ফলসা দক্ষিণ এশিয়ার জন্মানো ভেষজ বৃক্ষ

ফলসা

বৈজ্ঞানিক নাম: Grewia asiatica L., Mant. Pl.: 122 (1767). সমনাম : Grewia subinaequalis DC. (1824), Grewia hainesiana Hole (1917). ইংরেজি নাম: Phalsa. স্থানীয় নাম: ফলসা।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae. বিভাগ: Angiosperms. অবিন্যাসিত: Edicots. বর্গ: Malvales. পরিবার: Malvaceae. গণ: Grewia প্রজাতির নাম: Grewia asiatica

ভূমিকা: ফলসা (বৈজ্ঞানিক নাম: Grewia asiatica) হচ্ছে মাভেসিয়া পরিবারের গ্রেউয়া গণের এক প্রকারের ছোট বৃক্ষ। এই প্রজাতিটি দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মায়।

ফলসা-এর বর্ণনা :

ফলসা গুল্ম বা ছোট বৃক্ষ। পত্র ৫-১৯ × ৪-১৫ সেমি, প্রশস্ত ডিম্বাকার বা অর্ধবর্তুলাকার, গোড়া তির্যক হৃৎপিন্ডাকার বা গোলাকার, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র বা দীর্ঘাগ্র, গোলাকার দন্তর, উপরিতল খসখসে, নিম্নতল দৃঢ় রোমশ, ৫-৭ শিরাযুক্ত, পত্রবৃন্ত ১.৮ মিমি পর্যন্ত লম্বা।

পুষ্প কাক্ষিক আম্বেলসদৃশ সাইম, মঞ্জরীদন্ড ৩.৫ সেমি পর্যন্ত লম্বা, কুঁড়ি ৬-১১ × ৪-৫ মিমি, আয়তাকার-বিডিম্বাকার, খাঁজযুক্ত, দৃঢ় রোমশ, পুষ্পবৃন্ত ১ সেমি পর্যন্ত লম্বা। বৃত্যংশ ৫টি, ৬-১২ × ২-৩ মিমি, আয়তাকার-বল্লমাকার বা বিবল্লমাকার, দৃঢ় রোমশ।

পাপড়ি ৫টি, হলুদ, ৩-৭ × ১.৫-৩.০ মিমি, আয়তাকার-বিডিম্বাকার বা রেখাকার- আয়তাকার, স্থূলাগ্র, গ্রন্থি ১.০ × ০.৭ মিমি, বিডিম্বাকার। পুংকেশর অসংখ্য, পুংদন্ড ৪-৬ মিমি লম্বা। গর্ভাশয় ১.৫- ২.৫ × ১.০-১.৫ মিমি, ডিম্বাকার, গর্ভমুন্ড ৪-খন্ডিত। ফল ড্রপ, ৭-১২ মিমি চওড়া, অর্ধগোলাকার, লাল বা রক্ত- বেগুনি।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ২৭, ৩৬ (Fedorov, 1969)।

আবাসস্থল ও বংশবিস্তার:

পত্রঝরা এবং অর্ধচিরহরিৎ বনাঞ্চল এবং সমভূমি। ফুল ও ফল ধারণ সময়কাল নভেম্বর-জানুয়ারি। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা।

বিস্তৃতি:

ভারত এবং শ্রীলংকা। বাংলাদেশের সমগ্র জেলায় ভক্ষণীয় ফলের জন্য আবাদ করা হয়।

ফলসা-এর উপকারীতা:

বাকল থেকে তৈরীকৃত দড়ি হাতী হেচড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। কান্ড থেকে জাহাজের অগ্রভাগ তৈরী করা হয়। ফল ভক্ষণীয়, শরবত তৈরীতেও ব্যবহৃত হয়।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার:

কান্ডের ছোট খন্ড বা মূল অন্ডকোষের স্ফীতাবস্থা নির্মূলে কবচরূপে কোমরে পরিধান করা হয়। সাঁওতাল উপজাতীয়রা মূলের বাকল গেটে-বাতে ব্যবহার করে। পাতা ফোড়া উদগমনে প্রয়োগ করে (Caius, 1998)।

আরো পড়ুন:  দীঘল মুরালি পাহাড়িঞ্চলে জন্মানো বর্ষজীবী গুল্ম

অন্যান্য তথ্য:

বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের  ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ফলসা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত। বাংলাদেশে ফলসা সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে এটি সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।

তথ্যসূত্র:

১. বুশরা খান (আগস্ট ২০১০) “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। খন্ড ১০ম, পৃষ্ঠা ৩৯৫-৩৯৬। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!