কুলেখাড়া এশিয়া ও আরিকার ভেষজ গুণাগুণ সম্পন্ন একটি শাক

কুলেখাড়া বা গোকুলকাঁটা (বৈজ্ঞানিক নাম: Hygrophila auriculata) একান্থাসি পরিবারের হাইগ্রোফিলা গণের একটি একবর্ষজীবী, খাড়া, শাখাবিহীন বীরুৎ। প্রথমদিকে গাছে কোনো কাঁটা হয় না; আশ্বিন-কার্তিকের পর থেকে পাতার গোড়া থেকে কাঁটা বেরোয়, ক্ষুপ জাতীয় গাছ, একে চলতি কথায় কুলেখাড়ার গাছ,আরো পড়ুন

তেলাকুচা বাংলাদেশ ভারতের সুলভ ঔষধি লতা

তেলাকুচা হচ্ছে কিউকারবিটাসি (শসা লাউ) পরিবারের সিট্রালাস গণের একটি বহুবর্ষজীবী আরোহী বীরুৎ। এদের কাণ্ড নরম ও দূর্বল, আকর্ষীযুক্ত কোনাকার। আরো পড়ুন

বড় ছাতিম এশিয়ার চিরহরিৎ, পর্ণমোচী বনাঞ্চলে জন্মানো ঔষধি বৃক্ষ

বড় ছাতিম (বৈজ্ঞানিক নাম: Alstonia scholaris) এপোসিনাসি পরিবারের এলস্টোনিয়া গণের বৃহৎ ও চিরসবুজ বৃক্ষ। আরো পড়ুন

হেলেঞ্চা শাক ভারত বাংলাদেশের সহজলভ্য ঔষধি শাক

হেলেঞ্চা একটি জলজ শাক। হেলেঞ্চা গাছ ৩০-৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এদের কান্ডে বহু শাখা থাকে। কান্ডের প্রতিটি গাঁট থেকে শিকড় বের হয়। আরো পড়ুন

বাংলাদেশ ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার সহজলভ্য নয়ন মোহিনী দশটি ফুল

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় সহজলভ্য দশটি সুন্দর ফুল সম্পর্কে এখানে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হচ্ছে। ফুলগুলি হচ্ছে সূর্যমুখী, ফরাসী গাঁদা, রক্তজবা, বাঁধা গোলাপ, বড় বাগানবিলাস, গাঢ় লাল বোতল ব্রাশ, বড় চামেলি, পাতি অলকনন্দা, নয়নতারা, লালীগুরান ফুল। এই ফুল দশটি দেখতে দারুণ মনোহর। ফুলগুলো আলংকারিক এবং সহজে গাছ তৈরি করা যায়, বাগানে চাষ করা যায়। ফুলে গৃহের চারদিকে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ফুলগুলো আপনাদের মনকে প্রফুল্ল করুক, সেই কামনায়। যারা ছবিগুলো তুলেছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এই ফুলগুলোর ভেতরে লালীগুরান ও নয়নতারার রয়েছে ঔষধি গুণাবলি।

১. সূর্যমুখী: সূর্যমুখী বা পাতি সূর্যমুখী (বৈজ্ঞানিক নাম: Helianthus annuus ইংরেজি: Common Sunflower) এস্টারেসি  পরিবারের হেলিয়ান্থুস গণের বিরুৎ। সূর্যমুখী লম্বা রোমশ, বর্ষজীবী, উচ্চতা ১৮০ সেমি বা ততোধিক হয়। সারা বৎসর জুড়ে ফুল ফোটে। পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশে উদ্ভিদটি প্রধানত সৌন্দর্য বর্ধক উদ্ভিদ রূপে বাগানে আবাদ করা হয়, কিন্তু ইদানিং উদ্ভিদটি (ভোজ্য) তেল উৎপাদনক্ষম হিসেবে জমিতে আবাদ করা হচ্ছে।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: সূর্যমুখী সূর্যমুখী বাণিজ্যিক তেলজাতীয় খাদ্য শস্য

সূর্যমুখী ফুল, আলোকচিত্র: Vengolis

২. ফরাসি গাঁদা (বৈজ্ঞানিক নাম: Tagetes patula, ইংরেজি: French Marigold) এস্টারেসি পরিবারের টাগেটেস গণের গুল্ম।  এটি  অনেকে প্রতিষ্ঠানে বা গৃহের শোভাবর্ধনের জন্য লাগিয়ে থাকে। এই ফুল ঋজু, সভঙ্গ, রোমশ, একবর্ষজীবী বীরুৎ, অনূর্ধ্ব ৮০ সেমি বা ততোধিক উঁচু হয়।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: ফরাসী গাঁদা

ফরাসি গাঁদা, আলোকচিত্র: Adityamadhav83

৩. রক্তজবা (বৈজ্ঞানিক নাম: Hibiscus rosa-sinensis) মালভেসি পরিবারের হিবিস্কাস গণের একটি ছোট বৃক্ষ। রক্তজবা গাছ টি ২-৪ মি. উঁচু, কাণ্ড খসখসে, পাতা মসৃণ ও চকচকে, ফুল ১০-১৫ সে. মি. চওড়া। ফুল এক ক অথবা দ্বৈত। গাছটি কষ্টসহিষ্ণু, অল্প যত্নে জন্মে। শাখা কলম দ্বারা এর বংশ বিস্তার হয়। প্রায় সারা বছরই গাছে ফুল ফোটে। বর্তমানে অনেক ধরনের হাইব্রীড জবার অস্তিত্ব পাওয়া যায় এবং সেগুলোর মধ্যে বর্ণবৈচিত্র প্রচুর। দেখতে সুদৃশ্য হওয়াতে এদেরকে আমরা সাধারণত বাগানে শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসাবে লালন করে থাকি।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: রক্তজবা একটি জনপ্রিয় আলংকারিক ফুলগাছ

রক্ত জবার ফুল ও পাতা, আলোকচিত্র: Judgefloro. CC-BY-SA-4.0

৪. বাঁধা গোলাপ (বৈজ্ঞানিক নাম: Rosa centifolia, ইংরেজি: Cabbage Rose, Moss or Provence Rose) হচ্ছে রোজেসি পরিবারের রোজ গণের  একটি সপুষ্পক গুল্ম। এটিকে বাংলাদেশে আলংকারিক উদ্ভিদ হিসেবে বাগানে বা গৃহে চাষাবাদ করা হয়। এই গুল্মটি বাড়ির টবে বা বাগানের শোভাবর্ধন করে।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: বাঁধা গোলাপ বিশ্বব্যাপী বাগান ও টবের সহজলভ্য আলংকারিক ফুল

বান্ধা গোলাপ, আলোকচিত্র: Joydeep

৫. বড় বাগান বিলাস (বৈজ্ঞানিক নাম: Bougainvillea spectabilis) (ইংরেজি: Paper Flower বা great bougainvillea) হচ্ছে নিকটাগিনাসি পরিবারের বোগেনভিলিয়া গণের  একটি সপুষ্পক লতানো গুল্ম। এদেরকে বাংলাদেশ ও ভারতে সুদৃশ্য আলংকারিক উদ্ভিদ হিসেবে বাগানে বা গৃহে চাষাবাদ করা হয়।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: বড় বাগান বিলাস শোভাবর্ধক আলংকরিক ফুল

বড় বাগানবিলাস, আলোকচিত্র: Alex Lomas

৬. গাঢ় লাল বোতল ব্রাশ (বৈজ্ঞানিক নাম: Melaleuca citrinus, ইংরেজি নাম: Red Bottle Brush) হচ্ছে এ্যানোনেসি পরিবারের  মেলালুকা গণের একটি সপুষ্পক গুল্ম বা বৃক্ষ। এই উদ্ভিদ অনেকে বাড়ির বাগানের শোভাবর্ধন করার জন্য লাগিয়ে থাকে। এদের পল্লব সরু এবং ঝুলন্ত, বাকল ধূসরাভ বাদামী, অত্যন্ত রুক্ষ। জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর মাসে এদের ফুল ফোটে।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: গাঢ় লাল বোতল ব্রাশ শোভাবর্ধক ছোট আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ

গাড় লাল বোতলব্রাশ, আলোকচিত্র: S.G.S.

৭. চামেলি বা বড় চামেলি (বৈজ্ঞানিক নাম: Jasminum grandiflorum   ইংরেজি: Catalonian Jasmine বা Spanish Jasmine) হচ্ছে ওলিয়াসি পরিবারের Jasminum গণের লতানো বা অর্ধলতানো গুল্ম। চামেলি মসৃণ পত্রঝরা গুল্ম। এটি লম্বায় ২ থেকে ৪ মিটার ও উপশাখাগুলো বৃত্তাকার, কোণীয় বা খাঁজকাটা হয়। জুন থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে এর ফুল ও ফল ধরে।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: চামেলি গ্রীষ্ম প্রধান দেশের সুগন্ধি ফুল

বড় চামেলী, আলোকচিত্র: Adityamadhav83

৮. পাতি অলকনন্দা বা হারকাকরা (প্রজাতি: Allamanda cathartica ইংরেজি নাম golden trumpet, common trumpetvine, বা yellow allamanda)  এপোসিনাসি পরিবারের অ্যালামান্ডা গণের একটি সপুষ্পক চিরহরিৎ, আরোহী গুল্ম। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে সারা বৎসর। বংশ বিস্তার হয় বীজ এবং কাণ্ডের কাটিং দ্বারা।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: পাতি অলকনন্দা গ্রীষ্মমণ্ডলের শোভাবর্ধনকারী গাছ

পাতি অলকনন্দা, আলোকচিত্র: বিশ্বরূপ গাঙ্গুলি

৯. নয়নতারা (বৈজ্ঞানিক নাম: Catharanthus roseus ইংরেজি নাম: Madagascar periwinkle, rose periwinkle, or rosy periwinkle) এপোসিনাসি পরিবারের ক্যাথারান্থুস গণের একটি বহুবর্ষজীবী বীরুৎ বা উপ-গুল্ম। এদেরকে সাধারণত বাগানের আলংকারিক উদ্ভিদ হিসেবে টবে বা বাগানে রোপণ করা হয়। ফুল ও ফল ধারণ ঘটে প্রায় সারা বৎসর ধরে।

মূল প্রবন্ধ পড়ুন: নয়নতারা এপোসিনাসি পরিবারের একটি আলংকারিক ফুল

নয়নতারা, আলোকচিত্র: Biswarup Ganguly

১০. লালী গুরাঁস বা রডোড্রেনড্রন (বৈজ্ঞানিক নাম: Rhododendron arboreum, ইংরেজি নাম: Tree rhododendron, burans বা gurans) এদেরকে ভুটান, চীন, ভারত, মায়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং থাইল্যান্ডে পাওয়া যায়। ফুলটি হিমালয়ের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এবং বাংলার দার্জিলিং-এ জন্মে। লালীগুরাঁস নেপালের জাতীয় ফুল। লালীগুরান এতোই লাল যে যখন গাছে ফুল ফোটে তখন চোখ ফেরানো যায় না।

রডোডেনড্রন ফুল, নেপালের জাতীয় ফুল, আলোকচিত্র: দোলন প্রভা

বাগান তৈরি করুন, দেহ ও মনকে প্রফুল্ল রাখুন, আশপাশের পরিবেশটাকে বদলে দিন।

মহুয়া সাপোটাসি পরিবারের মধুকা গণের ভারতবর্ষ ও এশিয়ার চিরসবুজ বৃক্ষ

বিবরণ: ধারনা করা হয় মহুয়ার আদিবাস ভারতবর্ষে। মহুয়া প্রায় ২০ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট এভারগ্রীন বা সেমিএভারগ্রীন খরা প্রতিরোধী ট্রপিকাল/গ্রীষ্মমন্ডলীয় বৃক্ষ। এর পাতা মোটা এবং লেদারি। ফুল ছোট, সুগন্ধযুক্ত এবং শাখার মাথায় গুচ্ছাকারে ফোটে, রঙ ঈষৎ হলুদ বা ডাল হোয়াইট। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর বলে মহুয়া ফুল আদিবাসীদের কাছে খুব প্রিয়। মহুয়া গাছের কালচারাল এবং ইকোনোমিক মূল্যও যথেষ্ট। Antheraea paphia নামীয় মথ মহুয়ার পাতা খেয়ে তসর সিল্ক tassar silk তৈরী করে যার বাণিজ্যিক মূল্য প্রচুর। মহুয়া একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এগ্রোফরেস্ট্রি স্পিসিস। মহুয়ার শিকড় বিস্তৃত বিধায় সহজেই ভূমিক্ষয় রোধ করতে পারে। মহুয়া তীব্রগন্ধী ফুল এবং ফেব্রুয়ারী-এপ্রিলে ফুটে থাকে। মহুয়ার ফল জুলাই–অগাস্টে পাওয়া যায় । ফলের পাল্প মিষ্টি এবং কার্বোহাইড্রেটের একটি ভালো উৎস। কাঁচা মহুয়া সবুজ এবং পাকলে কমলা বা লালচে হলুদ হয়। আরো পড়ুন

বুদ্ধনারকেল বাংলাদেশের সংরক্ষিত দৃষ্টিনন্দন বিশালাকারের উঁচু বৃক্ষ

বুদ্ধনারকেল বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল ৪ অনুযায়ী একটি সংরক্ষিত উদ্ভিদ। এটি ফুল কিংবা ফলের জন্য নয়, তার আঙ্গিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই বিখ্যাত। গাছের কাণ্ড বেশ বড়, গোলাকার এবং বহু শাখা-প্রশাখা সত্ত্বেও যথেষ্ট বলিষ্ঠ। শাখা-প্রশাখাগুলো ততটা লম্বা নয়, অনেকটা বিক্ষিপ্ত ধরনের। আরো পড়ুন

বাংলাদেশের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে মূলত আগ্রাসি বহিরাগত প্রজাতির গাছ

বাংলাদেশে বিদেশি প্রজাতির গাছ অহরহ রোপন করা হয়, এবং সাম্প্রতিককালে এসব গাছের প্রজাতিকে ক্ষতিকর গাছ হিসেবে বলা হচ্ছে। বাংলাদেশে যেসব আগ্রাসি, ক্ষতিকর, নিষিদ্ধ, পরিবেশবিধ্বংসি গাছ লাগানো হয় তা দেশের ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনছে। বাংলাদেশের জীববৈচিত্রের অর্ধেক প্রজাতিই আগামী দশকের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। দেশের পরিবেশ ধ্বংস করে পাহাড়ে ও সমভূমিতে এসব আগ্রাসি প্রজাতির বিদেশি … Read more

error: Content is protected !!