লুইস হেনরী মর্গান বা লিউস হেনরি মরগান (ইংরেজি: Lewis Henry Morgan; ২১ নভেম্বর, ১৮১৮ – ১৭ ডিসেম্বর, ১৮৮১ খ্রি.) আমেরিকার একজন বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ও নৃতাত্ত্বিক ছিলেন। তাঁর ‘এ্যানসিয়েন্ট সোসাইটি’ বা ‘প্রাচীন সমাজ’ সমাজ বিকাশের গবেষণায় এক মৌলিক গ্রন্থ। এই গ্রন্থে মর্গান আমেরিকার আদিম অদিবাসীদের জীবন যাত্রার উপর বিপুল পরিমাণ তথ্যাদি সংগ্রহ করে তার বিশ্লেষণ উপস্থিত করেন। এই তথ্যের গবেষণায় তিনি আমেরিকার আদিম অধিবাসীদের মধ্যে প্রাচীন সাম্যবাদী জীবনের রেশ আবিষ্কার করেন।
লুইস হেনরী মর্গান শ্রেণীসমাজের পূর্বকার অবস্থার বিকাশকে যুগপর্যায়ে বিভক্ত করে দেখাবার চেষ্টা করেন। সে যুগ বিভাগ আজ অত স্বীকৃত না হলেও তাঁর এ তত্ত্ব স্বীকৃত যে, মানুষের জীবনের ইতিহাসে পরিবারের যে একক, তা চিরদিন ছিল না। বিকাশের একটা ঐতিহাসিক পর্যায়েই পরিবারের উদ্ভব ঘটেছে। এবং পরে আবার ইতিহাসের গতিপথে তার বিবর্তন ঘটেছে।
বস্তুত লুইস হেনরী মর্গান মানুষের সমাজের বিকাশের একটি বস্তুবাদী এবং ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা উপস্থিত করেছেন। এক্ষেত্রে ঐতিহাসিক বস্তুবাদের প্রতিষ্ঠাতা কার্ল মার্কস ও এঙ্গেলস তাঁর অবদান স্বীকার করে বলেছেন যে, মর্গানের বৈশিষ্ট্য এখানে যে, মর্গান নিজের গবেষণার মাধ্যমে ঐতিহাসিক বস্তুবাদকে যেন পুনরায় আবিষ্কার করেছেন। এঙ্গেলস তার ‘পরিবার ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং রাষ্ট্রের উৎপত্তি’ শীর্ষক সুবিখ্যাত গ্রন্থে হেনরী মর্গানের ‘এ্যানসিয়েন্ট সোসাইটি’র তথ্যসমূহকে কৃতজ্ঞতার সহিত ব্যবহার করেছেন এবং তার মার্কসীয় ব্যাখ্যা পেশ করেছেন।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ২৮৮-২৮৯।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।