কংস নদী বা কংশ নদী বা কংসবতী নদী বা কংসাই নদী বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৩০ কিলোমিটার। কংস নদীর বোয়াল মাছ পৃথিবীবিখ্যাত।
কংস নদীর গড় প্রস্থ ৯৫ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। নদীটির জারিয়া অঞ্চলে গভীরতা ১১.৫ মিটার। নদী অববাহিকার আয়তন ১১২৬ বর্গ কি.মি.। জোয়ার-ভাটার প্রভাবমুক্ত নদীটিতে সাধারণত বর্ষায় বন্যা হয় না।
কংস বা ইছামতির প্রবাহটিতে নকলা উপজেলার তারাকান্দিতে একটি রাবার ড্যাম স্থাপন করা হয়েছে। এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি রাবারডেম প্রকল্প যা সেই এলাকার মাছসহ প্রাণ-প্রবাহে বাঁধার সৃষ্টি করছে। আমরা এই রাবার ড্যামটি সরিয়ে ফেলার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই।
প্রবাহ: ভোগাই নদী মরিচ পুরান ইউনিয়নের কাছে গিয়ে দুভাগে বিভক্ত হয়। দক্ষিণের ভাগটির নাম ইছামতি এবং উত্তরের প্রবাহটির নাম কংস। একটু উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মালিশী, চিল্লাখালী ও ভােগাই নদীর মিলিত প্রবাহ কংস নদ হয়েছে। মরা ভােগাই গাঙ্গিনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। হালুয়াঘাট উপজেলায় মেমং, দরসা ও ডাবুয়া নদী মরা ভােগাইতে পড়েছে। ধােবাউড়া উপজেলায় তুরা পাহাড় থেকে উৎপন্ন ঘুমিরা ও বনেরাখালী নদী মরা ভােগাইতে পড়ে রামখালী নাম নিয়েছে। এরপর রামখালী, সাতারখালী ও তুরা পাহাড় থেকে উৎপন্ন নিতাই নদী এসে কংস নদে গিয়ে পড়েছে।
তুরা পাহাড় থেকে উৎপন্ন সবকটি নদীর এলাকা কংস নদের অববাহিকা। নকলা থেকে বলেশ্বরী নামের একটি নদী ভােগাইয়ের ডানতীরে পড়েছে। ফুলপুর উপজেলার মালিঝি নদী কংস নদের ডানতীরে পড়েছে। এরপর পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের শাখা খাড়িয়া নদী কংস নদে এসে পড়েছে। পূর্বধলা উপজেলায় কালীহর, বল ও লাউরী নামের তিনটি নদী কংস নদের ডানতীরে পড়েছে। নেত্রকোণা উপজেলায় তেওরখালী নামে কংস ও গুনাই নদীর সংযােগ নদী আছে। কংস নদের অববাহিকায় শ্রীবর্দি, ঝিনাইগাতি, শেরপুর, নকলা, নলিতাবাড়ী, হালুয়াঘাট ও ধােবাউড়া উপজেলায় অনেক বিল ও জলাভূমি আছে, তাই এখানে পাহাড়ে ঢল নামার সাথে সাথে বর্ষার আগাম বন্যা হয়।
তথ্যসূত্র:
১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ২১৩-২১৪, ISBN 984-70120-0436-4.
২. ম ইনামুল হক, বাংলাদেশের নদনদী, অনুশীলন, ঢাকা, প্রথম সংস্করণ, জুলাই ২০১৭, পৃষ্ঠা ৫৩।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।
কংস নদীর উৎপত্তি কত সালে। এর খোঁজ তো পেলাম না