উত্তর আমেরিকা (ইংরেজি: North America) সম্পূর্ণরূপে উত্তর গোলার্ধে এবং প্রায় সবটুকুই পশ্চিম গোলার্ধের মধ্যে অবস্থিত পৃথিবীর একটি মহাদেশ। এটিকে কেউ কেউ আমেরিকার উত্তর উপমহাদেশ হিসাবেও বিবেচনা করে। এর উত্তরে সুমেরু মহাসাগর, পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর, পশ্চিমে এবং দক্ষিণে প্রশান্ত মহাসাগর এবং দক্ষিণ-পূর্বে দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান সাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত। পানামা যােজক বরাবরই উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সীমান্ত চিহ্নিত।
উত্তর আমেরিকা প্রায় ২৪,৭০৯,০০০ বর্গকিলোমিটার (৯,৫৪০,০০০ বর্গমাইল) এলাকা জুড়ে, পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় ১৬.৫% এবং এর মোট পৃষ্ঠের প্রায় ৪.৮% দখল করে আছে। এশিয়া এবং আফ্রিকার পরে উত্তর আমেরিকা অঞ্চল অনুসারে তৃতীয় বৃহত্তম মহাদেশ, এবং এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের পরে জনসংখ্যায় চতুর্থ বৃহত্তম। ২০১৩ সালে, এর প্রায় ২৩টি স্বাধীন রাষ্ট্রের জনসংখ্যা অনুমান করা হয়েছিল প্রায় ৫৭.৯ কোটি মানুষ বা পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় ৭.৫%, যদি আশেপাশের দ্বীপগুলি (বিশেষত ক্যারিবীয়) অন্তর্ভুক্ত থাকে।
পুঁজিবাদী বিশ্বের জনসংখ্যার ২০ ভাগের অধিকারী উত্তর আমেরিকা তার শিল্পােৎপাদনের প্রায় অর্ধেক তৈরি করে। এক্ষেত্রে আধুনিক পুঁজিবাদের বৃহত্তম সামরিক-অর্থনৈতিক ঘাঁটিস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবিশেষ উল্লেখ্য। এটির দক্ষিণে স্পেনিশ ও ল্যাটিন-জাত অন্যান্য ভাষাভাষী লাতিন আমেরিকার দেশগুলি অবস্থিত। লাতিন আমেরিকার জনগণ উত্তর আমেরিকার একচেটিয়া ও স্থানীয় বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে জাতীয় ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং সামাজিক প্রগতির জন্য আজ সংগ্রামলিপ্ত।
জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রক্রিয়ায় আমেরিকার রাজনৈতিক মানচিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। কিউবায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সাফল্য এক গুরত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। ল. ই. ব্রেজনেভের কথায়: ‘..কিউবার বিজয়ী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ইতিহাসই সকল দেশ ও জাতির বেলায় অনুরূপ সমাজবিকাশের নিয়মকানুনের অলঙ্ঘনীয়তার অন্যতর প্রকট প্রমাণ ’।
তথ্যসূত্র:
১. কনস্তানতিন স্পিদচেঙ্কো, অনুবাদ: দ্বিজেন শর্মা: বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভূগোল, প্রগতি প্রকাশন, মস্কো, বাংলা অনুবাদ ১৯৮২, পৃ: ২৩।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।