ছোট কাঠগোলাপ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের সাদাটে-হলদে রঙের সুগন্ধি ফুল বিশিষ্ট বৃক্ষ

আলংকারিক ফুল

ছোট কাঠগোলাপ

বৈজ্ঞানিক নাম: Plumeria alba L., Sp. Pl.: 210 (1753). সমনাম: yarallat Plumeria hypoleuca Gasp. (1833). ইংরেজি নাম: Pagoda Tree, White Frangipani, Noseay Tree. স্থানীয় নাম: ছোট কাঠগোলাপ, গুরু-চম্পা, চম্পা, গুলাচীন।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms বর্গ: Gentianales পরিবার: Asparagaceae গণ: Plumeria প্রজাতি: Plumeria alba

ভূমিকা: ছোট কাঠগোলাপ, গুরু-চম্পা, চম্পা, গুলাচীন (বৈজ্ঞানিক নাম: Plumeria alba, ইংরেজি নাম: Pagoda Tree, White Frangipani, Noseay Tree) হচ্ছে এ্যাসপারাগাসি পরিবারের প্লুমেরিয়া গণের সপুষ্পক উদ্ভিদ। সাদাটে-হলদে রঙের সুগন্ধি ফুল বিশিষ্ট ছোট বৃক্ষ এটি।

বর্নণা: কাঠগোলাপ ছোট বৃক্ষ। এর পত্র সরল, বৃহৎ, অঙ্কীয় পৃষ্ঠে রোমশ, পুষ্পবৃন্ত অনূর্ধ্ব ৫.৫ সেমি লম্বা, পত্রফলক ২৫-৩০ X ৬৮ সেমি, রৈখিক-আয়তাকার, নিচের অংশে গোলাকার, শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র বা দীর্ঘা, প্রান্ত পৃষ্ঠাবর্তী। সাইম প্রান্তীয়, পুষ্পদন্ড ৩০-৩৫ সেমি লম্বা।

পুষ্প হলুদ কেন্দ্রবিশিষ্ট সাদা, সুগন্ধী। বৃতি ক্ষুদ্র, অগ্রন্থিল, খন্ড খর্ব, গোলাকার। দলমণ্ডল থলিকাকার, খন্ড ডিম্বাকার-বিডিম্বাকার। ফলিক্যাল রৈখিক, মসৃণ, অনূর্ধ্ব ২০ সেমি লম্বা। ফুল ও ফল ধারণ: মে থেকে নভেম্বর।[১]

ক্রোমোসোম সংখ্যা: ২n = ৩৬ [২]

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: শোভাবর্ধনকারী গাছ হিসেবে চাষ করা হয়। এটি শক্ত মাটিতে জন্মে। গাছের কাণ্ড অঙ্গজ প্রজনন ও বীজ দ্বারাও বংশ বিস্তার ঘটে।

বিস্তৃতি: গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আমেরিকার দেশজ, ভারত, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় আবাদকৃত ও প্রকৃতিকরণকৃত। বাংলাদেশে ইহা দেশের সর্বত্র আবাদ করা হয়।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: বাকল, পত্র, পুষ্পমুকুল ও তরুক্ষীর উপদংশ (সিফিলিস) ক্ষতের নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। সুগন্ধ ও সুন্দর ফুলের জন্য এটি বাগানে ও মন্দিরের আশেপাশে লাগানো হয়। মূলের বাকলের রোগহর গুণাগুণ রয়েছে (Rahman et al., 2000)।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: ধর্মীয় উৎসবে পুষ্প ব্যবহার করা হয়। দুধ খেকো সাপ যেন দুধ খেতে না পারে এই বিশ্বাসে গোয়াল ঘরের পিছনে গাছটি লাগানো হয় (Rahman et al., 2000)।

আরো পড়ুন:  হাসনাহেনা মিষ্টি গন্ধযুক্ত শোভাবর্ধক উদ্ভিদ

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৬তম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ছোট কাঠগোলাপ প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে ছোট কাঠগোলাপ সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।[৩]

তথ্যসূত্র:

১. এম আতিকুর রহমান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৬ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২০২-২০৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

২. Kumar, V. and Subramaniam,, B. 1986 Chromosome Atlas of Flowering Plants of the Indian Subcontinent. Vol.1. Dicotyledons Botanical Survey of India, Calcutta. 464 pp.

 ৩. এম আতিকুর রহমান: প্রাগুক্ত, পৃ. ২০২-২০৩

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Patrice78500

Leave a Comment

error: Content is protected !!