জিয়াপুরা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়ার বৃক্ষ

বৃক্ষ

জিয়াপুরা

বৈজ্ঞানিক নাম: Putranjiva roxburghiiসমনাম: Drypetes roxburghii (Wall.) Hurusawa (1954). স্থানীয় নাম: জিয়াপুরা। 
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস 
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Malpighiales  পরিবার: Putranjivaceae গণ: Putranjiva প্রজাতি: Putranjiva roxburghii.

বর্ণনা:  চিরহরিৎ বৃক্ষ, প্রায় ১৫ মিটার উঁচু, বাকল মসৃণ, সাদা থেকে ফ্যাকাশে হলুদ, পল্লব হীরকাকার, খাঁজযুক্ত রোমশ, পত্র সোপপত্রিক, উপপত্র ১.৯-১.৫ মিমি লম্বা, আশুপাতী, সবৃন্তক, বৃন্ত ৩-৭ মিমি লম্বা, রোমশ বা রোমশ বিহীন, দ্বিসারী, পত্র ফলক উপবৃত্তাকার থেকে দীর্ঘায়ত উপবৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার-ভল্লাকার, ৩.৫-১৩.৫ x ১.৫- ৪.৫ সেমি, সূক্ষ্মাগ্র বা স্থূলাগ্র, নিম্নাংশ তির্যক, প্রান্ত দস্তুর, তরঙ্গায়িত, পৃষ্ঠীয় তল উজ্জ্বল, পার্শ্বীয় শিরা ১০-১৮ জোড়া। পুষ্প ছোট, হলুদ।

পুংপুষ্প: কাক্ষিক, গুচ্ছাকার মঞ্জরীতে বিন্যস্ত, বৃন্ত প্রায় ১.৫ মিমি লম্বা, বৃতিখন্ড ৫টি, ডিম্বাকার থেকে দীর্ঘায়ত, ০.৭-১.৫ x ০.৭-১.০ মিমি, রোমশ বিহীন, শুষ্ক ঝিল্লিযুক্ত, সামান্য সিলিয়াযুক্ত, পুংকেশর ২-৩টি কদাচিৎ ৪টি, পুংদন্ড ১.৫ মিমি লম্বা, মুক্ত, পরাগধানী ০.৫ মিমি লম্বা, অর্ধগোলাকার, সামান্য রোমশ।

স্ত্রীপুষ্প: একক বা একটি কক্ষে ৩টি পর্যন্ত বা কখনও ততোধিক, বৃন্ত ৫-৮ মিমি লম্বা, খাটো রোমযুক্ত, ফলে ২০ মিমি পর্যন্ত বর্ধিত, বৃতি ৩-৫ খন্ডিত, খন্ড ঋজু, অতিশয় অসম, ১.৪-২.৫ x ০.৫-১.০ মিমি, দীর্ঘায়ত থেকে বিভল্লাকার, গর্ভাশয় ৩ কোষী, ডিম্বাকার বা গোলাকার ব্যাস প্রায় ১.৫ মিমি, ঘন রোমাবৃত, প্রতিকোষে ডিম্বক ২টি, গর্ভদন্ড ২টি বা ৩টি, ৩ মিমি লম্বা, গর্ভমুন্ড বৃক্কাকার।

ফল: ১৫-২০ x ১২-১৫ মিমি, গোলাকার বা ডিম্বাকার, সাদা ঘন কোমল রোমাবৃত, ১ প্রকোষ্ঠী, ১ বীজী। বীজ ক্ষুদ্র, ০.৫ মিমি ব্যাস বিশিষ্ট, কুঞ্চিত।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: 2n = ৩৮ (Sarkar and Datta, 1980).

চাষাবাদ ও বংশ বিস্তার: গুল্ম জাতীয় এই উদ্ভিদটি ভূমি ও শুষ্কাঞ্চল জন্মে। বীজে বংশ বিস্তার। ফুল ও ফল ধারণ এপ্রিল-অক্টোবর।

বিস্তৃতি: আদিনিবাস হিমালয়ের পশ্চিম অঞ্চল থেকে শ্রীলংকা ও মায়ানমার। লাওস, কম্বোডিয়া, হংকং, ইন্দোনেশিয়া ও নিউগিনি ব্যাপী বিস্তৃত। বাংলাদেশে এটি চট্টগ্রাম, ঢাকা, ফরিদপুর এবং গাজিপুর জেলায় পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোপিত।

আরো পড়ুন:  থেচু লুসিয়াসি পরিবারের গারসিনিয়া গণের বাংলাদেশ ভারত মায়ানমারের বৃক্ষ

অর্থনৈতিক ব্যবহার/গুরুত্ব/ক্ষতিকর দিক: গাছটি শীতলতা দায়ী, কটুস্বাদযুক্ত, রেচক ও মূত্রবর্ধক এর দ্বারা পৈত্তিক সমস্যা, যন্ত্রণাপূর্ণ অনুভূতি ও গনোরিয়া চিকিৎিসা করা হয়। ফল পাতা ও বীজের ক্বাথ জ্বর ও সর্দি রোগে ব্যবহার করা হয় (Kirtikar et al., 1935)।

জাতিতাত্বিক ব্যবহার: থাইল্যান্ডে পাতা ও ফল থেকে বাত রোগের ওষুধ তৈরি হয় (Caius, 1998)। বীজ দ্বারা তজবি তৈরি হয়।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে  (আগস্ট ২০১০)  জিয়াপুরা প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এদের শীঘ্র কোনো সংকটের কারণ দেখা যায় না এবং বাংলাদেশে এটি আশঙ্কামুক্ত হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে জিয়াপুরা সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির বর্তমানে সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।   ।

তথ্যসূত্র:

১. রহমান, এম অলিউর (আগস্ট ২০১০)। অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৪৮৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Forestowlet

Leave a Comment

error: Content is protected !!