খ্রিস্টীয় গণতন্ত্র (ইংরেজি: Christian democracy) বলতে বোঝায় প্রতিক্রিয়াশীল নরমপন্থী (মডারেট) রােমান ক্যাথলিক ধর্ম অনুসারী রাজনৈতিক দল। খ্রিস্টান গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মতাদর্শ সামাজিক বাজার নীতি এবং গুণগত হস্তক্ষেপের প্রতি অঙ্গীকার করার পক্ষে সমর্থন করে। খ্রিস্টীয় গণতান্ত্রিক দলগুলি বিভিন্ন নামে দলগুলি বেলজিয়াম, ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানি বা ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানি, ইতালি এবং হল্যান্ডে সক্রিয়।
ডান এবং মধ্য ডান এই দলগুলির মধ্যে উরুগুয়ের দল ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে এবং ইতালিতে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কোনও কোনও দেশে তারা সমাজতন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সঙ্গে জোট বাঁধার চেষ্টা করে। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে চিলির ক্রিসটিয়ান ডেমােক্রেটিক পার্টি পুঁজিবাদকে ‘নির্দয় ও মানবিক মর্যাদার পক্ষে ক্ষতিকর বলে ঘােষণা করে এবং সেই সঙ্গে কমিউনিজমকে এক ধরনের ক্রীতদাসত্ব বলে নিন্দা করে’। এইসব দেশের কোনও কোনওটিতে এই দল সংসদে সর্ববৃহৎ।
খ্রিস্টীয় গণতান্ত্রিক দলগুলির মতাদর্শ ও কর্মপন্থা হলো যথাক্রমে নরমপন্থী ও নিয়মতান্ত্রিক সমাজ সংস্কারমূলক। ইউরােপে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে বিশেষ করে ইতালিতে ক্রিসচিয়ান ডেমােক্র্যাটরা শাসন ক্ষমতায় সুদৃঢ় স্থায়িত্বের জন্য সদাই সচেষ্ট থাকে এবং সমাজতন্ত্রী ও সাম্যবাদীদের বিরােধিতা বজায় রাখে। এইসব দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে দ্বিতীয় বিশ্ব-মহাযুদ্ধে প্রতিরােধ আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির ডঃ আদেনুর এবং ইতালির সিনর ফ্যানফ্যারির প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ক্রিসটিয়ান ডেমােক্রাটদের কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থা গড়ে ওঠেনি।
তথ্যসূত্র:
১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৯০-৯১।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।