রাস্তাগুলো খোঁড়া হ’চ্ছে
রাস্তাগুলো খোঁড়া করছে
কারণ, রাস্তা বড় হ’চ্ছে
হবেই তো—
কতদিন আর থাকবে বাচ্চা ?
চাকায় হাড় মড়মড়িয়ে
গাড়ি যাবে গড়গড়িয়ে
তবেই তো !
তালি বাজান,
ও মেরি জান।
বহুৎ আচ্ছ!
বহুৎ আচ্ছ।
উচু উচু পেল্লায় বাড়ি
আহা-হা তা
উঠবেই তো!
আমাদেরও ওঠার পালা
এল এবার ;
যা করবার
তাড়াতাড়ি !
তাড়াতাড়ি !
যার নেই চাল, যার নেই চুলো
তাদের চোখে
বাড়িগুলো
তা একটু ফুটবেই তো!
আসল কথা, চাই প্রতিভা –
পরের কষ্টে যাদের রেস্ত
তারাই লাভ করে কেষ্ট।
আহা, কেষ্টর জীব
করলই বা!
যত সুবিধে, ভাড়াও তত
লাফিয়ে লাফিয়ে
বাড়বেই তো!
দিন দিন যা
ট্যাক্সোর বহর
মশাইয়ের নাড়ি
ছাড়বেই তো।
তার চেয়ে, আমি বলছিলাম কী,
( বক্তা আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী )
করে হাটি-হাটি পা-পা
যান চ’লে
এইবেলা ধাপা।
দিনের আলোয়
ভালোয় ভালোয়
ছাড়ুন শহর।
গছিয়ে গাছিয়ে যাদের থাকার
থাকবেই তো।
যারা ওঠে ফেঁপে ফুলে
মধু লোটে ফুলে ফুলে
তারাই আজ উড়ে উড়ে
এসে বসছে শহর জুড়ে।
নিচের লোককে পাতালে ফেলে, হাঁ জী –
রাখবেহ তো।
তৈরি হচ্ছে ফুতির ফোয়ারা
নদীর ধারে,
পার্কে পার্কে
চোপ, বাঙালী, হেঁজিপাজী,
তোরা সব কলকাতার কে ?
সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৯ – ৮ জুলাই ২০০৩) ছিলেন বিশ শতকের উল্লেখযোগ্য বাঙালি বামপন্থী কবি ও গদ্যকার। তিনি কবি হিসেবে খ্যাতিমান হলেও ছড়া, প্রতিবেদন, ভ্রমণসাহিত্য, অর্থনীতিমূলক রচনা, অনুবাদ, কবিতা সম্পর্কিত আলোচনা, উপন্যাস, জীবনী, শিশু ও কিশোর সাহিত্য ইত্যাদি রচনাতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। সম্পাদনা করেছেন একাধিক গ্রন্থ এবং বহু দেশি-বিদেশি কবিতা বাংলায় অনুবাদও করেছেন। “প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য় এসে গেছে ধ্বংসের বার্তা” বা “ফুল ফুটুক না ফুটুক/আজ বসন্ত” প্রভৃতি তাঁর অমর পঙক্তি বাংলায় আজ প্রবাদতুল্য।