আসাল বাংলাদেশের বিরল বৃহৎ পর্ণমোচী বৃক্ষ

বৃক্ষ

আসাল

বৈজ্ঞানিক নাম: Terminalia alata Heyne ex Roth, Nov. Sp. Pl.: 379 (1871). সমনাম: Terminalia tomentosa (Roxb.) Wight et Arn. (1834). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: আসাল, আসনা, হাসনা, সাজ, সাই।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Edicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Myrtales পরিবার: Combretaceae গণ: Terminalia প্রজাতি: Terminalia alata Heyne ex Roth, Nov. Sp. Pl.: 379 (1871).

বর্ণনা: আসাল, আসনা, হাসনা, সাজ, সাই কমব্রেটাসি পরিবারের টারমিনালিয়া গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এরা বৃহৎ পর্ণমােচী বৃক্ষ। এরা ৩০ মিটার পর্যন্ত উঁচু, বাকল অমসৃণ, কালাে, গভীর চিড়যুক্ত, সারকাঠ শক্ত, গাঢ় লালচে বাদামী, বিটপ, তরুণপত্র ও পুষ্পবিন্যাস মরচে রােমশ। এদের পত্র চমবৎ, দীর্ঘায়ত থেকে ডিম্বাকার-দীর্ঘায়ত, বৃন্ত ০.৬২.০ সেমি লম্বা, মসৃণ, পত্র ফলক ১০-১৫ x ৫-১০ সেমি, সূক্ষ্মাগ্র, মূলীয় অংশ জুলা, প্রায়শ তির্যক, ঘন ক্ষুদ্র কোমল রােমাবৃত বা মসৃণ, মধ্যশিরার মূলীয় অংশে ১-২ টি গ্রন্থিবিদ্যমান, গ্রন্থি ১-৩ মিমি ব্যাস যুক্ত, শিরা সমান্তরাল, ১০-১৬ জোড়া।

আসালের পুষ্পবিন্যাস প্যানিকেল ৬-১৪ সেমি লম্বা। পুষ্প উভলিঙ্গ, সাদা বা ফ্যাকাশে হলুদাভ-সবুজ। বৃতি ফলক সরু পেয়ালাকার, খন্ড ৫টি, বহি: বা অন্তর্মুখী বক্র, প্রশস্ত ডিম্বাকার, সূক্ষাগ্র ১-২x৩-৪ মিমি, বহির্ভাগ রােমশ, অভ্যন্তর অতিরােমশ। পুংকেশর ৩-৪ মিমি লম্বা। গর্ভাশয় উপবৃত্তাকার, ১-২ মিমি লম্বা, গর্ভদন্ড ৩ মিমি লম্বা, চাকতি ঘন রােমশ। ফল একটি ৫ পক্ষল নাট, ৩-৫-৬.০ x ২.৫৫.০ সেমি, পক্ষ ০.৭ -২.০ সেমি লম্বা, চর্মবৎ, অক্ষ থেকে কিনারা পর্যন্ত অসংখ্য আণুভূমিক রেখা বিদ্যমান। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে।

ক্রোমোেসােম সংখ্যা: 2n = ১৪, ২৪ (Fedorov, 1969)।

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: মিশ্র পর্ণমােচী ও গর্জন অরণ্য। বংশ বিস্তার হয় বীজ দ্বারা। 

বিস্তৃতি: ভারত, মায়ানমার ও ইন্দোচীন। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও সিলেট জেলায় জন্মে।

আরো পড়ুন:  ফিলিপিনো হলুদ বাদাম দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃক্ষ

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: এদের কাঠ ভারী ও টেকসই এবং পালিশ যােগ্য। কাষ্ঠ বেশির ভাগ গৃহনির্মাণ, গরুর গাড়ি, চেঁকি, জাহাজ এবং নৌকা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় (Gamble, 1922) পানির মধ্যে ব্যবহারেও এর কোনো ক্ষতি হয় না (Nanakrou, 1985)।

সংরক্ষণ ও অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) আসাল প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, প্রজাতিটির সংকটের কারণ হচ্ছে আবাসভূমি ধ্বংস। বাংলাদেশে এটি সম্ভবত বিরল। বাংলাদেশে আসাল  সংরক্ষণের পদক্ষেপ নেই। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে যে এই প্রজাতিটির যথাস্থানে ও যথাস্থানের বাইরে সংরক্ষণ প্রয়ােজন।[১]

তথ্যসূত্র:

১. এম কে মিয়া, (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ(১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৪৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

Leave a Comment

error: Content is protected !!