মগজের রোগ সেরে গেলে বাঁচতে ইচ্ছে করে আরো যুগ যুগ

রাষ্ট্রের মগজে ছোঁয়াচে এক রোগ ভিড় জমিয়েছে,
আজকাল প্রায় সকলেই ভুগছে এ-রোগে,
রোগের পূর্বাভাস পাওয়া মাত্রই আশাপাশের সবাই ভীত ও আক্রান্ত,
কীভাবে সারবে রোগ, ভেবে ভেবে পেরোলাম কয়েক দশক।

বাতাসটাও কেমন যেনো হিংস্র হয়ে তেড়ে আসে মুমূর্ষুর দিকে,
গোপন ক্ষোভের আগুন বেড়েই চলছে চরডাঙ্গার বস্তিতে,
ভণ্ডরা বিদেশ থেকে ত্রাণ এনে বলছে ‘কেমন চলছে রে তোদের দিনকাল’,
উন্নয়নের মহাসড়কে লাগছে টক্কর,
রুগ্ন স্বপ্নরা এখন গঞ্জিকার ঘ্রাণে কাটাচ্ছে দিন,
আর লগ্নী পুঁজির কাছে বেচা কেনা চলছে নিষ্ক্রিয় মগজের।

আজকাল মোটাতাজা নেতারা দেশ জুড়ে দাপট চালাচ্ছে;
তাদের চোপার জোরে তৈরি হচ্ছে রাষ্ট্রে উন্নয়নের ইট বালির ইমারত-
আর তার দেয়ালে লাগানো দর্পণে আমারা দেখি শাসনের চিত্র,
শহরের দাঁত উঁচু হওয়া রাস্তাগুলো বার বার ব্যঙ্গ করে চেয়ে থাকে,
লাল মদ এসে যখন নেশায় মাতিয়ে দেয় চারপাশ ঠিক তখনই-
কাদা মাটি মাখা যৌবনগুলো মাঝ পথে নেমে পরে প্রতিবাদী হয়ে;
জানালায় উঁকি মারা মধ্যবিত্তের মুখ থেকে টোকায়, অসভ্য, ইতর গালিগুলো-
মুক্তার মতো ঝরে পথ মাতানো যৌবনের গতরে।

উন্নয়ন গোজা মধ্যবিত্তরা বলতে পারিস অবলীলায়-
টোকায়, অসভ্য, ইতর;
যারা রাত জেগে টক শো দেখে আর দিন হলেই
দেখে খাবার সাজানো টেবিল ও রমণী—
তারা এর চেয়ে বেশি কিবা চিন্তা করতে পারে।

এই বস্তির রঙেরা একদিন মেতেছিলো আগুন খেলায় এবং
হাজারবার ঠকেছিল জীবনের সাথে;
দেখেছিল সুবিধা নেই মহৎ কিছু করার,
একক চেষ্টায় এগুতে গেলে কেবলই ভুল হয়ে যায়,
তাইতো তারা দেশে জুড়ে পাগলা ঘণ্টি বাজায়,
পথে বন্ধুর থেঁতো হওয়া দেহকে শুইয়ে
আবার চলতে শুরু করে ক্ষুব্ধ জনতার মাঝে বারুদ হয়ে,
কারণ তার কখনও মগজ বেচে না আপনার নগ্ন টেবিলে।
এই রংধনুরা আছে বলেই মনে হয়
একদিন ট্যাংক চালিয়ে দিগ্বিদিক জয় করে
লাল ঝাণ্ডা উড়বে দেশখানায়,
তারা আছে বলেই বাঁচতে ইচ্ছে করে আরো এক যুগ।

আরো পড়ুন:  একটি সাক্ষাত

৩০ আগস্ট ২০১৮
নেত্রকোণা

Leave a Comment

error: Content is protected !!