পাকুড় বাংলাদেশে জন্মানো উপকারী বৃক্ষ

পাকুড়

 বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus rumphii Blume, Bijdr.: 437(1825). সমনাম: Ficus cordiflolia Roxb. (1832), Urostigma cordifolium (Roxb.) Miq. (1847). ইংরেজি নাম: Weeping Fig. স্থানীয় নাম: পাকুড়, গাই অশ্বথ, সুনামজোর (সাঁওতাল)। জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae, বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. অবিন্যাসিত: Rosids. বর্গ: Rosales. পরিবার: Moraceae. গণ: Ficus প্রজাতি: Ficus rumphii.

ভূমিকা: পাকুড় (বৈজ্ঞানিক নাম: Ficus rumphii) ফিকাস গণের মরাসিয়া পরিবারের গুল্ম। এই প্রজাতিটি যেকোন জায়গায় জন্মাতে পারে। এটি অনেক ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

পাকুড়-এর বর্ণনা:

পাকুড় মাঝারি আকারের পত্রঝরা বৃক্ষ। এটি ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু, উপশাখাসমূহ এবং তরুণ বিটপ মসৃণ, চুড়া অনিয়মিত আকারবিশিষ্ট। পাতা সরল, একান্তর, বৃন্তক, বৃন্ত ৪-১০ সেমি লম্বা, ফলক স্থুল ডিম্বাকার, ১০-১৫ x ৬-১০ সেমি, নিম্নপ্রান্ত খাতাগ্র বা প্রায় হৃৎপিণ্ডাকার, কিনারা অখন্ড, শীর্ষ তীক্ষ্ণগ্রবিশিষ্ট, উভয়পৃষ্ঠ মসৃণ। হাইপ্যান্থোডিয়া অবৃন্তক, কাক্ষিক এবং জোড়বদ্ধ ও ঝরে পড়া পাতার চারপাশে জন্মায়, সবুজ, গোলকাকার, নিরেট বিডিম্বাকার, ৮-১০ মিমি ব্যাসবিশিষ্ট, অগ্রস্থ ছিদ্রটি ৩টি মঞ্জরীপত্র দ্বারা বন্ধ।

পুং পুষ্প: ছিদ্রবিশিষ্ট, সংখ্যায় কয়েকটি, বৃত্যংশ ৩টি, চমসাকার, পুংকেশর ১টি, পুংদন্ড লম্বা। স্ত্রী পুষ্প: বৃত্যংশ ৩টি, ভল্লাকার, গর্ভাশয় নিরেট বিডিম্বাকার, গর্ভদন্ড উপপ্রান্তীয়। ফিগ সম্পূর্ণ পরিপক্ক অবস্থায় কালো, গোলকাকার থেকে নিরেট বিডিম্বাকার, মসৃণ। ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২২, ২৬ (Kumar and Subramaniam, 1986).

আবাসস্থল ও চাষাবাদ:

পাকুড় গাছ সাধারণত নদীর তীর এবং গুল্ম অরণ্যে ভাল জন্মে। রাস্তার পাশেও লাগানো হয়। অনেক সময় পরাশ্রয়ী হিসেবে জন্মায়। এর ফুল ও ফল ধারণ সময় মার্চ থেকে নভেম্বর মাস।  বীজের সাহায্যে নতুন চারার জন্ম হয়।

বিস্তৃতি: পাকিস্তান, ভারত, মায়ানমার এবং মালয়েশিয়া। বাংলাদেশের সর্বত্র প্রজাতিটি খুবই সহজদৃষ্ট।

ব্যবহার:

ইহার ফল খাওয়া যায়। কচি পল্লব গো-খাদ্য এবং হাতির খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাতা এবং বাকলের রস হলুদ ও গোল মরিচের সাথে মিশিয়ে হাঁপানি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। জাতিতাত্বিক ব্যবহার: কাঠ জ্বালানী হিসেবে এবং কয়লা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

আরো পড়ুন:  ডোরা বট দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মানো উদ্ভিদ

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ৯ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পাকুড় প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পাকুড় সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটি বর্তমানে সংরক্ষণের প্রযোজন নেই।

তথ্যসূত্র ও টীকা:

১. এম এ হাসান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ৯ম, পৃষ্ঠা ২৩৫-২৩৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Ashutosh Sharma

Leave a Comment

error: Content is protected !!