ভূমিকা: ফিলিপিনো হলুদ বাদাম হচ্ছে কমব্রেটাসি পরিবারের টারমিনালিয়া গণের একটি সপুষ্পক বৃক্ষ।
বর্ণনা: এই প্রজাতিটি মধ্যম থেকে বৃহৎ আকৃতির বৃক্ষ, প্রায় ২৫ সেমি ঘের বিশিষ্ট, চূড়া সমতল, অধিমূল ছােট। পত্র চর্মবৎ বা অর্ধচর্মবৎ, ক্রমশ সরু হয়ে পত্রবৃন্তে পরিণত বা সরু বিডিম্বাকার থেকে সরু উপবৃত্তাকার, ৮-১৩ x ৩-৫ সেমি, মসৃণ, দীর্ঘা, মূলীয় অংশ কীলকাকার, বৃন্ত চাপা রােমশ থেকে রােমশ বিহীন, ১.৫-৪.০ সেমি লম্বা, পত্রমূলের কাছে। বা ফলকের মাঝামাঝি একজোড়া বিন্দুবৎ গ্রন্থি বিদ্যমান।
পুষ্পবিন্যাস অক্ষীয় স্পাইক, ৮-১৬ সেমি লম্বা, মঞ্জরী অক্ষ রােমশ। পুষ্প ১.০-১.৫ মিমি লম্বা। বৃতি ফিকে বাদামী হলুদ বা বাদামী রােমশ, খন্ড সম্মুখ বা পশ্চাৎ মুখী বক্র, ত্রিকোণাকার। পুংকেশর ৩-৪ মিমি লম্বা। গর্ভাশয় ত্রিকোণাকার, ১ মিমি, গর্ভদন্ড ৩.৫-৪.০ মিমি লম্বা, চাকতি খন্ডিত অতিরােমশ। ফল ২ পক্ষযুক্ত নাট, আকার আকৃতি পরিবর্তনশীল, সাধারণত ৪-৮ x ১.৫-৪.০ সেমি, ঘন থেকে স্বল্প রােমশ, পক্ষ প্রশস্ত অপেক্ষা দীর্ঘতর, ২-৪ x ১.৫-৩.০ সেমি। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে আগস্ট থেকে এপ্রিল মাসে।
আবাসস্থল ও চাষাবাদ: পর্ণমােচী ও নিচু অঞ্চলের অরণ্য। বীজে বংশ বিস্তার ঘটে।
বিস্তৃতি: মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয় পেনিনসুলা, ফিলিপাইন, সিলিবিস ও নিউগিনি। বাংলাদেশে ঢাকা শহরের রমনা পার্কে রােপণ করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: কাষ্ঠ টেকসই নয় কিন্তু দরজা জানলা ও আসবাবপত্র ভাল তৈরি করা যায়।
অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ৭ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) ফিলিপিনো হলুদ বাদাম প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, প্রজাতিটির সংকটের কারণ হচ্ছে সীমাবদ্ধ অবস্থান এবং বাংলাদেশে এটি সংকটাপন্ন (VU) হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে ফিলিপিনো হলুদ বাদাম সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে উদ্যানে বেশি করে চারা রােপণ করা প্রয়ােজন।[১]
তথ্যসূত্র:
১. এম কে মিয়া (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস” আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ৭ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২৫০-২৫১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।