জংলি বরই দক্ষিণ এশিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলের একটি ফল

বরইয়ের প্রজাতি

জংলি বরই

বৈজ্ঞানিক নাম: Ziziphus rugosa Lamk., Encycl. 3: 319 (1789). সমনাম: Ziziphus tomentosa Roxb. (1820). ইংরেজি নাম: জানা নেই। স্থানীয় নাম: জঙ্গলি বড়ই।
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Plantae বিভাগ: Angiosperms অবিন্যাসিত: Eudicots অবিন্যাসিত: Rosids বর্গ: Rosales পরিবার: Rhamnaceae গণ: Ziziphus প্রজাতির নাম: Ziziphus rugosa

ভূমিকা: জংলি বরই বা জঙ্গলি বড়ই ( বৈজ্ঞানিক নাম: Ziziphus rugosa) হচ্ছে রামনাসি পরিবারের জিজিফাস গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ প্রজাতি। এই প্রজাতিটি চিরহরিৎ বৃহৎ গুল্ম বা ছোট বৃক্ষ হয়ে থাকে।   

বর্ণনা: জঙ্গলি বরই বিক্ষিপ্ত ছড়ানো চিরহরিৎ বৃহৎ গুল্ম বা ছোট বৃক্ষ, প্রায় আরোহী। অপরিণত শাখাপ্রশাখা ঘনভাবে ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত।

পত্র সরল, একান্তর, বৃন্তক, ৬-১৫ সেমি লম্বা, অর্ধবর্তুলাকার থেকে উপবৃত্তাকার, অণুদস্তুর, শীর্ষ প্রায় গোলাকার, পাদদেশ তির্যক, উপরে মসৃণ, নিম্নে ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত। কন্টক সাধারণত একল, সংক্ষিপ্ত, গোড়া প্রশস্ত, পশ্চাৎ বক্র।

এদের পুষ্প ঘন রোমশ, লম্বা মঞ্জরীদন্ডবিশিষ্ট সাইম এ সজ্জিত, সাধারণত পত্রহীন শাখাপ্রশাখায় শীর্ষক প্যানিকল গঠন করে। বৃত্যংশ ৫টি, সূক্ষ্ম কোমল রোমাবৃত। পাপড়ি অনুপস্থিত। চাকতি ৫-খন্ডক, রোমশ। গর্ভাশয় ২ কোষী, গর্ভদন্ড ২টি, মধ্যভাগের নিচে যুক্ত। ফল ডুপ, বিডিম্বাকার বা গোলাকার, ১-বীজী। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাসে।

ক্রোমোসোম সংখ্যা: জানা নেই।

আবাসস্থল ও চাষাবাদ: পাহাড়ী বনাঞ্চল জন্মে থাকে। বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার হয়।

বিস্তৃতি: ভারত (বিহার ও আসাম), শ্রীলংকা এবং মায়ানমার। বাংলাদেশের সিলেট এবং চট্টগ্রাম বনাঞ্চলে এটি সহজলভ্য।

অর্থনৈতিক ব্যবহার ও গুরুত্ব: ফল ভক্ষণীয়। বাকল এবং পুষ্প ভেষজ (Sengupta and Safui, 1997). জাতিতাত্বিক ব্যবহার হিসেবে দেখা যায় স্থানীয় জনগণ ফল খায় এবং এই উদ্ভিদ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

অন্যান্য তথ্য: বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের ১০ম খণ্ডে (আগস্ট ২০১০) জঙ্গলি বড়ই প্রজাতিটির সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এটির সংকটের কারণ দেখা যায় এবং বাংলাদেশে এটি বিপন্ন হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে জঙ্গলি বড়ই সংরক্ষণের জন্য কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রজাতিটি সম্পর্কে প্রস্তাব করা হয়েছে এটি সংরক্ষণের জন্য এক্স-সিটু পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা উচিৎ।[১]

আরো পড়ুন:  কুল বা বরইয়ের বাইশটি ভেষজ গুণ ও ব্যবহার

তথ্যসূত্র:

১. এম. এ. হাসান (আগস্ট ২০১০)। “অ্যানজিওস্পার্মস ডাইকটিলিডনস”  আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; হাসান, মো আবুল; বেগম, জেড এন তাহমিদা; খন্দকার মনিরুজ্জামান। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ১০ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0

বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Dinesh Valke

Leave a Comment

error: Content is protected !!