চালতা বা চাইলতা বা চালিতা বা চাইলতে (বৈজ্ঞানিক নাম: Dillenia indica) আমাদের দেশে একটি অতি পরিচিত ফলজ ও ঔষধি ফল। বাংলাদেশ ভারতে চালতা দিয়ে আচার ও চাটনি প্রস্তুত করা হয়। এটি বাণিজ্যিক ফল হিসেবে বাজারে প্রচুর বিক্রি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চলে এই ফল প্রচুর পরিমাণে জন্মে থাকে। এছাড়াও শ্রীলংকা, মায়ানমার, কম্বোডিয়া ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ চীন ও মালয়েশিয়া অঞ্চলে চালতা গাছ জন্মে।
রোগ নিরাময়ে চালতা গাছের ব্যবহার:
১. জ্বর রোগে: ঠাণ্ডা লেগে জ্বর হলে পাকা চালতা ফলের রস ৩০ মি. লি., চিনি তিন চামচ ও পানি ৭০ মি. লি. পরিমান নিতে হবে। এই তিনটি উপাদান একসাথে মিশিয়ে দিনে একবার খেলে জ্বরের প্রকোপ নষ্ট হয়।
২. বাত সারাতে: বাত রোগে চালতার একটি কচি ছোট ফল বেটে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানির সাথে মিশিয়ে খেলে বাতের ব্যাথায় বেশ উপকার পাওয়া যায়। তবে ফল বাটার পর ৩০ গ্রাম মতো হতে হবে।
আরো পড়ুন: চালতা এশিয়ায় জন্মানো টক জাতীয় জনপ্রিয় ফল
৩. রক্ত আমাশয়: এই রোগ বা সমস্যা কারো হলে চালতা গাছের কচি টাটকা পাতা বেটে তার রস প্রায় ২০ মি. লি. পরিমাণ নিতে হবে; তারপর এক কাপ ঠাণ্ডা পানিতে সেই রস মিশিয়ে দিনে দু’বার খেলে রোগ থেকে উপমশ পাওয়া যাবে।
৪. শূল সমস্যা: এই রোগ দেখা দিলে চালতার পাকা ফল থেতো করে ২০ মি.লি রসে এক চামচ চিনি মিশিয়ে দিনে একবার করে খেলে শূল রোগ সেরে যায়।
৫. কফ, কাশি ও সর্দি সারাতে: এই সব রোগ হলে চালতা গাছের শুকনা ছালের গুঁড়া এক গ্রাম চিনি বা মিসরীর গুড়া এক চামচ, আধ কাপ সামান্য গরম পানি নিতে তাতে সব উপাদান মিশিয়ে দিনে একবার খেলে সর্দি, কাশি ও কফ নিরাময় হয়।
এছাড়াও চালতা দিয়ে নানা রকম মজাদার, সুস্বাদু খাবার বানানো যায়। টক ডাল রান্না করতে চালতার ব্যবহার করা যায়। আচার, জেলী ইত্যাদি খাবার তৈরি করা যায়।
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্রঃ
১. মাওলানা জাকির হোসাইন আজাদী: ‘গাছ-গাছড়ায় হাজার গুণ ও লতাপাতায় রোগ মুক্তি, সত্যকথা প্রকাশ, বাংলাবাজার, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ২০০৯, পৃষ্ঠা, ১৫৮-১৫৯।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।