হুগো শ্যাভেজ (২৮ জুলাই, ১৯৫৪ – ৫ মার্চ, ২০১৩) ছিলেন ভেনেজুয়েলার নেতা। এই দেশটি ছিলো বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশ। হুগো শ্যাভেজ শাসনাধীনে গত দশকে আন্তর্জাতিক বাজারে দেশটির তেলের মূল্য অনেক বেড়ে যায়। হুগো শ্যাভেজ অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চেষ্টা না করে কেবল সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর পারস্পরিক দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে তেলের দাম বাড়িয়ে দেন। ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই ভেনিজুয়েলা সাম্রাজ্যবাদী মার্কিনের খপ্পরে পড়ে যায়, এবং অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যায়। নিম্নে হুগো শ্যাভেজের কিছু উদ্ধৃতি দেয়া হলো।
১. ফ্যাসিবাদিরা মানুষ নয়, একটি সাপও অনেক বেশি মানবিক।
২. যুক্তি সহকারে আমার সরকারের থেকে এবং আমি বুঝেছি যে পৃথিবীর প্রয়োজন নতুন নৈতিক নকশা; আমাদের আজকের জগতে মোটের উপর নীতিবিদ্যা, নৈতিকতাই হওয়া উচিত বিতর্কের প্রথম বিষয়।
৩. আমি এতদ্বারা উত্তর আমেরিকান সাম্রাজ্যকে অভিযুক্ত করছি আমাদের গ্রহটির সবচেয়ে হুমকি হওয়ার জন্য।
৪. আমি দৃঢ়ভাবে বুঝেছি যে পৃথিবীর জন্য একটি পথ যা নতুন, অধিকতর ভালো ও সম্ভাব্য তা পুঁজিবাদ নয়, সেই পথটি সমাজতন্ত্র।
৫. আমি স্মরণ করি। কত মিনিট আমি রাষ্ট্রপতিত্ব ত্যাগ করেছি? প্রায় এক, এক মিনিট।
৬. লাতিন আমেরিকান ঐক্য দীর্ঘজীবী হোক।
৭. বামেরা ফিরে এসেছে, এবং এটাই একমাত্র পথ আমাদের সেই অঞ্চল থেকে বের হয়ে আসার যেখানে ডানেরা আমাদেরকে ডুবিয়েছে। সমাজতন্ত্র নির্মাণ করে, পুঁজিবাদ ধ্বংস করে।
৮. মানবসমাজের কোনো অংশই বাঁচতে পারে না সম্পূর্ণরূপে তাদের নিজেদের গ্রহে, তাদের নিজেদের গতির নিয়মেই, এবং বাকি মানবসমাজের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে।
৯. আমি এটা ইতিপূর্বে বলেছি, আমি বুঝেছি যে একটি নতুন ও অধিকতর ভালো পৃথিবী তৈরি করা পুঁজিবাদ নয়, পুঁজিবাদ আমাদেরকে সরাসরি নরকে নিয়া যায়।
১০. তারা হাঁটে না … খৃস্টের পথে।
১১. আমরা জিতব, আমরা বাঁচব।
১২. ভেনিজুয়েলার জনগণের জন্য এটি একটি মহান বিজয়।
১৩. যদি জলবায়ু একটি ব্যাংক হতো তবে পুঁজিপতিরা একে রক্ষা করতো।
১৪. সুবিধাভোগি অভিজাতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমাদের লড়তে হবে যারা পৃথিবীর বিরাট অংশকে ধ্বংস করেছে।
১৫. আমরা নিখুঁত নই, কিন্তু আমাদের গণতন্ত্রকে রাখতে হবে।
১৬. যে পর্যন্ত আমরা একত্রিত থাকব, আমরা সাম্রাজ্যবাদকে পরাজিত করতে সমর্থ থাকব, কিন্তু যদি আমরা বিভক্ত হই, তারা আমাদেরকে একপাশে সরিয়ে দেবে।
১৭. ভেনিজুয়েলা চিরদিনের জন্য বদলে গেছে।
১৮. পেছনে ফেরার পথ নেই।
১৯. কিউবা হচ্ছে সুখের সাগর। সেখানেই ভেনিজুয়েলা যাচ্ছে।
২০. একদশকে আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি, ব্যবসা আর মুনাফার বাইরেও কিছু শব্দআছে। সমাজতন্ত্র চর্চা কেবল অলীক স্বপ্ন নয়, ভেনিজুয়েলায় তা বিদ্যমানবাস্তবতা। আইএমএফ আর জাতিসংঘই মানবকূলের ভাগ্য-নির্ধারক নয়। বিকল্প শক্তিওআছে, যাদের কাছে সবার ঊর্ধ্বে হল মানুষ। বন্ধুগণ, অন্য পৃথিবী গড়া সত্যিসম্ভব।
২১. শয়তানটা এই ঘরেই আছে। শয়তানটা, শয়তানটা নিজেই এই ঘরে সঠিকভাবেই আছে। এবং গতকাল শয়তানটা এখানে এসেছিল। গতকাল শয়তানটা এখানে এসেছিল। একেবারেই এখানে। এবং আজও বারুদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
২২. আসুন, মানবজাতিকে রক্ষা করি আর মার্কিন সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করি।
২৩. সাম্রাজ্যের কুকুরগুলোকে ভুকতে দিন, সেটা তাদের কাজ; আমাদের কাজ হচ্ছে আমাদের জনগণের সত্যিকারের মুক্তির জন্য লড়াই করে বিজয় অর্জন করা।
২৪. আমরা জনগণকে ক্ষমতা না দিলে দারিদ্র দূর করা যাবে না।
২৫. সমাজতন্ত্রকে আমাদের পুনঃ আবিষ্কার করতেহবে। এটা সেই ধরনের সমাজতন্ত্র হতে পারে না যা আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নে দেখেছি; কিন্তু এটা আমরা যে নতুন পদ্ধতি তৈরি করবো তা থেকেই বের হয়ে আসবে, এবং এটি প্রতিযোগিতানয়, সহযোগিতার উপর নির্মিত হবে। ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ফোরামের শেষ বক্তৃতায়; ব্রাজিল, জানুয়ারি ৩১, ২০০৫
অনুপ সাদি বাংলাদেশের একজন লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও চিন্তাবিদ। তাঁর প্রথম কবিতার বই পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। তাঁর মোট প্রকাশিত গ্রন্থ ১২টি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তাঁর সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদ গ্রন্থ দুটি পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ২০১০ সালে সম্পাদনা করেন বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা নামের একটি প্রবন্ধগ্রন্থ। তিনি ১৬ জুন, ১৯৭৭ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখাপড়া করেছেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম এ পাস করেন।