যুবক

সভাপতি মাও সে-তুঙের উদ্ধৃতি

৩০. যুবক

*** পৃথিবী তোমাদের এবং আমাদেরও, কিন্তু অবশেষে তোমাদেরই। তোমরা যুবক, সজীব ও প্রাণশক্তিতে উচ্ছল, জীবনের স্ফুটনোন্মুখ অবস্থায়, সকালবেলার আট-ন’টার সূর্যের মতো। তোমাদের উপরেই আশা রাখি। … … … … …

পৃথিবী তোমাদেরই। চিনের ভবিষ্যতও তোমাদের। “মস্কোতে চীনা ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষানবিশিদের সাক্ষাতদানকালে প্রদত্ত ভাষণ” (১৭ নভেম্বর, ১৯৫৭)

*** সমস্ত যুবকদেরকে এটা বুঝতে দেওয়া প্রয়োজন যে, আমাদের দেশ এখনও অত্যন্ত দরিদ্র এবং অল্প সময়ের মধ্যে এ অবস্থার আমূল পরিবর্তন অসম্ভব। একমাত্র যুবকদের এবং সমস্ত জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম ও তাঁদের স্বহস্তের কাজই কয়েক দশকের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী রাষ্ট্রকে গড়ে তুলতে পারে। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ভবিষ্যতের আদর্শ জগতে পৌছার জন্য আমাদের পথ খুলে দিয়েছে, কিন্তু ভবিষ্যতের এ আদর্শ জগতকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য আমাদের কঠোর শ্রমের উপর নির্ভর করতে হবে। “জনগণের ভেতরকার দ্বন্দ্বের সঠিক মীমাংসার সমস্যা সম্পর্কে” (২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭)

*** বেশ কিছু সংখ্যক যুবক তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অভিজ্ঞতার অভাবের কারণে পুরনো ও নয়া চীনের তুলনা করতে নিপুণ নয়, সাম্রাজ্যবাদী ও কুওমিনতাং প্রতিক্রিয়াশীলদের অত্যাচার থেকে নিজেদের মুক্ত করার জন্য আমাদের জনগণকে যে কত কঠিন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল, আর একটা সুষ্ঠু সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য যে কত দীর্ঘকালের কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন হবে, তা গভীরভাবে উপলব্ধি করা তাদের পক্ষে সহজ নয়। অতএব, জনসাধারণের মধ্যে সজীব ও কার্যকরী রাজনৈতিক শিক্ষা অবিরামভাবে চালিয়ে যাওয়া উচিত এবং যেসব বাধা-বিপত্তির উদ্ভব হয়েছে, তা তাদের কাছে সব সময়েই সত্যি সত্যি ব্যাখ্যা করতে হবে আর কি করে এ সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করা যায়, সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। ঐ

*** যুবকরাই হচ্ছে গোটা সমাজের সবচেয়ে সক্রিয় আর সবচেয়ে সজীব শক্তি। শিক্ষা গ্রহণে তারা সবচেয়ে বেশি আগ্রহশীল আর তাদের চিন্তাধারা সবচেয়ে কম রক্ষণশীল, সমাজতান্ত্রিক যুগে এ কথাটা বিশেষরূপে সত্য। আমরা আশা করি, বিভিন্ন স্থানের পার্টি সংগঠনগুলো স্থানীয় যুব সংগঠনকে সাহায্য করবে, তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করবে এবং কেমন করে যুবশক্তিকে বিশেষভাবে পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়, এই প্রশ্নটিকে বিচার করার প্রতি মনোযোগ দেবে, তাদেরকে সাধারণ লোক হিসেবে দেখা কিংবা তাদের বৈশিষ্ট্যগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। অবশ্যই, বৃদ্ধ ও প্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকে যুবকদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, বিভিন্ন হিতকর কাজ করার পূর্বে যুবকদের যথাসম্ভব বৃদ্ধ ও প্রাপ্ত বয়স্কদের সম্মতি নিতে হবে। “চুংসান জেলার সিনপিং থানার নবম কৃষি উৎপাদন সমবায় সমিতির যুব অগ্রণীদল”-এর ভূমিকালিপি (১৯৫৫)

আরো পড়ুন:  কেডার

*** একজন যুবক বিপ্লবী কি না, তা বিচার করতে কীরূপ মানদণ্ড ব্যবহার করা উচিত? কেমন করে পার্থক্য করা যায়? কেবল একটা মাত্র মানদণ্ড আছে, তা হচ্ছে সে নিজেকে ব্যাপক শ্রমিক-কৃষক-সাধারণের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলতে ইচ্ছুক কি না এবং বাস্তবে তা করছে কি না। যদি এমন এমন করতে ইচ্ছুক থাকে এবং বাস্তবে শ্রমিক ও কৃষকদের সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে সে একজন বিপ্লবী; অন্যথায় অবিপ্লবী অথবা প্রতিবিপ্লবী। যদি আজ সে নিজেকে শ্রমিক-কৃষকসাধারণের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলে, তাহলে আজই সে বিপ্লবী; কিন্তু আগামী কাল যদি সে তাদের সঙ্গে না মিশে অথবা উল্টো সাধারণ জনগণকে অত্যাচার করে, তাহলে সে হবে অবিপ্লবী বা প্রতিবিপ্লবী। “যুব আন্দোলনের দিশা” (৪ মে, ১৯৩৯)

*** জনসাধারণের বিপ্লবী সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে না পড়া অথবা জনসাধারণের স্বার্থের সেবা করতে এবং তাঁদের সঙ্গে মিশে যেতে নিজেদের মনস্থির না করা পর্যন্ত বুদ্ধিজীবীরা প্রায়শই আত্মমুখীবাদ ও ব্যক্তিতাবাদের ঝোঁক নিয়ে আসে, তখন তাদের চিন্তাধারা প্রায়ই হয়ে থাকে বাস্তববিমুখ এবং তাদের কার্যকলাপও হয়ে থাকে দ্বিধাগ্রস্ত। তাই চীনের ব্যাপক বিপ্লবী বুদ্ধিজীবী যদিও অগ্রগামী ও সংযোগ সেতুর ভূমিকা নিতে পারে, তবুও এইসব বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে সবাই শেষ পর্যন্ত বিপ্লব চালিয়ে যেতে পারবে না। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিপ্লবের জরুরী মুহূর্তে বিপ্লবী বাহিনী থেকে সরে পড়তে পারে এবং নিষ্ক্রিয় মনোভাব গ্রহণ করতে পারে; আর কিছু সংখ্যক লোক বিপ্লবের শত্রুতে পরিণত হতে পারে। কেবলমাত্র দীর্ঘকালীন গণসংগ্রামের মধ্য দিয়েই বুদ্ধিজীবীদের এই ক্রটি অতিক্রম করা যেতে পারে। “চীনা বিপ্লব ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি” (ডিসেম্বর, ১৯৩৯)

*** যুবলীগকে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্য সাধনে পার্টির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করে যাওয়া ছাড়াও যুবকদের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উপযোগী নিজের কাজও করতে হবে। নয়া চীনকে তার যুবকদের জন্য ভাবতে হবে এবং যুবকদের উন্নতির জন্য যত্ন নিতে হবে। যুবকদের পড়াশোনা ও কাজ করতে হবে, কিন্তু তাঁদের বয়সটা তাদের শারীরিক পরিপুষ্টির বয়স। অতএব, তাদের কাজ ও পড়াশোনা এবং তাদের আমোদ প্রমোদ, খেলাধুলা ও বিশ্রাম উভয় দিকে অবশ্যই পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। “যুবলীগের দ্বিতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতিমণ্ডলীর সাক্ষাতদানকালে প্রদত্ত নির্দেশ” (৩০ জুন, ১৯৫৩)

আরো পড়ুন:  কমিউনিস্ট

Leave a Comment

error: Content is protected !!