ভূমিকা: ছাগলের বড়ি (বৈজ্ঞানিক নাম: Eurya acuminata) ইউরায়া গণের Pentaphylacaceae পরিবারের বৃক্ষ। এই প্রজাতিটি আবাদি নয়, পতিত জায়গায় অযত্নে জন্মে। অনেকে শখের বসে শোভাবর্ধনের জন্য লাগায়। তবে ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
ছাগলের বড়ি-এর বর্ণনা:
গুল্ম অথবা ছোট বৃক্ষ, ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু, কচি শাখা বিস্তৃত লোমসহ লোমশ। পত্র দ্বিসারী, ৩-১০ x ১-৩ সেমি, উপবৃত্তাকার-আয়তাকার হতে উপবৃত্তাকার-বল্লমাকার, গোড়া সূক্ষ্মাগ্র হতে কীলকাকার, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র-দীর্ঘা, উপরের তল মসৃণ, নিবতল লোমশ, পত্রবৃন্তক ১-৩ মিমি লম্বা, লোমযুক্ত। পুষ্প সাদা, ছোট, ১-৫টি অক্ষীয়ভাবে বিন্যস্ত, সুগন্ধিযুক্ত, পুষ্পবৃন্তিকা ৩-৪ মিমি লম্বা, মঞ্জরীপত্রিকা ২টি। বৃত্যংশ ৫টি, বাইরের দুটি অপেক্ষাকৃত ছোট, অবতল, বাইরের দিক লোমশ, স্থায়ী। পাপড়ি ৫টি, সাদা, মসৃণ, মূলীয় অংশে সংযুক্ত।
পুংকেশর ১৫টি হতে অসংখ্য, অসমান, মসৃণ, পরাগধানী ২-প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট, সূক্ষ্ম খর্বা, হলুদ। গর্ভাশয় ডিম্বাকার, ৩-৫ প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট, মসৃণ, গর্ভদন্ড সংযুক্ত অথবা গোড়ার দিকে বিভাজিত, গর্ভমুন্ড ৩-৫টি, পালকবৎ। ফল উপগোলাকার বেরী, মসৃণ, অসংখ্য বীজবিশিষ্ট। বীজ ত্রিকোণাকার, চকচকে বাদামী। ক্রোমসোম সংখ্যা : 2n = ৪৬ (Kumar and Subramaniam, 1986)
আবাসস্থল ও চাষাবাদ:
চিরসবুজ বনের কিনারা অথবা ছোট ঝোপবিশিষ্ট বনে জন্মে। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল জুলাই-ডিসেম্বর মাস। বীজ ও শাখা কলমের দ্বারা নতুন চারা জন্মে।
বিস্তৃতি:
ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মায়ানমার, চীন, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া। বাংলাদেশে ইহা চট্টগ্রাম জেলার চুনাতি ওয়াইল্ড লাইফ স্যানকচুয়ারী বন থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে।
ছাগলের বড়ি-এর ব্যবহার:
পাতা দিয়ে সবুজ সার হয়। ঔষধীগতভাবে চামড়ার ফুসকুড়ির পুলটিস দেবার জন্য এবং চীনে চা ভেজালযুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। কোমল, বাদামী কাঠ জ্বালানি কাঠ হিসেবে উপযুক্ত (Farida Hanum and van der Maesen, 1997).
অন্যান্য তথ্য:
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ছাগলের বড়ি প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বন ধ্বংসের কারণে এই প্রজাতির সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে ছাগলের বড়ি সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির ইন-সিটু ও এক্স-সিটু উভয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণের প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র ও টীকা:
১. এম আহসান হাবীব (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ১০ম, পৃষ্ঠা ৩৭৯-৩৮০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Nidhan Singh
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।
নতুন একটি গাছ সম্পর্কে তথ্য জানলাম।