মার্কবাদী দর্শনের অন্যতম প্রধান অঙ্গ ঐতিহাসিক বস্তুবাদ বিষয়ক প্রত্যয় হচ্ছে উৎপাদন সম্পর্ক (ইংরেজি: Production relations)। এতে পণ্যের উৎপাদন, বণ্টন ও বিনিময়ের প্রক্রিয়ায় যুক্ত মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের কথা বলা হয়ে থাকে। উৎপাদনী যন্ত্র বা মাধ্যমের মালিকানার প্রকৃতির উপর উৎপাদন সম্পর্ক নির্ভর করে।
উৎপাদন ব্যবস্থার দুটি উপাদান হলো উৎপাদিকা শক্তি ও উৎপাদন সম্পর্ক। উৎপাদিকা শক্তির নিরন্তর উন্নয়নের দরুন এবং শ্রমযন্ত্রের উৎকর্ষ সাধনের ফলে পুরানাের পরিবর্তে নতুন উৎপাদন সম্পর্কের প্রয়ােজন হয়, যা উচ্চস্তরের উৎপাদিকা শক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে। উন্নত উৎপাদিকা শক্তি এবং সাবেকি উৎপাদন সম্পর্কের মধ্যে ক্রমবর্ধিষ্ণু সংঘর্ষের অনিবার্য পরিণাম হলো সমাজ বিপ্লব, যেটা নতুনটির দ্বারা পুরানাে উৎপাদন সম্পর্কের অবসান ঘটায় এবং উৎপাদিকা শক্তির উত্তরােত্তর বিকাশের পথ সুগম করে।
প্রাক-সমাজতন্ত্রী শ্রেণীবিভক্ত সমাজে উৎপাদন সম্পর্কের স্বরূপ হলো আধিপত্য, অবদমন, শােষণ ও পীড়ন। সমাজতন্ত্রী উৎপাদন সম্পর্ক শিল্প-বাণিজ্যে ব্যক্তিগত মালিকানার পরিবর্তে জনসাধারণের মালিকানা কায়েম করে।
দ্র. উৎপাদন ব্যবস্থা; উৎপাদিকা শক্তি; ঐতিহাসিক বস্তুবাদ
তথ্যসূত্র:
১. গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরেন্দ্রমোহন. রাজনীতির অভিধান, আনন্দ পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, তৃতীয় মুদ্রণ, জুলাই ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪৯-৫০।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।