ সুলতানা (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৬ষ্ঠ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১১৭। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবিটি https://biodiversity.bt থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Tandin wangchuk

Leave a Comment

error: Content is protected !!