নউস হচ্ছে প্রাচীন গ্রিক দর্শনে সকল চিন্তা ও চেতনা কেন্দ্রীভূত সত্তা

প্রাচীন গ্রিক দর্শনে সকল চিন্তা ও চেতনা কেন্দ্রীভূত সত্তাকে ‘নউস’ (ইংরেজি: Nous) বলা হতো। নউস, কখনও কখনও বুদ্ধি বা প্রজ্ঞার সমতুল্য। শব্দটি ধ্রুপদী দর্শনের একটি শব্দ। শব্দটিকে সত্য বা বাস্তব কি বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় বলে মানব মনের বিভিন্ন এলাকার ক্ষেত্রেবিবেচনা করা হয়।

এ্যানাক্সগোরাসের দর্শনে নউসের প্রথম এবং সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। এ্যানাক্সগোরাসের মতে আকারহীন আদি বস্তুর আকার ও বৈচিত্র্য প্রাপ্তির মূল শক্তি হচ্ছে ‘নউস’। প্লেটো এবং এরিস্টটলের দর্শনে ‘নউস’কে সব আকারের শেষ আকার বা সব ভাবের সর্বোচ্চ ভাব বলে ব্যাখ্যাত হতে দেখা যায়।

প্রাচীন বস্তুবাদী দার্শনিকগণও ‘নউস’ শব্দকে ব্যবহার করেছেন। ডিমোক্রিটাস ‘নউস’কে বলেছেন গোলাকার অগ্নি। থেলিসও নউসকে সৃষ্টির উৎস বলে মনে করেছেন। প্রাচীন দার্শনিকগণের কাছে নউস তাই বস্তু বা সৃষ্টিকর্মের মূল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। প্রাচীন যুগের নউসের মধ্যে যে নির্বিশেষ চরিত্রের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় মধ্যযুগের ব্যাখ্যায় সেই চরিত্র আর দেখা যায় না। মধ্যযুগে নউসকে দার্শনিকগণ ব্যক্তির চরিত্র বলে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন।

তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬; পৃষ্ঠা ২৯৭।

আরো পড়ুন:  আলেক্সান্দ্রীয় দর্শন হচ্ছে সামাজিক বিজ্ঞানে প্রাচীন আলেকজান্দ্রিয়া শহরের অবদান

Leave a Comment

error: Content is protected !!