আলাপ
বার্ষিক
তবে কি নাছােড়বান্দা ফাল্গুন, কমরেড?
বসন্ত বিজ্ঞপ্তি আঁটে ঘূর্ণিফল গাছে;
পর্দায় সর্দার হাওয়া কসরৎ দেখায়।
আকাশে অসংখ্য টর্চ; মেঘেরা ফেরার—
গােলদীঘির গর্তে চাঁদ ধরা পড়ে গেছে।
বসন্ত সত্যিই আসবে? কী দরকার এসে?
বছর-বছর দেখা দিয়েছে সে ক্যাম্বেলের ভিড়ে
পণ্ডশ্রম
অনেকদিন খিদিরপুব ডকের অঞ্চলে
কাব্যকে খুঁজেছি প্রায় গােরু-খোঁজা করে
নীলাকাশে, অন্ধকারে গৈরিক নদীতে;
তারপর আত্মহারা অধিক রাত্রিতে
যখনি দিয়েছি সাড়া যে-কারো ইঙ্গিতে
তখনি পিছন থেকে বলেছে বিদায়
ভগ্নমনে সচ্চরিত্র গুপ্তচর কোনো।
পণ্ডিতমূর্খ
লেনিন, এঙ্গেলস, মার্কস নখাগ্রে আমার
উত্তরাধিকার সূত্রে অন্যতম নেতা।
লক্ষ্য বড়ো; ধরি তাই মহাত্মার ধামা;
আনন্দ-ভবনে খুঁজি মুক্তির উপায়,
প্রতিদ্বন্দ্বী, ঠাণ্ডা করে দিয়েছি কেমন!
এবার বিধ্বস্ত চীন মন্দ লাগবে না;
ভারতবর্ষে বিপ্লবের দেরি নেই আর।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৯ – ৮ জুলাই ২০০৩) ছিলেন বিশ শতকের উল্লেখযোগ্য বাঙালি বামপন্থী কবি ও গদ্যকার। তিনি কবি হিসেবে খ্যাতিমান হলেও ছড়া, প্রতিবেদন, ভ্রমণসাহিত্য, অর্থনীতিমূলক রচনা, অনুবাদ, কবিতা সম্পর্কিত আলোচনা, উপন্যাস, জীবনী, শিশু ও কিশোর সাহিত্য ইত্যাদি রচনাতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। সম্পাদনা করেছেন একাধিক গ্রন্থ এবং বহু দেশি-বিদেশি কবিতা বাংলায় অনুবাদও করেছেন। “প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য় এসে গেছে ধ্বংসের বার্তা” বা “ফুল ফুটুক না ফুটুক/আজ বসন্ত” প্রভৃতি তাঁর অমর পঙক্তি বাংলায় আজ প্রবাদতুল্য।