জিঞ্জিরাম নদী বাংলাদেশ ও ভারতের মেঘালয়ের আন্তঃসীমান্ত নদী

জিঞ্জিরাম নদী (ইংরেজি: Jinjiram River) বাংলাদেশ এবং ভারতের মেঘালয়ের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলা এবং ভারতের মেঘালয়ের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৫ কিলোমিটার, গড় প্রশস্ততা ১০৭ মিটার এবং গভীরতা ৭ মিটার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পাউবো কর্তৃক জিঞ্জিরাম নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ২০।[১] এই নদী অববাহিকার আয়তন ২৪০ বর্গকিলোমিটার।[২]

প্রবাহ: জিঞ্জিরাম নদী ভারতের আসাম রাজ্যের গোয়ালপাড়া জেলার ডেরেক গ্রাম থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এটির প্রধান উপশাখাটি উৎপত্তি লাভ করেছে উপট হ্রদ থেকে। এই নদী উৎপত্তিস্থল থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে গাগুয়া নদীর সাথে মিলেছে। অতঃপর নদীটি গোয়ালপাড়া জেলা এবং মেঘালয়ের পশ্চিম গারো পাহাড় জেলার সীমানা দিয়ে বেশ কিছুদুর প্রবাহিত হয়েছে, পরে ধুবড়ি জেলা এবং মেঘালয়ের পশ্চিম গারো পাহাড় জেলার সীমানা হয়েছে এবং সবশেষে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর পর নদীটি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে দাংধরার কাছে হলহলি নামে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে পতিত হয়েছে।[৩] এ নদীতে সারা বছরই পানিপ্রবাহ থাকে। তবে চৈত্র বৈশাখ মাসে পানি প্রবাহের মাত্রা অনেকটা কমে যায় এবং জুন-আগস্ট মাসে পানি প্রবাহ পর্যাপ্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। তখন নদীর দুকূল নিমজ্জিত হয়। এই নদীটি ভাঙনপ্রবণ। পূর্বের তুলনায় বর্তমানে প্রবাহিত পানির পরিমাণ অনেক কমে গেছে এবং পলি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে।[১] 

অন্যান্য তথ্য: জিঞ্জিরাম নদীর তীরে বাংলাদেশের বালিমারিহাট ও সানন্দবাড়িহাট এবং মেঘালয়ের ফুলবাড়ি থানা অবস্থিত। নদীতে অববাহিকার কোনো প্রকল্প এবং ব্যারাজ বা রেগুলেটর নেই। তবে ৬৩০ মিটার সানন্দবাড়ি রক্ষা প্রকল্প নামের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ আছে।[১]

তথ্যসূত্র:

১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ২৪৮-২৪৯, ISBN 984-70120-0436-4.

আরো পড়ুন:  সোনাভরী নদী বাংলাদেশ এবং ভারতের আসামের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী

২. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ১৯৫।

৩. ম ইনামুল হক, বাংলাদেশের নদনদী, অনুশীলন, ঢাকা, প্রথম সংস্করণ, জুলাই ২০১৭, পৃষ্ঠা ৫২।

Leave a Comment

error: Content is protected !!