আত্রাই নদী বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী

আত্রাই নদী (ইংরেজি: Atrai River) বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য ২৬৯ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৭৭ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক আত্রাই নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ০২।[১]

আত্রাই নদীটি পশ্চিম বাংলা এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীটির সর্বমোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪০ মাইল বা ৩৯০ কিলোমিটার। এটির সর্বোচ্চ গভীরতা ৯৯ ফুট বা ৩০ মিটার। অতীতে এই নদীকে আত্রেই আব আত্রেয়ী নামে ডাকা হতো এবং মহাভারতে এটির উল্লেখ রয়েছে। করতোয়া নদীর সাথে এটির সংযোগ রয়েছে।

প্রবাহ: ভারতের হিমালয় অঞ্চলে উৎপত্তি লাভ করে করতোয়া নদীটি পঞ্চগড় জেলার বুড়িবর্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর দিনাজপুর সদর উপজেলার শঙ্করপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে আত্রাই নাম ধারন করে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করেছে।  এটি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ এবং বালুরঘাট ব্লকের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আবার বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার ধামুইরহাট উপজেলার আলমপুর ইউনিয়ন দিয়ে আত্রাই নামে পুনর্বার বাংলাদেশে প্রবেশ করে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়ন অবধি প্রবাহিত হয়ে হুরাসাগর নদীতে নিপতিত হয়েছে।[১] দিনাজপুর জেলায় নদীটি গবুরা এবং কাঁকড়া নামে দুটি নদীতে বিভক্ত হয়েছে। এটা বরেন্দ্র ভূমি অতিক্রম করে এবং চলন বিলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীটি বার মাসই মাছ ধরার জন্য উপযোগী থাকে। যদিও বর্ষাকালে নদীটি প্রায়ই অনেক অঞ্চলে বন্যা ঘটিয়ে থাকে। 

আত্রাই নদীটি আগে উত্তর বাংলার বিখ্যাত নদী ছিল কারণ তিস্তার পানি গঙ্গায় পতিত হওয়ার জন্য এটি ছিল প্রধান প্রণালী। ১৭৮৭ সালে তিস্তা তার প্রাচীন নদীগর্ভ থেকে ভেঙ্গে বের হয়ে আসে এবং নিজে থেকে একটি নতুন ও প্রশস্ত প্রণালী খনন করে ব্রহ্মপুত্রে এসে পড়ে। এর পর থেকে আত্রাই তার গুরুত্ব হারায় এবং এখন এর অল্প কিছু সংখ্যক শ্রেষ্ঠত্বের চিহ্ন রয়েছে।

আরো পড়ুন:  রামদারা নদী বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও সদর এবং দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নদী

তথ্যসূত্র:  

১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ৮৮-৮৯, ISBN 984-70120-0436-4.

Leave a Comment

error: Content is protected !!