ভুল্লি নদী বা ভুল্লী নদী (ইংরেজি: Vulli River) বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও জেলার ঠাকুরগাঁও সদর, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ এবং দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩৮ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। নদীটিতে জোয়ার ভাঁটার প্রভাব থাকে না। ভুল্লি নদী মূলত ঢেপা নদীর উপনদী যা ছোট ঢেপা নদীর ডান তীরে এসে মিলিত হয়েছে।[১]
প্রবাহ: ভুল্লি নদীটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের মোলানীর নিম্নভূমি থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এখান থেকে নদীটি বাম তীর থেকে আসা ধুলি নদীর প্রবাহ গ্রহণ করেছে। এরপর নদীটি পাঠানপাড়া অতিক্রম করে বাঁধপাড়ায় বাঁধ দ্বারা বাঁধা পেয়েছে। এখানে ভুল্লি নদীর জল দ্বারা সেচের কারণে প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত করা হয়। বাধপাড়ায় নদীর উপর একটি ব্রিজ আছে। এরপর নদীটি কুমারপুর ও জাঠিভাঙ্গা অতিক্রম করেছে। এরপর নদীটি বড় বালিয়া, বগুলাডাঙ্গী, তুরুকপথা, লাউঠুটি, শুখানপুখুরি অতিক্রম করেছে। অর্থাৎ সদর উপজেলার বালিয়া, শুখানপুখুরি ও গড়েয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম অতিক্রম করেছে। এরপর নদীটি মুচিবাড়ী, শিমাইলবাড়ী, ভগীরপাড়া পার হয়ে ঘাটপাড়া খানসামাতে আত্রাই নদীতে পতিত হয়েছে।
ভুল্লি নদীতে সারা বছর পানি প্রবাহ থাকে, তবে বর্ষা মৌসুমে যথেষ্ট পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। বর্ষায় নদীতে সীমিত আকারে নৌকাও চলাচল করে। শুকনো মৌসুমে নদীটি শুকিয়ে যায় এবং নদীর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধান চাষ করা হয়। পলির প্রভাবে এ নদী ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং পূর্বের তুলনায় এই নদীর প্রবহমানতা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
এই নদীর তীরে কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, জাঠিভাঙ্গা বাজার, ভুল্লি বাজার, বাহাদুর বাজার, কালীমেলা উচ্চ বিদ্যালয়, বাহাদুরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চেংটি বাজার, ঝাড়বাড়ী বাজার, কাশিয়াবাড়ি হাট, ভগির বাজার অবস্থিত। এই নদী অববাহিকায় ভুল্লিবাঁধ নামে একটি সেচ প্রকল্প রয়েছে। নদীতে সেচ প্রকল্প এলাকায় রেগুলেটর আছে, তবে কোনো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নেই।
আলোকচিত্রের ইতিহাস: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা বাজারের কাছের নদীর ব্রিজ থেকে ভুল্লি নদীটির এই আলোকচিত্রটি তুলেছেন আশিকুর রহমান এক আলোকচিত্রী অক্টোবর ২০১৯ তারিখে।
তথ্যসূত্র
১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ১৫১-১৫২, ISBN 984-70120-0436-4.
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।