সুবোধ পুরকায়স্থ জন্মেছেন ১৯০৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। আদিবাড়ি ও জমিদারি ছিল শ্রীহট্টে। শৈশব থেকেই বাড়িতে পেয়েছিলেন গানের পরিবেশ। লেখাপড়া করেন কুমিল্লা জেলা স্কুল ও কলকাতার সেন্ট পলস কলেজে। স্নাতকোত্তর বিদ্যাচর্চা শুরু করেও শেষ করেননি কেননা সংগীতজগৎ তাকে গভীরতর আকর্ষণে টানে।
বাল্যবয়স থেকেই গান ও কবিতা রচনার সূচনা স্বতঃস্ফূর্তভাবে। সঙ্গী ছিলেন বিখ্যাত সুরকার সতীর্থ হিমাংশু দত্ত সুরসাগর। দুজনের সমন্বয়ের সূচনা ১৯২৪ সাল নাগাদ। পরবর্তীকালে তাদের সংযোগ থেকে সাধিত গানের জনপ্রিয়তা প্রবল হয়। চলচ্চিত্রেও গান লেখেন। অবসরে ছড়া ও কবিতা রচনা চলে। শচীন দেববর্মণের সঙ্গে বন্ধুত্ব তার সৃজনের নতুন দরজা খুলে দেয়।
খুব অল্প সময়ে বিখ্যাত কিছু কালজয়ী গানের সৃষ্টি করে ছিলেন । যেমন – “তব স্মরণখানি “, “চাঁদ কহে চামেলি গো”, “হৃদয় কাহারে যেন চেয়েছিল ” ,” সেদিন নীশিথে বরিষণ শেষে “, “মেনেছি গো হার মেনেছি”, ” তুমি যারে চাও জানি “,……আরো অসাধারণ কিছু গানের রচয়িতা ছিলেন তিনি ।
সুবোধ পুরকায়স্থ ছিলেন অভিমানী ও মর্যাদাবান শিল্পী। আগে গ্রামোফোন রেকর্ডের লেবেলে গীতকারের নাম মুদ্রিত হত না। তার একক দাবিতে, বলতে গেলে, রেকর্ডে গীতিকারদের নাম ছাপা শুরু হয় । যশস্বী ও জনপ্রিয় এই গীতকার ১৯৫০ সালে এইচ, এম. ভি.-র সঙ্গে মনোমালিন্যে জড়িয়ে পড়েন ও মেনে নেন স্বনির্বাসন। বালি জুট মিলে অতঃপর তিরিশ বছর চাকরি করে ১৯৮২ সালে অবসর নেন। ১৯৮৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তার প্রয়াণ ঘটে। তার বিপুলসংখ্যক গানের সঞ্চয় আছে বাংলা গীতসাহিত্যে যা আমাদের জন্য গর্বের বস্তু। সম্প্রতি সেগুলি সংকলিত হচ্ছে ।
তথ্যসূত্র:
১. সুধীর চক্রবর্তী সম্পাদিত আধুনিক বাংলা গান, প্যাপিরাস, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১ বৈশাখ ১৩৯৪, পৃষ্ঠা, ১৮৩-১৮৪।
জন্ম ৮ জানুয়ারি ১৯৮৯। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আনন্দমোহন কলেজ থেকে বিএ সম্মান ও এমএ পাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ “স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে যৌথ খামারে” এবং যুগ্মভাবে সম্পাদিত বই “শাহেরা খাতুন স্মারক গ্রন্থ”। বিভিন্ন সাময়িকীতে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে রোদ্দুরে ডট কমের সম্পাদক।