নায়েব, গােমস্তা, বাঈজী, মাহুত, সহিস
তোষাখানা, রাতেক দিন-করবার ডায়নামাে
সব চাই, নইলে গ্রামে থাকাই বােকামাে—
বােতলকে-বােতল করে দৈনিক হাবিস
আত্মারাম খাঁচা ছেড়ে দিতেই চম্পট
সে গদিতে বসতে গেল যে তার ওয়ারিশ
কালের সিপাই এসে ঘাড় ধরে তুলি দিয়ে বলল: যা হট!
উঠে আসছে শক, হুণ, কুষাণ, পহ্লবী
স্বপ্নাদ্য কলমে, হচ্ছে ছাপাই বাঁধাই
বই যা ভারী, বইতে পারে একমাত্র গাধাই—
কী মজা, লিখলেই সব হয়ে যাচ্ছে ছবি!
মগজে ডবল শিফটে তৈরি করে প্লট
যেই না নেবার চেষ্টা লেখক পদবি
কালের সেপাই এসে ঘাড় ধরে তুলে দিয়ে বলল ; যা— হট !
মাসে মুক্তকচ্ছ রণছােড় বাবাজি
ভােটযুদ্ধং দেহি বলে আঁটেন মালকোঁচা
যাকেই তাকিয়ে মনে হয় খাঁদাবোঁচা
তাকেই আটকান জেলে। কারণ, সে গররাজি
মন্ত্র পড়তে গণতন্ত্রে ওঁ যাহা ফট,—
পাঁচসালা উৎরে দেবে সত্যি কি ভােজবাজি?
কালের সেপাই বসে খেলা দেখে।
এবার বড়র চালে কিস্তি পড়বে?
নাকি হবে মন্ত্রীর পালট।।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৯ – ৮ জুলাই ২০০৩) ছিলেন বিশ শতকের উল্লেখযোগ্য বাঙালি বামপন্থী কবি ও গদ্যকার। তিনি কবি হিসেবে খ্যাতিমান হলেও ছড়া, প্রতিবেদন, ভ্রমণসাহিত্য, অর্থনীতিমূলক রচনা, অনুবাদ, কবিতা সম্পর্কিত আলোচনা, উপন্যাস, জীবনী, শিশু ও কিশোর সাহিত্য ইত্যাদি রচনাতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। সম্পাদনা করেছেন একাধিক গ্রন্থ এবং বহু দেশি-বিদেশি কবিতা বাংলায় অনুবাদও করেছেন। “প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য় এসে গেছে ধ্বংসের বার্তা” বা “ফুল ফুটুক না ফুটুক/আজ বসন্ত” প্রভৃতি তাঁর অমর পঙক্তি বাংলায় আজ প্রবাদতুল্য।