ক্যাথলিকবাদ (ইংরেজি: Catholicism) হচ্ছে ক্যাথলিক গির্জার ঐতিহ্য এবং বিশ্বাসসমূহ। এটি ক্যাথলিকদের ধর্মতত্ত্ব, অনুষ্ঠান, নীতিশাস্ত্র এবং আধ্যাত্মিকতাকে বোঝায়। এই শব্দটি সাধারণত পশ্চিম ও পূর্ব উভয় গির্জা প্রসঙ্গে উল্লেখ করে, যা পবিত্র গৃহের সাথে সম্পূর্ণ মিলিত হয়। ক্যাথলিক গির্জা খ্রিস্টান ধর্মের প্রধান এবং প্রাচীনতম গঠনধারা।
খ্রিস্টান ধর্মের মধ্যে দুটি প্রধান সম্প্রদায়ের একটি ক্যাথলিক এবং অন্যটি প্রটেস্টান্ট সম্প্রদায়। মূল খ্রিষ্টান ধর্মের আচার, আচরণ, ব্যাখ্যা প্রভৃতি ক্ষেত্রে মত পার্থক্য থেকে এই দুই সম্প্রদায়ের উদ্ভব। ক্যাথলিক সম্প্রদায়ই গোঁড়ামিবাদী ধারা। প্রটেস্টান্ট সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটেছে পরবর্তীকালে ষোড়শ শতকে জার্মানীর মার্টিন লুথারের নেতৃত্বে।[১]
ক্যাথলিকবাদের বিশ্বাস পবিত্র আত্মার উৎস কেবল ঈশ্বর নয়। তার উৎস যিশুখ্রিষ্ট বা ঈশ্বরের পুত্রও। পরলোকে পারগেটরী বা পাপীদের শোধনাগারও ক্যাথলিকদের বিশ্বাসের একটি অংশ। পোপ দোষত্রুটিশূণ্য। ক্যাথলিকবাদে ধর্মযাজকদের জন্য বিবাহ এবং পারিবারিক জীবন নিষিদ্ধ। রোমের ভ্যাটিকান হচ্ছে পোপের রাজধানী। ইউরোপে মধ্যযুগে পোপতন্ত্র কেবল ধর্মের ক্ষেত্রে নয়, পার্থিব সম্পদ ও শক্তিরও এক বিপুল সাম্রাজ্য হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। এখনও পৃথিবীতে খ্রিষ্টান ধর্মের মধ্যে ক্যাথলিকদের প্রভাব এবং সাংগঠনিক শক্তি প্রধান। মূলত ক্যাথলিকবাদ সাম্প্রতিককালে মানুষকে দাসত্বে বন্দি করে রাখার জন্য সাম্রাজ্যাদের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।
তথ্যসূত্র:
১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; ৫ম মুদ্রণ জানুয়ারি, ২০১২; পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫।
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।