বেতনা নদী (ইংরেজি: Betna River) বাংলাদেশের ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের ঝিনাইদহ, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ১৯১ কিলোমিটার, গড় প্রশস্ততা ৫৫ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক বেতনা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৬৪।[১]
প্রবাহ: বেতনা নদীটি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার মহেশপুর পৌরসভার মধ্য দিয়ে প্রবহমান ভৈরব নদ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। পরবর্তী পর্যায়ে এই নদী যশোর জেলা চৌগাছা, শার্শা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা সদর, তালা এবং আশাশুনি উপজেলার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে আশাশুনি উপজেলার বুদ্ধহাটা ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে খোলপেটুয়া নদীতে নিপতিত হয়েছে।[১] নদীটি বেনারপোতা নামক স্থান থেকে ডলুয়া নামের একটি শাখা সৃষ্টি করে পরে কালিয়া নাম ধারণ করে কপোতাক্ষ নদে পতিত হয়েছে। বেনারপোতার কাছে বাঁধ নির্মাণের ফলে শাখাটি বর্তমানে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।[২] উজান থেকে ভাটির দিকে এই নদীর প্রশস্ততা ক্রমশ কমে গেছে। সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এই নদীতে জোয়ারভাটার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। নদীতে ছোট বড় নৌকা চলাচল করতে দেখা যায়।
অন্যান্য তথ্য: বেতনা নদীটির প্রবাহের প্রকৃতি মৌসুমি এবং নদীটি বন্যাপ্রবণ। বেতনা নদীটির অববাহিকায় সোনামুখী-বুমান্দার বিল নিষ্কাশন প্রকল্প, কলারোয়া সেচ ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্প, শালিখা নিষ্কাশন উপপ্রকল্প রয়েছে। তবে নদীটিতে কোনো ব্যারাজ বা রেগুলেটর নেই এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ আছে বামতীরে ২৯ ও ডানতীরে ৩৩ কিলোমিটার। নদীটির তীরে মহেশপুর পৌরসভা, কলারোয়া পৌরসভা, সাতক্ষীরা শহর, আশাশুনি হাট, বুধাহাটা হাট, ঝাউডাঙ্গা হাট, কলারোয়া হাট, নাভারন হাট, গোরপাড়া হাট ও বাঘরা হাট অবস্থিত।[১] সেচ সম্প্রসারণের জন্য বেতনার উপর শংকরপুরে একটি বড় ধরনের জলকাঠামোও নির্মাণ করা হয়েছে।[২]
তথ্যসূত্র:
১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ৫৭-৫৮, ISBN 984-70120-0436-4.
২. বেতনা নদী, বাংলাপিডিয়া, লিংক http://bn.banglapedia.org/index.php?title=বেতনা_নদী
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।