মৃত্যু এসে নিয়ে যাক শৃঙ্খলিত প্রাণ

জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করেই জন্মেছো তুমি, উঠেছো বেড়ে কন্টকাকীর্ণ সুবিস্তীর্ণ জনমানববহুল মাঠে, তোমার মাথার উপরে গভীর পুঁজভর্তি সাদা আকাশ, প্রভাত সূর্য অতিরুগ্ন বৃদ্ধের মতো লাঠি ধরে এগিয়ে আসে ঘন দেয়ালের ভিতর দিয়ে, অথচ তুমি জানো না আজো এদেশে রাত্রি নামে ঘুষখোরের মতো বীরদর্পে, তোমার মহানিয়ন্ত্রককে তুমি চোখে দেখোনি কিন্তু উপনিয়ন্ত্রকের পা টিপে দাও, গোসল করাও, … Read more

তৃতীয় পক্ষের গমনাগমন

ক্ষণে ক্ষণে টের পাই তোমার ত্রিসীমানায় আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা পড়ে আছি; পথ নেই ছেড়ে যাবার; ইতিহাস শিক্ষা দেয় একদিন প্রয়োজন ফুরাবে, কেননা ইতিহাস সবকিছু পাঠায় ধ্বংসকুপে তুমি-আমি-কংকাল-রাজপ্রাসাদ-সভ্যতা-কৃষ্ণগহ্বর; ইতিহাস পাঠায় ধ্বংসকুপে মরণের স্পন্দনে চলমান প্রাণের ঘূর্ণায়মান সুতা ছিঁড়ে ছুটে চলা অবিরাম বিড়বিড় আউলা প্রলাপ বকা ঘুড়ি। সেই ঘুড়ি আমার ছাদ হতে পৌঁছে যায় তোমার অলিন্দে; আমাকে পৌঁছে … Read more

তুমি আমাদের জীবনের অংশ

সুদূর আকাশ হতে ঝরতে থাকা অস্তিত্বের ফোঁটায় তোমাকে অনুভব করি, বুঝতে পারি জলের বুদবুদে ভেসে যাওয়া তুমি শিকড়হীন নির্বাক কথা বলে যাও দেহের ভঙ্গিমায়, তুমি কখনো দুরন্ত দুর্বার নদীর জলস্রোতে দুকুল ছাপানো কীর্তিনাশা, জলোচ্ছাস ও ঝড়ের দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত; কখনো তুমি শান্ত নিস্তব্ধ পুকুরের জলে ফুটে থাকা অগনিত চাঁদমালা, গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকা তুমি … Read more

পুরাতন পুরুষ

চিপতে চিপতে গলে যায় আইসকৃম হয়ে যায় জলের শরবত, তবুও চিপিস কেন, কেন তোর ভয় না চিপলে জীবন পূর্ণ হবার নয়? আমি দেখি প্রতিদিনই ছাদের দড়িতে শুকায় সেই একই কাপড়, প্রতিদিন রাতে তবে কোন নদীর কোন পাড় ভাঙে, কোন নদে জোয়ারের শব্দে ভোর হয়, কার খালি কলসি কোন গাঙে ভরে যায় টইটুম্বুর, কার কলসি খালি … Read more

শতবর্ষি দুর্ভিক্ষ

শতবর্ষি দুর্ভিক্ষ হচ্ছে কবি ও লেখক অনুপ সাদির একটি কবিতা। কবিতাটি তার পৃথিবীর রাষ্ট্রনীতি আর তোমাদের বংশবাতি কাব্যগ্রন্থের কবিতা। কবিতাটির কয়েকটি লাইন হচ্ছে: জীবন হয়েছে আজ কয়লার হৃদপিণ্ড  ধুকে ধুকে মরছে ভাগাড়ের পৃথিবীতে, জ্বলছে ক্ষুধায় আক্রান্ত শুকনো কাঠির শরীর; গলায় ঝুলছে তাবিজ, ভিতরে ঈশ্বরের তিন মৃত পিতা, মহাক্রন্দন শোনে রাষ্ট্র,— তবুও ভাবখানা অন্ধের, উপেক্ষার। আরো পড়ুন

একদিন মার্কেটে কিছুক্ষণ

মার্সিডিজ দ্রুত এসে থামে মার্কেটে ঢোকার পথে, নেমে আসে নরোম নদীর নারী আমদের পৃথিবীতে, ব্যাগ হাতে ঘোরে আর বাড়ায় পণ্য শোভা, ছড়ায় ঝিলিক; পেটমোটা বস্তার মতো রুগ্ন শরীরে গড়িয়ে গড়িয়ে চলে দুই ভিখারি, মাথাহীন একজন, অন্যজনের আছে শুধু মাথা, কপিকলের জোরে নড়ে চড়ে, এদিক ওদিক ঘোরে, শোনে মাইকের চিৎকার ও সমকালীন রাজ নীতিকথা।   সবুজের … Read more

শিরোনামহীন আগ্রাসন

হুইস্কি, গোলাপগুচ্ছ ও পরমাণু বোমা পরপর সাজানো আছে অন্ধকার ছাদের শয্যায়, এখানে সাঁতার হবে তীব্র অহংকারপূর্ণ প্রাণহীন রক্ত পেয়ালায়, শতাব্দি পুরোনো সব বট ও বুড়োরা এসেছে, নেঙটি মাজা মেরে সব খেলতে নেমেছে, বুড়িদের মৌলিক পরিসংখ্যান সব হৃদয় চমকানো; লাইসিয়াম থেকে শান্তি নিকেতনে পড়ে গেছে সাড়া; তোমাদের বুকের উপরে আজ নৃত্য হবে, গাওয়া হবে গান।   … Read more

আহ কী চমৎকার!

মা হেঁশেলে নিজেকে রাঁধেন উনুনের খড়ি প্রজ্জ্বলিত বাবা, জ্বলে জ্বলে ছাই হন; সেই ছাই নেয়া হয় ল্যাবরেটরিতে, পরীক্ষার পর প্রাপ্ত প্রতিবেদন দেখিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধি অতি উৎসাহে গ্রহণ করে চমৎকার বিদেশি ডলার, সুন্দর সব পদ্ধতি!   ছেলে বিক্রি করে রক্ত, কেনে মোহন লটারির টিকেট, মেয়ে চলে পথে পথে খদ্দেরের খোঁজে। সব খুব স্বাভাবিক ও সুন্দর!   … Read more

সভ্যতায় বাঙলাদেশ, ২০০১

বাংলাদেশের অর্থনীতি

দিনের পর দিন, প্রতিদিন তরুণটি দেখে পার্কে বাগানে সেই একই গাছ—ফুল ফল ডাল পাতা ভরা, একই পাখি বন্দি বিজাতীয় চিড়িয়াখানায়, মাংসের লোভে অতিথি পাখি বিক্রেতা অর্থের ঢিবি, কিনে নেয় পথের ধারেই জীবন্ত ছুটন্ত সব তাজা প্রাণ; খুব ভোরে রাস্তার মোড়ে একটি মাইক্রোবাস নামিয়ে দিয়ে যায় তিনজন বিধস্ত তরুণীকে, সকালের পথ ঝাড়ু  দেয় আর দূরবর্তি মোহের … Read more

ব্যর্থ স্বদেশঃ রক্তের মতো স্বপ্নের মৃত্যু

মৃত্যুর দেশে স্বপ্নের রঙ মৃত্যুর মতো, নীল সবুজের দেশে স্বপ্নকে দেখায় সবুজাভ নীলিমায় অপরূপা; তোমরা কি জানো বাঙলার বুকে স্বপ্ন কেন জমাট রক্তের মতো ঘন অন্ধকার?   এইখানে বহমান পদ্মা-মেঘনা-ব্রহ্মপুত্রের হাজারো সন্তানের রক্ত ও ঘাম, এইখানে চোখের কাজলে কামনাবিন্দুর বদলে বীভৎস শ্বাপদের পাখা ক্ষুধার্ত শকুনের মতো ক্ষুধার্ত।   চুপ কর। টোডের জন্য রয়েছে বিডিশি নেশা। … Read more

error: Content is protected !!