Leptadenia গণে দুটি প্রজাতি পাওয়া যায় দক্ষিণ এশিয়ায়। যাতে নানা ভেষজ গুণাগুণ আছে। এদের মূলসহ পুরো গাছটি ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
জীবন্তী-র পরিচয়
Leptadenia reticulata: বহু শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট ক্ষুপজাতীয় অথচ লতানে গাছ। পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ সমীপবর্তী হিমাচল প্রদেশ, দাক্ষিণাত্যের ব-দ্বীপ অঞ্চলে, দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের কোথাও কোথাও এটি জন্মে। গাছের ডগা, কুঁড়ি ও ফুল সুস্বাদু শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি বর্ষাকালে জন্মে। পাতা অনেকটা অন্তমূল (Tylophora indica) পাতার মতো, ২/৩ ইঞ্চি লম্বা। কোমল পাতা হালকা রোমশ ও শ্বেতাভ। কাণ্ডের উভয়দিকে সমান্তরালভাবে পাতাগুলো থাকে। পাতার বোঁটা ও কাণ্ডের সংযোগস্থল থেকে বেরোয় পুষ্পদণ্ড এবং এই পুষ্পদণ্ডের মাথায় ছোট ছোট গুচ্ছাকৃতি ফুল হয়, ফুলের রঙ অনেকটা সবুজ আভাযুক্ত হলদে। ফল লম্বাকৃতি, শৃঙ্গাকার, লম্বায় ৩/৪ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এটিকে সংস্কৃতে জীবন্তী, শাকশ্রেষ্ঠা, পয়স্বিনী ; হিন্দীতে ডোডীশাক, ডোরী শাক, জীবন্তী ; গুজরাট অঞ্চলে দোডীশাক, ডোডীশাক বলা হয়। বোটানিক্যাল নাম Leptadenia reticulata, পরিবার-Aclepiadaceae. ঔষধার্থে ব্যবহার্য:—মূল ও সমগ্র গাছ।
Desmotrichum fimbriatum: এটি এক প্রকার পরগাছা। হিমালয় প্রদেশ, সিকিম, নীলগিরি, খাসিয়া পাহাড়, কঙ্কন, বর্মা, মালয় প্রভৃতি স্থানে এই পরগাছাটিকে গাছের উপর, বিশেষতঃ জাম গাছে হতে দেখা যায়। গাঁটযুক্ত শাখা-প্রশাখা অনেক। প্রায় গাছের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। পাতা লম্বাটে, ঈষৎ লাল রঙের। ফুল ছোট ছোট, হলদেটে সাদা রঙের, তাতে গন্ধ থাকে। বর্ষাকালে ফুল। হয়। গাছ শুকোলে অনেকটা শুকনাে খড়ের মত দেখায়।
এটিকে সংস্কৃতে ও বাংলায় জীবন্তী, হিন্দীতে জিবসাগ বলা হয়। এটির বোটানিক্যাল Desmotrichum fimbriatum; পূর্বে এর নাম ছিল Dendrobium macraei, ফ্যামিলী Orchidaceae. ঔষধার্থে ব্যবহার্য :– সমগ্র পরগাছাটি।
ভেষজ গুণাগুণ
Leptadenia reticulate: মূল/সমগ্র গাছ বাতপিত্তনাশক, ত্রিদোষহর, লঘু, মধুর, শীতল, গ্রাহী, অনুলোমন, বল্য, বৃষ্য, রসায়ন, পিচ্ছিল, জীবনীয়, হৃদ্য, মূত্রল, স্নেহন, স্তন্যকারক, কফনিঃসারক, রক্তপিত্তশামক, শ্বাস-কাস-হর, জ্বরঘু, দাহপ্রশমন, উত্তেজক, ক্ষয়নাশক, ভগ্ন স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারকারক (restorative), দৃষ্টিশক্তিবর্ধক, রাত্ৰান্ধনাশক; ব্রণ, শোষ, অতিসার, যক্ষ্মা, বিষদোষ, গ্রহণী, বিষ্টম্ভ, শুক্রমেহ, পূমেহ, মূত্রদাহ, মূত্রকৃচ্ছ, পৈত্তিক শোথ (লেপ) প্রভৃতিতে ব্যবহার্য। গাছ কখনো কখনো নাক ও কানের রোগ সারাতে ব্যবহৃত হয়। পাতা ও মূল ঘা ও চর্মরোগে ব্যবহার্য। মূল ও পাতার এলকোহলিক এক্সট্রাক্টের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ানাশক ক্ষমতা রয়েছে। গাছের ডাঁটা ও মূলের মধ্যে কয়েকটি স্টেরোল আছে। পৌনঃপুনিক। গর্ভপাত (habitual abortion) চিকিৎসার ক্ষেত্রে সমগ্র গাছ ব্যবহার্য।
Desmotrichum fimbriatum: সমগ্র গাছ মধুর, শীতল, স্নেহন, লঘু, বল্য, বৃষ্য, রসায়ন, উত্তেজক, পিচ্ছিল, ত্রিদোষনাশক। এটি শ্বাস, কাস, জ্বর, দাহ, ক্ষয়, গলরোগ, চক্ষুরোগ, রক্তবিকার, ধাতুদৌর্বল্য প্রভৃতিতে ব্যবহার্য। সর্পদংশন চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়ে থাকে।
CHEMICAL COMPOSITION
1. Leptadenia reticulata wight & Arn. Stems and roots contain: waxy material (long chain aliphatic esters), a colourless crystalline substance m.p. 115°, sterols (stigmasterol and y-sitosterol). Tuber contains: an inulin type fructosan.
2. Desmotrichum fimbriatum Blume Stems & roots contain: alkaloid (Jibantine) and acids (a-jibantic acid and B-jibantic acid).
সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্রঃ
১. আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য: চিরঞ্জীব বনৌষধি খন্ড ৯, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ ১৪০৫, পৃষ্ঠা, ২০৯-২১১।
বি. দ্র: ব্যবহৃত ছবি flowersofindia.net থেকে নেওয়া হয়েছে এবং প্রজাতির নাম Leptadenia reticulata। আলোকচিত্রীর নাম: S. Kasim
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।