পরিচিতি : সরু এবং লতা জাতীয় উদ্ভিদ। পাতা যুক্ত এবং কাণ্ডের দুদিকে জন্মায়। কিছুটা ডিম্বাকৃতির লম্বা এবং আগার দিকটা মোটা থাকে। ফলের বাইরের দিকের রং সবুজ আর ভেতরে বেগুনি। বীজ দেখতে ছোট ও চ্যাপ্টা। রং কালো হয়। গাছের পাতার মাঝখানে সাদা দাগ থাকে। বাংলাদেশের সর্বত্র বিশেষ করে উঁচু ভূমিতে জন্মে। ফুল ফুটে বর্ষায়। আর ফল পাকে আশ্বিন-পৌষ মাসে। এর শেকড় ক্রমশ সরু হয়ে মাটির এতো নিচে চলে যায় যে তার শেষ পাওয়া যায় না। এ জন্যই নাম হয়েছে অনন্তমূল লতা।
ব্যবহার্য অংশ ও ব্যবহার: শেকড় ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যৌবন থাকতেও যেন নেই, লাবণ্য কমতে শুরু করেছে এবং ক্ষুধা নেই। এরকম হলে অনন্তমূল লতা ভালো কাজ করে। এছাড়াও খোস পাঁচড়া, রক্ত দুষ্টি, একজিমা, চুলকানি, ব্রণ, শোথে, হাত পা জ্বালা ও কোষ্ঠকাঠিন্যে উপকারী। অনন্ত মূলের শিকড় গুঁড়া করে আধা কাপ গরম দুধ ও একটু মিশ্রির গুঁড়া মিশিয়ে খেলে স্বাস্থ্য অটুট থাকে। ক্ষুধা বাড়ে। হাত পায়ের জ্বালা থাকে না। মধুসহ খেলে আমাশয় ভালো উপকার পাওয়া যায় ও স্তনে দুধ বাড়ে।[১]
চাষাবাদ: বর্ষায় ফুল ফোটে। আশ্বিন পৌষ মাসে ফল পাকে। এ সময় চাষাবাদ করা যায়। এর মূল ক্রমশ সরু হয়ে মাটির অনেক নীচে চলে যায়। কোথায় শেষ পাওয়া যায় না। বোধ হয় সেজন্যই এর নাম হয়েছে অনন্তমূল ।
রাসায়নিক উপাদান: মূলের প্রধান উপাদান কুমারিন ও উদ্বায়ী তেল। তাছাড়াও এতে স্টেরল, টার্পিন, অ্যালকোহল, লুপিয়ল, স্যাপোনিন ও ট্যানিন বিদ্যমান।[২]
বিস্তৃতি: বাংলাদেশের সব জেলাতে কম বেশি দেখা গেলেও সুন্দরবন এলাকায় অনন্তমূল গাছ প্রচুর জন্মে। আমাদের দেশে উত্তর পশ্চিম অঞ্চলের শাল বনে এটি বেশি পাওয়া যায় । প্রজাতি সংখ্যা ১টি। আদিবাস ভারত।
তথ্যসূত্রঃ
১. শেখ সাদি; উদ্ভিদকোষ, দিব্যপ্রকাশ, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠা, ৩৮-৩৯।
২. এ বি এম জাওয়ায়ের হোসেন, ওষুধি গাছগাছড়া, গ্রন্থনা, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ ফাল্গুন ১৪১১, পৃষ্ঠা, ১৮-১৯।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি উইকিপিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোকচিত্রীর নাম: Paryavarana Margadarsi Vaisakhi
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।