ভূমিকা: পাদাউক বা রক্তচন্দন (বৈজ্ঞানিক নাম: Pterocarpus indicus ইংরেজি: Indian Beach, Poongan Oil Plant) হচ্ছে ফেবাসি পরিবারের টেরোকার্পাস গণের ঘন ডালপালা বিশিষ্ট উদ্যান বৃক্ষ।
বৈজ্ঞানিক নাম: Pterocarpus indicus Willd., Sp. Pl. 3: 904 (1802). সমনাম: Pterocarpus dalbergioides Roxb. (1832). ইংরেজি নাম: Andaman Red Wood. স্থানীয় নাম: পাদাউক, পাদাক, পাদুয়াক, রক্ত চন্দন।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae; বিভাগ: Angiosperms; অবিন্যাসিত: Edicots; অবিন্যাসিত: Rosids; বর্গ: Fabales; পরিবার: Fabaceae; গণ: Pterocarpus; প্রজাতি: Pterocarpus indicus.
পাদাউক গাছের বিবরণ:
পাদাউক বা রক্তচন্দন হচ্ছে উঁচু বৃক্ষ এবং এদের মসৃণ শাখা ঊর্ধ্বারোহী। গাছের পাতা ১৫ থেকে ২০ সেমি লম্বা। পত্রক ৫-৮ সেমি লম্বা ও পাতার পাদদেশ মসৃণ। গোলাকার বা ব-দ্বীপাকার, সর্বদা সরু হয়ে সূঁচালো অগ্রভাগে পরিণত হয়। প্রধান শিরা সুক্ষ্ম, সুস্পষ্ট।
ফুল প্রান্তীয় এবং কাক্ষিক প্যানিকলে ঘন বিন্যস্ত, সুক্ষ্ম ও বাদামি। রোমাবৃত, মঞ্জরীপত্র ২টি, রৈখিকাকার, আশুপাতী। বৃতি সুক্ষ্ম বাদামি-রুপালী রঙের ও লম্বায় ১-২ সেমি। রোমাবৃত বৃতির দন্তক গোলাকার, উপরের ২টি বেশ বড়। দলমন্ডল বৃতি থেকে লম্বা, আদর্শ পাপড়ি প্রশস্ত। পুংকেশর ১০টি, পরাগধানী সমাকৃতির। গর্ভদন্ড সূত্রবৎ, কন্টক বিহীন। পাদাউকের ফল পড আকৃতির। বর্তুলাকার, রুপালী, হলুদ, ১.৫ সেমি (প্রায়) লম্বা, রোমশ।
চাশাবাদ ও বংশ বিস্তার: পাদাউক মূলত পাহাড়ি অঞ্চল বা উঁচুভূমিতে ভালো জন্মে। তবে উদ্যান ও পথের পাশে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো হয়। ফুল ও ফল ধারণ মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে। এই গাছের বংশ বিস্তার হয় বীজ ও কলম করে।
বিস্তৃতি: পাদাউক মালয় পেনিনসুলার দেশসমূহে বিস্তৃত হলেও বাংলাদেশে জন্মে। ইহা চট্টগ্রাম এবং ঢাকা জেলায় রাজপথ বীথি হিসেবে দেখা যায় (Khan et al., 1996)। এই গাছ থেকে উন্নতমানের কাঠ পাওয়া যায়।
জাতিতাত্বিক ব্যবহার: ইহার ফল বমনোদ্রেককর। পাতার ক্বাথ জ্বরে ব্যবহৃত হয়।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৮ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) পাদাউক প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের কম পরিসরে রোপন করায় সংকটের কারণ দেখা যায় এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে পাদাউক সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে অঞ্চল ভিত্তিক সংরক্ষণ ব্যবস্থার পাশাপাশি বৃহৎ পরিসরে অধিক বনায়নের সুপারিশ করা।[১]
তথ্যসূত্র:
১. এ টি এম নাদেরুজ্জামান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৮ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা-১৬০। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।