ইতালি ইউরোপের পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী শোষণমূলক শিল্পোন্নত নিপীড়ক রাষ্ট্র

ইতালি বা ইটালি (ইংরেজি: Italy) মাত্র কয়েক দশক আগেও একটি দরিদ্র অনগ্রসর দেশ ছিল। অর্থনীতিতে কৃষির প্রাধান্য এবং দেশে খনিজ কাঁচামালের ও জ্বালানির অভাব তার শিল্প ও অর্থনীতির বিকাশকে প্রতিহত করে রেখেছিল। এই থেকে কিন্তু ইতালীয় সাম্রাজ্যবাদের আপেক্ষিক দুর্বলতা থেকে কোনোক্রমেই তার আক্রমণাত্মক লক্ষ্যের সীমাবদ্ধতা প্রমাণিত হয় না।

ইতালি সম্পর্কে লেখার সময় ভ্লাদিমির লেনিন লক্ষ্য করেন যে এই শতকের গোড়ার দিকেই সে অন্যান্য দেশ শোষণকারী রাষ্ট্র, ‘নির্মম, বিভৎস ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল ও লণ্ঠনকারী বুর্জোয়াদের রাষ্ট্র হয়ে উঠেছিল। এই বুর্জোয়ারাই ফ্যাসিবাদের জন্ম দিয়েছিল যাতে ইতালীয় সমরবাদের হঠকারিতা ও আক্রমণের প্রবণতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয়।

অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশ ইতালি শুরু থেকেই যুদ্ধবাজ দেশগুলাের শীতল সম্পর্ক থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে চেয়েছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ১৯১৫ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে বিশ্বযুদ্ধে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। তবে এ যুদ্ধে তারা প্রথম থেকেই তেমন কোনাে সুবিধা করতে পারেনি। ২৫ পদাতিক এবং ৪টি ক্যাভালরি ডিভিশনের সৈন্য নিয়ে ইতালি যুদ্ধে জড়ায়। এক্ষেত্রে ব্রিটেন সরাসরি তাদের অর্থসাহায্য করার কথা বলে। তারা মাত্র ১২০টি কামান ও ৭০০টি মেশিনগান নিয়ে এসময় অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরিতে সর্বাত্মক হামলা চালায়। আইসােনজো অভিযানের একেবারে গােড়ার দিকের দু সপ্তাহেই ইতালির বাহিনী তাদের ৬০ হাজার সৈন্য হারায়। এদিকে শীতকালে আক্রমণ বন্ধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ইতালীয় বাহিনী তাদের লাখ তিনেকের মত সৈন্য হারিয়েছে। বস্তুত এসব সৈন্যের সিংহভাগ ছিল নানা পদে প্রতিষ্ঠিত যারা যুদ্ধ পরিচালনা করেছে। তবে প্রায় সাত বারের মত শক্রর ব্যুহ ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল এই বাহিনী। 

১৯১৬ সালের আগস্টে গরজিয়ায় ইতালীয় বাহিনীর সফলতা বাকিদের সতর্ক করে দেয়। তারা নতুন এটা ভেবে সবাই তাদের দুর্বল প্রতিপক্ষ ভাবত এতদিন। কিন্তু এ যুদ্ধের সাফল্য পরিস্থিতি যেমন বদলে দেয় তেমনি ইতালির শক্তিমত্তা সম্পর্কেও নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে সবাইকে। প্রথম দিকে বেশ দুর্বল হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও বিভিন্ন যুদ্ধে সফলতা ইতালীয়দের সাহস বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রের বিজয় শত্রুসেনার মনে ত্রাস সৃষ্টি করে। গ্যারিবল্ডির রক্ত তাদের ধমনীতে বহমান তা প্রমাণ করতে একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে ইতালীয়রা। ১৯১৫ সালের বসন্ত আসার আগেই ইতালীয় বাহিনী বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা দেখাতে সমর্থ হয়েছিল। ১৯১৫ সালে জেনারেল লুইগি কাডােরনার অধীনস্থ ২৫টি পদাতিক ও ৪টি ক্যাভালরি ডিভিশন এক্ষেত্রে তাদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন শুরু করে। 

লুইগি কাডাের্নারের অধীনস্থ মাত্র ১২০টি কামান এবং ৭০০টি মেশিনগানধারী সৈন্যরাই ১৯১৫ সালের মে মাসের যুদ্ধে কাঁপন ধরিয়ে দেয় অস্ট্রো-হাঙ্গেরির সৈন্যদের মাঝে। তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ইতালির প্রতিকূল হয়ে পড়ে। ইতালীয় সৈন্যদের সর্বত্মক হামলার মুখে আক্রান্ত সেনারা প্রতিরােধ ব্যুহ রচনা করে। এবার পাল্টা আঘাতে ছত্রখান হয়ে পড়ে ইতালির সৈন্যরা। আইসােনজো অভিযানের সপ্তাহ না পেরােতেই ৬০ হাজার ইতালীয় সৈন্য মারা যায়। এদিকে যমদূতের শীতলতা নিয়ে ঋতু পরিবর্তন হয়। তুষারে চারদিক ঢাকা পড়তে শুরু করে হামলা বন্ধ করে ইতালি। কিন্তু এরই মাঝে হতাহত সৈন্যের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে তাদের। ৭ বারের মত আক্রমণ করে শত্রুর ব্যুহ ভেদ করতে ব্যর্থ কডােনা এবার সাথে থাকা ৩ হাজার ফিল্ড গান পর্যন্ত খুইয়ে বসেন।[১]

আরো পড়ুন:  বেলজিয়াম কৃষি ও ভারী শিল্পোন্নত ইউরোপীয় দেশ

ইতালির অর্থনীতি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়, উত্তর আফ্রিকায় উপনিবেশগুলি হারানো এবং যুদ্ধে তার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে সাম্রাজ্যবাদের মধ্যে ইতালির দুর্বল অবস্থা দুর্বলতর হয়ে পড়ে। কিন্তু দেশে তখনো ক্ষমতাশালী ইতালির একচেটিয়ারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের উদার সাহায্যের কল্যাণে শুধু পুনর্বাসিতই হয় নি, তাদের অর্থনৈতিক সামর্থ্য বাড়াতেও পেরেছিল। যে ইতালির আয়তন ৩ লক্ষ ১ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৫:৭ কোটি, সে-ই পুজিবাদী দুনিয়ায় শিল্পোৎপাদের পরিমাণের দিক থেকে পঞ্চম স্থান অধিকার করে ব্রিটেনকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ইতালীয় অর্থনীতির প্রধান অবস্থানবতা বৃহৎ একচেটিয়া ও রাষ্ট্রীয় সম্মিলনীগুলি পশ্চিম ইউরোপ ও সামগ্রিকভাবে পুঁজিবাদী বিশ্বে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।[২]

পুঁজিবাদী বিশ্ববাজারে ইতালির রপ্তানির মধ্যে দেশে তৈরী গাড়ি প্রায় ৩৩ শতাংশ, ধাতুকাটার যন্ত্র প্রায় ৫০ শতাংশ এবং যথেষ্ট পরিমাণ ট্র্যাক্টর, নানাধরনের যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য পণ্যাদি উল্লেখ্য। আধুনিক ইতালি অত্যুন্নত শিল্প-কৃষিসমৃদ্ধ দেশ। তার শিল্পোৎপাদন মূল্যের বিচারে কৃষি-উৎপাদনের চেয়ে চার গুণ বেশি। তার নির্মাণ, পরিবহণ এবং অর্থনীতির অন্যান্য শিল্পলগ্ন শাখাপ্রশাখাও উন্নত মানের। ইঞ্জিনিয়রিংই ইতালির মূলশিল্প। আমদানিকৃত তৈল এবং দেশজ গ্যাসের ভিত্তিতে বিকাশমান তৈলশোধন ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি উৎপাদন এখন ইতালীয় শিল্পের একটি প্রধান শাখা। যন্ত্রনির্মাণ এখানে মোটরগাড়ি, মোটরসাইকেল, মেশিন টুলস, ইঞ্জিন, ইলেকট্রো-ইঞ্জিনিয়রিংয়ের ও অন্যান্য সামগ্রী উৎপাদনে বিশেষীকৃত। দেশের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মোটরই তুরিনের ‘ফিয়াট’ কোম্পানিতে উৎপন্ন।

ইতালীয় একচেটিয়ারা আফ্রিকার সদ্যস্বাধীন দেশ, ল্যাটিন আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপীয় সাধারণ বাজারভুক্ত দেশগুলিতে পুঁজিলগ্নি করছে। এদের পুঁজি এখন আরও অধিক পরিমাণে পশ্চিম জার্মানি ও মার্কিন পুঁজির সঙ্গে বিজড়িত হচ্ছে।

রাষ্ট্রীয়-একচেটিয়া পুঁজিনিয়ন্ত্রিত ইতালির জাহাজনির্মাণ শিল্পটি সুবৃহৎ। বৃহত্তম শিপইয়ার্ডগুলি জেনোয়ার অঞ্চলে অবস্থিত। ইঞ্জিনিয়রিংয়ের অন্যান্য শাখাগুলি রেলইঞ্জিন, ট্র্যাক্টর, বল-বিয়ারিংস, ইলেকট্রো-টেকনিকাল সামগ্রী ও প্রিসিসন যন্ত্রপাতি তৈরি করে। পশ্চিম জার্মানির সাহায্যে তার বিমানশিল্পও পুনর্গঠিত হচ্ছে।

ইতালি এখন বার্ষিক ২৩ কোটি টন পর্যন্ত ইস্পাত উৎপাদন করে (পরিমাণটি ১৯৪৮ সালের ২০ লক্ষ টনের সঙ্গে তুলনীয়)। দেশের অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন ২ লক্ষ ৬০ সহস্রাধিক টনে (উত্তর ইতালি), দস্তা ২ লক্ষ টনে ও সীসা ৪৫ সহস্রাধিক টনে পৌঁছেছে। ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে সে (তাসকেনি) বার্ষিক প্রায় ১ হাজার টন পারদ উৎপাদন করেছিল, অথচ আজ এটি যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে। ইতালি লৌহেতর ধাতু পশ্চিমের দেশগুলিতে রপ্তানি করে।

আরো পড়ুন:  বার্লিন প্রাচীর ছিল পশ্চিম বার্লিন ও পূর্ব বার্লিনের সীমানা প্রাচীর

ইতালির আকরিক জালানি সম্পদ পর্যাপ্ত নয়। বার্ষিক সে ০.২ কোটি টনের মতো তৈল উৎপাদন করে, কিন্তু তার তৈলশোধনাগারগুলির সামর্থ্য প্রায় ২০ কোটি টন। আফ্রিকা ও মধ্য প্রাচ্য থেকে আমদানিকৃত অশোধিত তৈল জেনোয়া, নেপলস, লিভর্নো, বারি, স্পেজিয়া, আঙ্কনা ও অন্যান্য বন্দরের শোধনাগারে শোধিত হয়।

ইতালি বিদ্যুতের জন্য আমদানিকৃত তেলচালিত স্টেশন এবং জলবিদ্যুৎ ও ভূ-তাপশক্তি ব্যবহার করে। বছরে উৎপন্ন তার ১৮,৫০০ কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুতের মধ্যে ৬৬ শতাংশ জলবিদ্যুৎ ও ভূ-তাপশক্তি থেকে এবং অবশিষ্ট গ্যাস ও তরল জ্বালানিচালিত তাপস্টেশন থেকে সংগৃহীত। কয়েকটি পারমাণবিক শক্তিস্টেশনও সেখানে চালু হয়েছে এবং আরও কতকগুলির নির্মাণ চলছে।

ইতালিতে প্লাস্টিক, রাসায়নিক আঁশ, কৃত্রিম রবার ও অন্যান্য রাসায়নিক সামগ্রীর উৎপাদন বাড়ছে। শিল্পোৎপাদনে ইতালির প্রাচীনতম বস্ত্রশিল্পের অংশভাগও অনুল্লেখ্য নয়। উৎপন্নের মুল্যের বিচারে খাদ্যশিল্প বস্ত্রশিল্পের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে আছে। মদ ও অলিভ তৈল উৎপাদনে যথাক্রমে ফ্রান্স ও স্পেনের পরই সে দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী।

ইতালীর অর্থনৈতিক মানচিত্রে শিল্প-কৃষিপ্রধান উত্তরাঞ্চল, কৃষিশিল্পপ্রধান মধ্যাঞ্চল এবং কৃষিপ্রধান দক্ষিণাঞ্চল সবিশেষ চিহ্নিত।

৭৫ শতাংশ জলবিদ্যুৎ ও লৌহধাতু, ৬৬ শতাংশ রাসায়নিক সামগ্রী এবং ৮০ শতাংশ ইঞ্জিনিয়রিং দ্রব্যাদি উৎপাদক উত্তরাঞ্চলের শহরগুলিতেই দুই-তৃতীয়াংশের বেশি শিল্প-প্রলেতারিয়েতদের বসবাস। মোটর কারখানাগুলিও দেশের ওই অঞ্চলেই অবস্থিত। মিলান, তুরিন ও জেনোয়ার ‘শিল্পত্রিভুজে’ দেশের অর্থনৈতিক রক্ষাপ্রাচীরটি তৈরি। মিলান ইতালির বৃহত্তম শিল্প, বাণিজ্য ও ফিনান্স কেন্দ্র। তুরিন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পনগরী এবং জেনোয়া জাহাজনির্মাতা ও ডক-কর্মীদের শহর।

রাজধানী রোম (জনসংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ) দেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। শহরবাসী ও অসংখ্য পর্যটকদের খাদ্য-পরিতোষলগ্ন শিল্পের উপরই মূলত এই শহরের অর্থনীতি নির্ভরশীল। দেশের অন্যান্য শহরের মতো রোমও পুরাতন সংস্কৃতির বহু স্মৃতিসৌধধন্য। তাই এখানে সর্বদাই লক্ষ লক্ষ বিদেশীর ভিড় জমে। ফলত, পর্যটনশিল্প দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি প্রধান উৎস।

পোপের আবাসস্থল ও রোমান ক্যাথলিক চার্চের বিশ্বকেন্দ্র ভ্যাটিকান শহর-রাজ্যটি রোমে অবস্থিত। ক্যাথলিক চার্চের মাধ্যমে ইউরোপের বুর্জোয়া রাষ্ট্রগুলি সহ পৃথিবীর অন্যান্য অংশের উপর ভ্যাটিকান রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে থাকে।

আরো পড়ুন:  লুক্সেমবুর্গ ইউরোপের ইস্পাত উৎপাদনকারী শিল্পোন্নত ক্ষুদ্র দেশ

ইঞ্জিনিয়রিং শিল্প ও তৈলশোধনাগার সমৃদ্ধ নেপলস বাদে সারা দক্ষিণ ইতালিই দরিদ্র ও অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর অঞ্চল। দেশের কৃষির প্রধান শাখাগুলির মধ্যে চাষাবাদ, প্রধানত শাকসজ্জি, আর ও ফলফলাদি উৎপাদনই উল্লেখ্য। এখানে গম এবং ভুট্টাও চাষ করা হয়। কিন্তু ইতালির শস্যোৎপাদন সীমিত বিধায় সে শস্য আমদানি করে। দেশে পশুজ দ্রব্যাদিরও অভাব রয়েছে। অন্যান্য উন্নত ইউরোপীয় দেশগুলির তুলনায় ইতালির মানুষ ৩৩-৫০ শতাংশ পর্যন্ত কম মাংস, দুধ ও ডিম খেয়ে থাকে।

ইতালির জনসংখ্যার অর্ধেকেরই বেশি শহরবাসী। প্রতিভাবান ইতালীয় জনগণের সৃষ্ট প্রাচীন স্থাপত্যের আশ্চর্য সব স্মৃতিসৌধে এই দেশের শহরগুলি সমৃদ্ধ। কিন্তু পুঁজিবাদী সমাজের চারিত্র্যলগ্ন সামাজিক বৈসাদৃশ্যগুলিও এসব শহরে খুবই সহজলক্ষ্য। শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলন এবং শ্রেণী-সংগ্রামের পরিসর ও তীব্রতার প্রাধান্যের দিক থেকে ইতালি পশ্চিম ইউরোপের অতি সীমিতসংখ্যক কয়েকটি দেশের অন্যতম।

ইউরোপীয় ভূয়োদর্শনের সূতিকাগার ইতালি

সুবিধাবাদী ইতালিও প্রথম আসে ইউরোপে। ইউরোকমিউনিজম তাদেরই সৃষ্টি। ইউরোকমিউনিজম থেকেই এসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ধারনা। ইতিহাসের পরিহাস হচ্ছে যেসব নেতার মাথা থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারনাটি বাস্তবে রূপ পেয়েছিল, সেই নেতারা বা তাদের অনুরোধ আজ গোটা ইউরোপের কাছে পরিত্যাজ্য। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ইতালি কোনো সাহায্য পায়নি। সাহায্য যেটুকু পেল তা নাকি চীন এবং আলবেনিয়া থেকে।

মাও সেতুং বলেছিলেন, পূবালী বাতাস পশ্চিমা বাতাসের উপর প্রাধান্য বিস্তার করবে। ইতালি মূলত গত ত্রিশ বছর জ্ঞান এবং সত্যবিরোধী অবস্থানে অবস্থান করছে। ইউরোপের ভূয়োদর্শন ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্যবাদ, ইউরোকেন্দ্রিকতাবাদ, সুবিধাবাদের ফলশ্রুতি আজকের এই মৃত্যুপূরী ইতালি আর স্পেন।

তথ্যসূত্রঃ

১. মো. আদনান আরিফ সালিম, আধুনিক বিশ্বের ইতিহাস, [Pdf]. বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জানুয়ারি ২০১৯. সানজিদা মুস্তাফিজ ও সুমা কর্মকার. সম্পা. পৃষ্ঠা ৩৩; Retrieved from http://www.ebookbou.edu.bd/wp/OS/hsc4_2.php#hsc2855
২. কনস্তানতিন স্পিদচেঙ্কো, অনুবাদ: দ্বিজেন শর্মা: বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভূগোল, প্রগতি প্রকাশন, মস্কো, বাংলা অনুবাদ ১৯৮২, পৃ: ১৮৯-১৯২।

Leave a Comment

error: Content is protected !!